যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস তাদের সদস্য ও কর্মকর্তা–কর্মচারীদের ব্যবহৃত সরকারি যন্ত্রে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তথ্য সুরক্ষা ও সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাউসের চিফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার (সিএও)। এ বিষয়ে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের সদস্য ও কর্মকর্তা–কর্মচারীদের কাছে পাঠানো এক ই–মেইল বার্তায় বলা হয়েছে, তাঁরা যেন সরকারি কাজে ব্যবহৃত ল্যাপটপ, মুঠোফোন, ট্যাবলেটসহ সব ধরনের যন্ত্র থেকে হোয়াটসঅ্যাপ মুছে ফেলেন। এমনকি ব্যক্তিগত যন্ত্রে যদি সরকারি কোনো কাজ করা হয়, সে ক্ষেত্রেও অ্যাপটি মুছে ফেলতে হবে।

হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের সদস্য ও কর্মকর্তা–কর্মচারীদের পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের জন্য উচ্চ ঝুঁকি তৈরি করছে। কারণ, অ্যাপটি কীভাবে তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে থাকে, তা স্পষ্ট নয়। সংরক্ষিত তথ্য এনক্রিপ্ট করা হয় না এবং এতে একাধিক নিরাপত্তাজনিত দুর্বলতা রয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপের বিকল্প হিসেবে সিগন্যাল, অ্যাপলের আইমেসেজ ও ফেসটাইম, মাইক্রোসফট টিমস ও উইকার ব্যবহার করতে হবে।

আরও পড়ুনহোয়াটসঅ্যাপে বার্তা ও ছবি নিরাপদ রাখতে এই ৬ সুবিধা ব্যবহার করছেন তো০৪ মে ২০২৫

হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে হোয়াটসঅ্যাপের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমরা জোরালোভাবে দ্বিমত পোষণ করছি। হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো প্রতিটি বার্তা এন্ড টু এন্ড এনক্রিপটেড করা থাকে। ফলে প্রেরক ও প্রাপক ছাড়া অন্য কেউ তা জানতে পারেন না। এমনকি হোয়াটসঅ্যাপও নয়।’

আরও পড়ুনহোয়াটসঅ্যাপে ছবি পাঠিয়ে তথ্য চুরি, নিরাপদে থাকবেন যেভাবে২৭ মে ২০২৫

গত জানুয়ারিতে হোয়াটসঅ্যাপ জানিয়েছিল, ইসরায়েলের স্পাইওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান প্যারাগন সলিউশনস সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ বেশ কিছু পেশার হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের ওপর নজরদারি করার চেষ্টা করছে।

সম্প্রতি ইরান সরকারও হোয়াটসঅ্যাপসহ কয়েকটি অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছে। ইরান সরকারের অভিযোগ, এসব অ্যাপের মাধ্যমে দেশের সংবেদনশীল তথ্য বাইরে পাচার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সূত্র: নিউজ ১৮

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ য় টসঅ য প ব যবহ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

পাঠকের ভালোবাসাই পুরস্কার

প্রথম আলো ১৯৯৮ সালের ৪ নভেম্বর প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল, সেদিন যে শিশু জন্মগ্রহণ করেছিল, এখন তার বয়স ২৭ বছর। ভাবা যায়! আর ধরা যাক, প্রথম আলো প্রকাশের প্রথম সপ্তাহে ৭ বছরের যে শিশু গোল্লাছুটের ছবির ধাঁধা মিলিয়েছিল, এখন তার ৭ বছরের একটা সন্তান আছে। মজার কথা হলো, এমন পাঠক আমরা পাই, যিনি বলেন, ‘আমি প্রথম আলো পড়ে আসছি সেই প্রথম দিন থেকে, আমার মা–ও পড়তেন। তিনি আজ আর বেঁচে নেই। এখন আমার সন্তানেরা বড় হয়েছে, তারাও এই প্রথম আলো পড়ে। প্রথম আলো তো আমাদের পরিবারেরই একজন। এমনকি আমার নাতিও অনলাইনে প্রথম আলো পড়ছে।’

