ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা এবং ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পর এই প্রথম ভিডিও বার্তা দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ১২ দিনের যুদ্ধবিরতির অবসানের দুই দিন পর তার এই মন্তব্য এসেছে। খামেনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের হামলা পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণেল ইস্যু নয় বরং ইরানকে আত্মসমর্পণ করাতেই ছিল।

স্থানীয় সময় দুপুর ২টা  ৫মিনিটে (বাংলাদেশ সময় ১১টা ৩৫ মিনিট) তার পূর্ণাঙ্গ বার্তা সম্প্রচারিত হওয়ার আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে ভাষণের খবর ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। খবর বিবিসির

রাষ্ট্রীয় টিভিতে সম্প্রচারিত এক ভাষণে খামেনি বলেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে আক্রমণ করে আমেরিকা উল্লেখযোগ্য কিছু অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে। যা ঘটেছে তার একটি অস্বাভাবিকভাবে অতিরঞ্জি বর্ণনা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এটা স্পষ্ট ছিল তাকে এটা করতে হয়েছিল। যে কেউ শুনলেই বলতে পারে আমেরিকা সত্যকে বিকৃত করার জন্য জিনিসগুলো অতিরঞ্জিত করেছে। আমরা এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটিতে আক্রমণ করেছি এবং এখানে তারা এটাকে ছোট করার চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, এই সপ্তাহের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র যে পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা করেছে সেগুলোতে উল্লেখযোগ্য কিছুই ঘটেনি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ‘নির্মূল’ করার দাবির সরাসরি বিরোধিতা করে এই মন্তব্য।

এই ইরানি নেতা বলেন, তার দেশ তাদের ঐক্য প্রদর্শন করেছে, তারা এই বার্তা পাঠিয়েছে ‘আমাদের জনগণের কণ্ঠস্বর এক’।

খামেনি বলেন, ট্রাম্প তার দেশকে ‘আত্মসমর্পণ’ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের মুখের তুলনায় তা খুব বড় মন্তব্য ছিল।

তিনি বলেন, ইরানের মতো একটি মহান দেশ ও জাতির জন্য আত্মসমর্পণের কথা বলাই অপমান।

আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি এই অঞ্চলে মার্কিন ঘাঁটিতে আরও হামলা চালানোর হুমকি দিয়ে বলেন, যদি কোনো আক্রমণ ঘটে, তাহলে শত্রু এবং হামলাকারীদের অবশ্যই চড়া মূল্য দিতে হবে।

এর আগে, সামাজিকমাধ্যমে শেয়ার করা পোস্টে খামেনি বলেন, কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে ইরান আমেরিকার মুখে এক কঠিন চড় মেরেছে। তবে ওই হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরান বিজয় অর্জন করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র র

এছাড়াও পড়ুন:

জামিনের পর মামলা নিয়ে মেহজাবীনের বিবৃতি

ব্যবসায় অংশীদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২৭ লাখ টাকা ‘আত্মসাৎ করা ও হত্যার হুমকি দেওয়ার’ অভিযোগের মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী ও তার ভাই আলিসান চৌধুরী। 

রবিবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক আফরোজা তানিয়া শুনানি শেষে তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন মেহজাবীন চৌধুরীর আইনজীবী তুহিন হাওলাদার। 

আরো পড়ুন:

আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন মেহজাবীন চৌধুরী

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রসঙ্গে যা বললেন মেহজাবীন

সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকালে মেহজাবীন চৌধুরী তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। তাতে এ মামলার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছেন এই অভিনেত্রী।    

মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, “একজন অজানা ব্যক্তি ২০২৫ সালের মার্চ মাসে আমার ও আমার ১৯ বছর বয়সি ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। গত নয় মাসে আমি এই মামলার কোনো তথ্য পাইনি, কারণ অভিযোগকারী পুলিশকে আমার সঠিক ফোন নম্বর, সঠিক ঠিকানা বা কোনো যাচাইকৃত তথ্য দিতে পারেননি। তিনি দাবি করেন যে, ২০১৬ সাল থেকে তিনি আমার সাথে ‘ব্যবসা’ করছিলেন।”  

মেহজাবীন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি অভিযোগকারী। এ বিষয়ে মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, “তবে যোগাযোগের কোনো প্রমাণ নেই। তিনি বলেন, ‘তিনি ২০১৬ সাল থেকে আমাকে ফেসবুকে মেসেজ দিতেন। কিন্তু তিনি যা দেখাতে পারেননি।’ একটি মেসেজ যেটা তিনি আমাকে পাঠিয়েছিলেন মেসেজের, হোয়াটসঅ্যাপ বা আমার নম্বরে, কিংবা আমার পক্ষ থেকে একটি উত্তর, এমনকি একটি স্ক্রিনশটও না।” 

