Samakal:
2025-06-27@00:19:52 GMT

আজ আন্তর্জাতিক এমএসএমই দিবস

Published: 26th, June 2025 GMT

আজ আন্তর্জাতিক এমএসএমই দিবস

আন্তর্জাতিক অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (এমএসএমই) দিবস আজ। অর্থনীতিতে ছোট ও মাঝারি উদ্যোগের অবদানকে স্বীকৃতি দিতে এবং সচেতনতা তৈরিতে বিশ্বজুড়ে ২৭ জুন পালন করা হয় এ দিবস। ২০১৭ সালে জাতিসংঘ ২৭ জুনকে এমএসএমই দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ২০২৫ সালে এ দিবসের প্রতিপাদ্য– টেকসই প্রবৃদ্ধি ও উদ্ভাবনের চালিকাশক্তি হিসেবে এমএসএমইর ভূমিকা সম্প্রসারণ। 
বাংলাদেশে প্রতিবছর আন্তর্জাতিক এমএসএমই দিবস পালন করা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে মূল আয়োজন করে এসএমই ফাউন্ডেশন। এ ছাড়া বেসরকারি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ দিবস পালন করে। 
জাতিসংঘ জানিয়েছে, এবার এমএসএমই দিবস দুটি বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলন সামনে রেখে উদযাপিত হচ্ছে, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্পেনের সেভিলায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘উন্নয়নের জন্য অর্থায়ন’ শীর্ষক চতুর্থ আন্তর্জাতিক সম্মেলন। এ ছাড়া কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে সামাজিক উন্নয়ন-বিষয়ক দ্বিতীয় বিশ্ব সম্মেলন। সম্মেলন দুটিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই উন্নয়নে এমএসএমইর অগ্রণী ভূমিকা তুলে ধরা এবং এ ধরনের উদ্যোগের জন্য  অর্থায়ন, নীতি সহায়তা এবং সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি বিষয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে।  
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ব্যবসার ৯০ শতাংশ, কর্মসংস্থানের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ এবং জিডিপিতে ৫০ শতাংশ অবদান এমএসএমই খাতের। বিশ্বজুড়ে কর্মক্ষম দরিদ্র, নারী, যুবক ও পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার উন্নয়নের মেরুদণ্ড হিসেবে ভূমিকা রাখছে এমএসএমই খাত।
এবারের দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘ আরও বলেছে, অনেক সম্ভাবনাময় এমএসএমই খাতের ব্যবসা ব্যাপক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তাদের ঋণ পেতে অনেক বেগ পেতে হয়। দুর্বল অবকাঠামো আরেকটি বড় সমস্যা। এ ছাড়া কর্মপরিবেশও অনেক ক্ষেত্রে উন্নত নয়। অনেক প্রতিষ্ঠান অনানুষ্ঠানিকভাবে পরিচালিত হয়, যা তাদের অর্থায়ন, আইনি অধিকার ও সরকারি সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় বাধা। বর্তমানের বৈশ্বিক বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ যেমন রাজনৈতিক উত্তেজনা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ডিজিটাল রূপান্তর তাদের টিকে থাকার জন্য ঝুঁকি তৈরি করেছে। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

নতুন উদ্যোক্তার ঋণ পাওয়া এখনও বেশ চ্যালেঞ্জিং

অনেক সময় উদ্যোক্তারা ঋণের শর্তাবলি ঠিকভাবে বুঝতে পারেন না।  যার ফলে সঠিকভাবে আবেদন করতে পারেন না। রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্যোক্তা উন্নয়নের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো এ ক্ষেত্রে খুবই উপকারী হতো