দেশে কিংবা বিদেশে, ঢাকায় কিংবা চট্টগ্রামে, রাজশাহী কিংবা যশোরে, যেখানেই যাই, কেউ না কেউ এগিয়ে আসেন, হয়তো কেউ ম্যাজিস্ট্রেট, কেউ করপোরেট অফিসার, কেউ এনজিও নেতা, কেউ অধ্যাপনা করছেন; এসে বলেন, ‘আমি তো প্রথম আলো পড়ি, শুধু তা-ই নয়, আমি বন্ধুসভার সদস্য ছিলাম।’ কেউ বলেন, ‘আমি তো আপনাদের জিপিএ–৫ সংবর্ধনায় গিয়েছিলাম।’ বিদেশ থেকে আসেন এমআইটি থেকে পাস করা উদ্যোক্তা বা বিজ্ঞানী, এসে বলেন, ‘আমি তো গণিত অলিম্পিয়াডে অংশ নিতাম, সে কারণেই আজ আমি এই জায়গায়।’

মজার কথা হলো, এমন পাঠক আমরা পাই, যিনি বলেন, ‘আমি প্রথম আলো পড়ে আসছি সেই প্রথম দিন থেকে, আমার মা–ও পড়তেন। তিনি আজ আর বেঁচে নেই। এখন আমার সন্তানেরা বড় হয়েছে, তারাও এই প্রথম আলো পড়ে। প্রথম আলো তো আমাদের পরিবারেরই একজন। এমনকি আমার নাতিও অনলাইনে প্রথম আলো পড়ছে।’

আনন্দ-বেদনার ঘটনাও ঘটে। বুয়েটের এক শিক্ষার্থী মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছিলেন, লেখাপড়া তো অনিশ্চিত হলোই, জীবনই হয়ে গেল এলোমেলো। তাঁকে নিয়ে তাঁর মা আসতেন প্রথম আলো ট্রাস্টের মাদকবিরোধী পরামর্শসভায়। শিক্ষার্থী মাদকমুক্ত হলেন। পাস করে ভালো ক্যারিয়ার গড়তে পারলেন। তাঁর মা এসে আমাদের বলেছিলেন, ‘প্রথম আলোর জন্য দোয়া করি, প্রথম আলো যেন বেহেশতে যায়।’ আবার প্রথম আলো ট্রাস্টের অদম্য মেধাবী বৃত্তি পেয়ে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের মেধাবী সন্তানেরা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তা হয়েছেন। অদ্বিতীয়া শিক্ষাবৃত্তি পেয়ে দরিদ্রতম পরিবারের প্রথম স্নাতক হিসেবে মেয়েরা চট্টগ্রামে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন। তাঁদের কেউ কেউ পড়াশোনা শেষ করে আবার প্যারিস কিংবা মন্ট্রিয়লে উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন, চাকরিও করছেন।

কিন্তু সবার আগে প্রথম আলো করতে চেয়েছে সাংবাদিকতা। দলনিরপেক্ষ থাকব, স্বাধীন থাকব, জনগণের পক্ষে থাকব, সত্য কথা সাহসের সঙ্গে বলে যাব—২৭ বছর আগে থেকেই এই ছিল আমাদের নীতি। প্রথম আলো প্রকাশের আগেও গল্প আছে। আমরা আরেকটা সংবাদপত্রে ছিলাম অনেকেই। সেই পত্রিকার উদ্যোক্তা তখনকার সরকারের এমপি নির্বাচিত হলেন। আমরা ভাবলাম, আমরা তো দলনিরপেক্ষ কাগজ করতে চাই। তখনই ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের সঙ্গে দেখা হয়, কথা হয় ডেইলি স্টার–এর সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনামের মধ্যস্থতায়। আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানকে সব সময় স্মরণ করি। তিনি প্রথম আলোর সম্পাদকীয় বিষয়ে কোনো দিন হস্তক্ষেপ করেননি, কোনো দিনও জানতে চাননি কী ছাপা হবে বা এটা কেন ছাপা হলো। শুধু উৎসাহ দিয়ে গেছেন।

মতিউর রহমান, সম্পাদক, প্রথম আলো

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘আমাকে পাঠিয়ো না’, ৯ বছরের শিশু কেন স্কুল ভবন থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করল
  • দেখে এলাম চক্ষু মেলিয়া (শেষ পর্ব) 
  • পাঠকের ভালোবাসাই পুরস্কার