প্রত্যেক জেলায় হাসপাতালের মত সিনেমা হলও দরকার: জাহিদ হাসান
Published: 27th, June 2025 GMT
‘প্রত্যেকটা জেলায় শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য যেমন হাসপাতাল আছে তেমনি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সিনেমা হল থাকা দরকার। সুস্থ বিনোদন থাকলে মানুষ নেশা, হানাহানি ও মব জাস্টিস থেকে দূরে থাকবে। আমাদের যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বাসস্থান দরকার তেমনি বিনোদনের জন্য সিনেমা হল দরকার।’
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানী বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে ‘উৎসব’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনী শেষে কথাগুলো বলছিলেন নন্দিত অভিনেতা জাহিদ হাসান।
‘উৎসব’ সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান। চরিত্রের নাম জাহাঙ্গীর। শুটিংয়ের বহুদিন পেরিয়ে গেলেও জাহাঙ্গীর চরিত্রের মধ্যে থেকে এখনো বের হতে পারেননি বলেন জানালেন এই অভিনেতা।
জাহিদ হাসান বলেন, ‘এখনো আমি এই চরিত্রটার মধ্যে ডুবে আছি। সিনেমার আমার চরিত্রের নাম জাহাঙ্গীর। আসলে আমাদের প্রত্যেকটা মানুষের মাঝে জাহাঙ্গীর লুকিয়ে আছে। কারণ, আমাদের প্রত্যেকটি মানুষের মাঝে হিরোইজম আছে, ভিলেন আছে। আছে উপলব্ধি করার ক্ষমতা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমাদের সেই রিয়েলাইজেশনের সময়টা আছে। কখন মৃত্যু হয় আমরা জানি না। এই রিয়েলাইজ যদি আমাদের মধ্যে থাকে তাহলে আজ আমরা যারা জাহাঙ্গীরের মত আছি, কাল আমরা ভালো হয়ে যাবো।’
ঈদের সিনেমা মানেই এখন যেন অ্যাকশন অথবা থ্রিলার। গত কয়েক বছরে ঈদে বাজিমাত করা সিনেমাগুলোর দিকে তাকালে এমনটাই মনে হতে পারে। সেসব থেকে বেরিয়ে হাস্যরস পরিবার এবং সম্পর্কের গল্পে এবার ঈদে বাজিমাত করেছে ‘উৎসব’। এই সফলতার কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করলেন প্রত্যেক শিল্পীর সততাকে।
জাহিদ হাসানের কথায়, ‘প্রডাক্টশন বয় থেকে শুরু করে এই সিনেমার সঙ্গে আমরা যারা যুক্ত ছিলাম তারা প্রত্যেকেই অনেক সৎ ছিলাম। অভিনয় নিয়ে কোনো অসৎ অবস্থার মধ্যে আমরা যাইনি। এটাই মনে হয় আমাদের সফলতার বড় বিষয়। এই সিনেমার প্রত্যেকটি দৃশ্যের সঙ্গে আমাদের আবেগ জড়িয়ে আছে।’
করোনা মহামারির পর অভিনয়ে খুব একটা দেখা যায়নি জাহিদ হাসানকে। নির্মাতাদের সঙ্গে অভিনয় নিয়ে খুব একটা কথা হয়নি তার। কারোনার পর ‘উৎসব’-ই তার প্রথম সিনেমা।
তার ভাষ্য, ‘করোনার পর খুব একটা অভিনয় করা হয়নি। আমাকে অভিনয়ে নেওয়া বা না নেওয়াটা নির্মাতাদের দায়িত্ব। বলতে গেলে গত কয়েকবছর সেভাবে সুযোগও আসেনি। ‘উৎসব’ সিনেমার মধ্যে সেই সুযোগটা এলো। অভিনয় করলাম। দর্শক প্রতিক্রিয়া দেখে বুঝেছি অনন্ত ফেল করিনি।’
সিনেমার হলের সংখ্যা কম হওয়ায় দেশের সিনেমা সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছচ্ছে না বলে দুঃখ প্রকাশ করেন জাহিদ হাসান। সেইসঙ্গে জেলা প্রশাসকদের বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ারও অনুরোধ জানান তিনি।
জাহিদ হাসান বলেন, ‘আমার বাড়ি সিরাজগঞ্জ। আমার বোন ফোন করে বললেন এখানে তো সিনেমা হলে নেই। তাই আমরা সিনেমা দেখতে পারছি না। এই কথা শুনে কষ্ট পেয়েছি। এটা সত্য সিরাজগঞ্জের মত দেশের অনেক বড় শহরে সিনেমা হল নেই। জেলা প্রশাসকসহ দায়িত্বশীল পর্যায়ে যারা আছে তাদের সবাইকে অনুরোধ করবো তারা যেন প্রত্যেকটি জেলায় সিনেমা হলের ব্যবস্থার উদ্যোগ নিয়ে তার বাস্তবায়ন করেন।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আম দ র চর ত র দরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ড. ইউনূসকে অসুর রূপে উপস্থাপন নিন্দনীয়: উপদেষ্টা
ভারতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অসুর রূপে প্রতিমায় উপস্থাপন ‘অত্যন্ত নিন্দনীয়’ ও ‘অসম্মানজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
আজ বুধবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার কাছাইট গ্রামে কাছাইট ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ‘দেশ গঠনে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে জাতিসংঘ মহাসচিবের পূর্ণ সমর্থন
নির্বাচন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
শারদীয় দুর্গোৎসবে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের একটি পূজামণ্ডপে অসুরের ভূমিকায় ড. মুহম্মদ ইউনূস, একটিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, অন্য একটিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে নির্মাণ করা হয়েছে।
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘‘মানুষের মধ্যে রাজনৈতিক পার্থক্য বা তর্ক-বিতর্ক থাকতেই পারে, তাই একটি দেশের সরকার প্রধানকে অন্য একটি দেশে অসুর অর্থাৎ শয়তান বানিয়ে উপস্থাপন করা অশোভন ও দুঃখজনক। যারা এই কাজ করেছেন, তারা ভালো করেননি। এতে মানুষের প্রতি মানুষের সম্মানবোধ বিনষ্ট হয়।’’
এ ঘটনায় রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিবাদ জানানো হবে কি-না তা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা দেশের বাইরে রয়েছেন। তারা দেশে ফিরে এলে কারা এগুলো করেছেন, খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে যা করার করবেন।’’
সারা দেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘‘বৃহৎ এই উৎসব ঘিরে সরকার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। এখনো পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনার খবর আসেনি।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘দেশ গঠনে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা পূর্বের মতো আগামী দিনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ মাদ্রাসা শিক্ষার্থী অনেকে রয়েছেন প্রশাসন, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।’’
কাছাইট জামে মসজিদ ঈদগাহ ময়দানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. নকীব মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ, কাছাইট জামে মসজিদ কমপ্লেক্সের আল্লামা শায়খ আব্দুল ওয়াহিদ ভূইয়া (বড় হুজুর), কাছাইট ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি মোহাম্মদ আমির হামজা ভূইয়া, জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মোবারক হোসেন আকন্দ।
ঢাকা/পলাশ/বকুল