বেসরকারি প্রাইম ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) এম. নাজিম এ. চৌধুরী মনে করেন, বাংলাদেশে এসএমই উদ্যোক্তা বিশেষত ক্ষুদ্র এবং নতুন উদ্যোক্তাদের ঋণ পাওয়ার বাস্তব চিত্র এখনও বেশ চ্যালেঞ্জিং। যদিও এ খাতে ঋণের চাহিদা অনেক, তবে অনেক উদ্যোক্তা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ঋণ পাওয়ার জন্য প্রস্তুত নন। বিশেষ করে অনেকেরই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ট্রেড লাইসেন্স কিংবা ট্রানজেকশন রেকর্ড নেই, যা ব্যাংকিং প্রক্রিয়ার অন্যতম শর্ত। ব্যাংকের প্রথাগত ঋণ প্রক্রিয়া এবং জটিল কাগজপত্রের কারণে নতুন বা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সহজেই পিছিয়ে পড়েন। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য চিত্রটি আরও কঠিন, কারণ তারা পরিবার বা সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রয়োজনীয় সাহায্যটুক অনেক ক্ষেত্রে পান না। 
আন্তর্জাতিক এসএমই দিবস উপলক্ষে সমকালের প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরও জানান, অনেক সময় উদ্যোক্তারা ঋণের শর্তাবলি ঠিকভাবে বুঝতে পারেন না।  যার ফলে সঠিকভাবে আবেদন করতে পারেন না। রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্যোক্তা উন্নয়নের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো এ ক্ষেত্রে খুবই উপকারী হতো। এ বাস্তবতায় জামানতবিহীন বা আংশিক জামানতভিত্তিক ঋণ, প্রশিক্ষণ ও হ্যান্ডহোল্ডিং সার্ভিস এবং ডিজিটাল মাধ্যমে সহজ আবেদন প্রক্রিয়া চালুর মাধ্যমে এসএমই উদ্যোক্তাদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে সহায়তা করা জরুরি। উদ্ভাবনী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উদ্যোগের মাধ্যমে এসএমই খাতে ঋণপ্রাপ্তি সহজতর করা গেলে এ খাত দেশের অর্থনীতিতে আরও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে।
সিএমএসএমই খাতে প্রাইম ব্যাংকের সম্পৃক্ততা বিষয়ে নাজিম এ. চৌধুরী বলেন, প্রাইম ব্যাংক সিএমএসএমই খাতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে। বর্তমানে এ খাতে ব্যাংকের ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বেশি এবং সাড়ে ১১ হাজারের বেশি সক্রিয় ঋণগ্রহীতা রয়েছেন। ব্যাংকের মোট সিএমএসএমই গ্রাহকের সংখ্যা ৯০ হাজারের বেশি, যা দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের প্রতি আমাদের অঙ্গীকারের প্রমাণ। প্রাইম ব্যাংক এ খাতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, সহজতর ঋণপ্রাপ্তি এবং উদ্যোক্তা সক্ষমতা বাড়াতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যাতে সিএমএসএমই খাত দেশের অর্থনীতিতে আরও বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এসএমই খাত অর্থনীতির মেরুদণ্ড। তবে এ খাতের অনেক প্রতিষ্ঠান অনানুষ্ঠানিক হওয়ায় তারা ব্যাংকিং সুবিধা ও সরকারি সহায়তা থেকে বঞ্চিত থাকে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এসএমই খাতকে আরও শক্তিশালী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে হলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। যেমন– সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ জামানতবিহীন ঋণ প্রদান বাধ্যতামূলক করা, ঋণ প্রক্রিয়াকে সহজতর করা, নীতিগতভাবে অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং সেবা চালু করা, ডিজিটাল রেকর্ড ও ক্রেডিট স্কোরিং ব্যবস্থা প্রবর্তন করা, নারী ও তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ, ক্লাস্টারভিত্তিক উন্নয়ন ও দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম চালু করা এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি সেবাগুলোকে সহজসাধ্য ও কার্যকর করা। এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়নের মাধ্যমে এসএমই খাত দেশের টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
সুদহার বেড়ে যাওয়ায় এসএমই খাতের ওপর প্রভাব প্রসঙ্গে প্রাইম ব্যাংকের ডিএমডি বলেন, ব্যাংক ঋণের সুদহার মূলত বাজারভিত্তিক হওয়ায় এটি সময় ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। সুদহার বৃদ্ধিতে ব্যবসায়িক খরচ বাড়লেও এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য তাদের খরচ কমাতে কর্মীদের দক্ষতা বাড়িয়ে ব্যবসা বৃদ্ধির মাধ্যমে ব্যবসা আরও পরিকল্পিত ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার সুযোগ করে দেয়। ভবিষ্যতে টেকসই প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের পথকে আরও মসৃণ করে তুলবে। 
ঋণ বিতরণ পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি জানান, দেশের সার্বিক বিবেচনায় ঋণ বিতরণে কিছুটা ধীরগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে ভালো, পরিচ্ছন্ন ও দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কযুক্ত ক্লায়েন্টদের ঋণ অনুমোদন চলছে। খেলাপি নির্ণয়ে নতুন নিয়ম পরিপালন করার জন্য ঋণের প্রকৃত চিত্র বের হয়ে আসছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও এসএমই ফাউন্ডেশনের পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা, নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রোগ্রামের সহায়তায় এসএমই খাত তুলনামূলক নমনীয় ও টিকে থাকার চেষ্টা করছে। তবে চাহিদা হ্রাস, মূল্যস্ফীতি ও সম্পদের সংকট এ খাতেও ধাক্কা দিচ্ছে। যারা প্রযুক্তি বা অনলাইনভিত্তিক ব্যবসায় এসেছে, তারা তুলনামূলকভাবে ভালো করছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্র্যাংক ব্যাংকের বেশির ভাগ এসএমই ঋণ জামানতবিহীন
  • ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সহজে ব্যবসার সুযোগ দরকার
  • অর্থনীতির প্রাণ ছোট ও মাঝারি উদ্যোগ
  • এক বছরে এসএমই ঋণ বিতরণ ২ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা
  • নতুন উদ্যোক্তার ঋণ পাওয়া এখনও বেশ চ্যালেঞ্জিং