২০০১-এর সীমানা বহাল চান স্থানীয় বিএনপি নেতারা
Published: 26th, June 2025 GMT
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৩০০ আসনের সীমানাসংক্রান্ত খসড়া দ্রুত প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের কয়েকজন নেতাসহ বিভিন্ন আসনের বিক্ষুব্ধ প্রতিনিধিরা। এ দাবিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তারা।
বৈঠকে ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনের সময়কার সংসদীয় আসন পুনর্বহাল চেয়েছেন তারা। গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিইসির সভাকক্ষে এ বৈঠক হয়। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশনের সামনে মানববন্ধন করেছেন কুমিল্লা-২ সংসদীয় এলাকার বাসিন্দারা।
বৈঠক শেষে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও কুমিল্লা-৯ আসনের সাবেক এমপি মনিরুল হক চৌধুরী বলেন, ১৯৮৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত যেভাবে নির্বাচনী আসন ছিল, সেভাবে পুনর্বহাল করতে হবে। এটা আমাদের সর্বজনীন দাবি। আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানাসংক্রান্ত খসড়া প্রকাশের আবেদন করেছি। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, তারা কাজ করছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপির পক্ষ তারা বৈঠক করতে আসেননি। বিভিন্ন আসন থেকে প্রতিনিধিরা এসেছেন। সবার দাবি, ২০০১ সালের সীমানা অনুযায়ী সীমানা নির্ধারণ করা।
এ সময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও মুন্সীগঞ্জের প্রতিনিধি আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, বৈঠকে সিইসি, নির্বাচন কমিশনার ও সচিব আশ্বস্ত করেছেন– এবার অনৈতিকভাবে আসন বণ্টন হবে না। জনগণের চাহিদা অনুযায়ী আসন বিন্যাস করে উপহার দেবে কমিশন।
কুমিল্লা-২ আসন পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন এর আগে হোমনা ও মেঘনা উপজেলা নিয়ে গঠিত কুমিল্লা-২ আসনটি আগের মতোই বহাল রাখার দাবিতে নির্বাচন ভবনের সামনে মানববন্ধন করেন বিপুলসংখ্যক এলাকাবাসী। ‘কুমিল্লা-২ (হোমনা-মেঘনা) নাগরিক সমাজ’-এর ব্যানারে এ মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও এই আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া। পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়।
মানববন্ধনে সেলিম ভূঁইয়া বলেন, মেঘনার সঙ্গে দাউদকান্দি উপজেলার সড়কপথে যোগাযোগ নেই। হোমনা ও মেঘনা এলাকার মানুষ একই সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত। অন্যদিকে দাউদকান্দি থেকে তিতাস উপজেলার সৃষ্টি। তাই দাউদকান্দির সঙ্গে তিতাস মিলে কুমিল্লা-১ এবং হোমনার সঙ্গে মেঘনা মিলে কুমিল্লা-২ আসনটি বর্তমানে যে অবস্থায় আছে, সেভাবেই বহাল রাখতে হবে।
আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক আবুল বাশারের সভাপতিত্বে ও মোজাম্মেল হক মুকুলের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন স্থানীয় বিএনপি নেতা মহিউদ্দিন আহমেদ, আ.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ র আসন র
এছাড়াও পড়ুন:
ভাঙ্গায় সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে মানববন্ধন
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নবাসী। আজ সোমবার বেলা ১টা থেকে ১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ভাঙ্গার সুয়াদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
ফরিদপুর-৪ আসন থেকে ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন বাদ দিয়ে ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন এলাকাবাসী। এতে দুই ইউনিয়নের সাধারণ মানুষসহ ভাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশ নেন। কর্মসূচিটি আয়োজন করে ‘অখণ্ড ভাঙ্গা রক্ষা কমিটি’।
মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন আলগী ইউনিয়নের সুয়াদী এলাকার বাসিন্দা ইমরান হোসেন ও হান্নান মাতুব্বর। তাঁরা বলেন, প্রশাসনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। গতকাল রোববার প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে ওই দুই ইউনিয়নকে পুনরায় ফরিদপুর-৪ আসনে রাখার বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এ ঘোষণার প্রতি আস্থা রেখে আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে অব্যাহত থাকবে।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের অভিযোগ, খেটে খাওয়া মানুষের নামে হয়রানিমূলক মামলা দেওয়া হচ্ছে, যা অমানবিক। তাঁরা গ্রেপ্তার হওয়া আলগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ম ম সিদ্দিক ও অন্যদের মুক্তির দাবি জানান।
হামিরদী ইউনিয়নের মাঝিকান্দা গ্রামের বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। প্রশাসন আমাদের কথা শুনেছে, তাই আদালতের রায় না আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছি। থানায় হামলার পর এলাকায় ভয়ে কেউ ঘুমাতে পারেনি। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের বলা হয়েছে, নির্দোষ কাউকে হয়রানি করা হবে না। আমরা সে ঘোষণার প্রতি আস্থা রাখতে চাই।’
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রোকিবুজ্জামান বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে আমাদের কোনো বাধা নেই। তাঁরা যদি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করেন, কাউকে বিরক্ত না করে কর্মসূচি পালন করেন, তাহলে বাধা দেওয়া হবে না।’ তিনি জানান, এ বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন, তাই আন্দোলনকারীরা রায় হওয়ার আগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়, এমন কোনো কর্মসূচিতে যাবেন না বলে পুলিশ প্রশাসনকে কথা দিয়েছেন।
গতকাল রোববার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে বৈঠকের পর আন্দোলনকারীরা হাইকোর্টের রায় না হওয়া পর্যন্ত মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন।
প্রসঙ্গত, ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন সচিবালয় গেজেটে ফরিদপুর-৪ আসন থেকে ভাঙ্গার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন বাদ দিয়ে ফরিদপুর-২ আসনে যুক্ত করার আদেশ দেয়। এ বিষয়ে কেন আদেশটি অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে ১৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। যার জবাব দেওয়ার জন্য হাইকোর্ট ১০ দিন সময় বেঁধে দেন।
আগামী সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ আসনের বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহবুবুর রহমানসহ পাঁচজন হাইকোর্টে আবেদন করেন। এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ সেপ্টেম্বর বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।