অভিযোগকারীর পরিচয় অসম্পূর্ণ। এ তথ্য উল্লেখ করে মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, “তার পরিচয় অসম্পূর্ণ। তার সম্পূর্ণ পরিচয়পত্র এখনো জমা দেয়া হয়নি। তার এনআইডি পর্যন্ত অনুপস্থিত। অভিযোগকারী ও তার আইনজীবী ফোন বন্ধ করে রেখেছেন। গতকাল খবর প্রকাশ হওয়ার পর থেকে অভিযোগকারী তার ফোন বন্ধ করে রেখেছেন, এমনকি তার আইনজীবীর নম্বরও বন্ধ।” 

আর্থিক লেনদেনের কোনো নেই। মেহাজাবীনের ভাষায়, “আর্থিক লেনদেনের কোনো প্রমাণ নেই। তিনি দাবি করেন যে, তিনি আমাকে ২৭ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। কিন্তু তিনি দেখাতে পারেননি—কোনো ব্যাংক লেনদেন, কোনো চেক, বিকাশ লেনদেন, কোনো লিখিত চুক্তি, কোনো রশিদ, কোনো সাক্ষী, কিছুই না। একটি কাগজপত্রও নেই।” 

অপহরণের অভিযোগের বিষয়ে মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, “১১ ফেব্রুয়ারির ঘটনাটি সম্পূর্ণ প্রমাণহীন। তিনি দাবি করেন ১১ ফেব্রুয়ারি আমি তাকে চোখ বেঁধে হাতিরঝিলের একটি রেস্টুরেন্টে নিয়ে গিয়েছিলাম, আমার ছোট ভাইসহ আরো ৪–৫ জনকে নিয়ে। গত নয় মাসে তিনি দেখাতে পারেননি রেস্টুরেন্ট বা আশেপাশের রাস্তার এক সেকেন্ডেরও সিসিটিভি ফুটেজ, কোনো সাক্ষী, কোনো প্রমাণ, কিছুই না। হাতিরঝিল ঢাকার সবচেয়ে বেশি সিসিটিভি-নিয়ন্ত্রিত এলাকা, তবু তিনি একটি ছবি বা ভিডিও ফুটেজ দেখাতে পারেননি।” 

মামলা হওয়ার পর ৯ মাস কেটে গেলেও কোনো নোটিশ পাননি মেহজাবীন চৌধুরী। এ তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গত নয় মাসে আমি কোনো নোটিশ পাইনি। এই নয় মাসে আমি কোনো পুলিশ স্টেশনের ফোন কল, কোনো কোর্টের নোটিশ বা ডকুমেন্ট। একটি নোটিশ পেলেও আমি অনেক আগে থেকেই আইনি ব্যবস্থা নিতাম।” 

আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার কারণে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছেন মেহজাবীন। তার ভাষায়, “আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এই মামলার কোনো ভিত্তি না থাকলেও, যখন জানতে পারলাম যে একটি অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে, তখন আমি আইনি প্রক্রিয়া মেনে জামিন নিয়েছি। কারণ আমি আমাদের আইন ও নিয়ম মানি। প্রমাণ ছাড়া দায়ের করা মামলা কখনো সত্য হয়ে যায় না। সত্য খুব দ্রুতই আদালতে পরিষ্কার হয়ে যাবে। এখনকার দিনে কাউকে অপমান করা, মানহানি করা বা ভাইরাল হওয়ার জন্য অন্যকে ব্যবহার করা খুবই সহজ হয়ে গেছে। এই ব্যক্তির যে উদ্দেশ্যই থাকুক, আমার বা আমার পরিবারের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করে, সে যা-ই করতে চায়—আমি বিশ্বাস করি সবকিছু খুব দ্রুতই পরিষ্কার হয়ে যাবে।” 

অনুরোধ জানিয়ে মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, “এর আগ পর্যন্ত আমি সবাইকে অনুরোধ করব—দয়া করে সহানুভূতিশীল হোন, দয়া করে মানবিক হোন এবং কাউকে না জেনে কোনো মিডিয়া ট্রায়াল শুরু করবেন না। গত ১৫ বছর ধরে আমি আমার কাজ, আমার পেশা এবং আমার দর্শকদের জন্য যে পরিমাণ পরিশ্রম এবং নিষ্ঠা দিয়ে এসেছি, সেই পরিশ্রমের পরেও আজ আমাকে এসব ব্যাখ্যা করতে হচ্ছে—এটাই সবচেয়ে দুঃখজনক।”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জামিনের পর মামলা নিয়ে মেহজাবীনের বিবৃতি
  • জামিন পেলেন অভিনেত্রী মেহজাবীন
  • আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন মেহজাবীন
  • আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন মেহজাবীন চৌধুরী