‘প্রত্যেকটা জেলায় শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য যেমন হাসপাতাল আছে তেমনি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সিনেমা হল থাকা দরকার। সুস্থ বিনোদন থাকলে মানুষ নেশা, হানাহানি ও মব জাস্টিস থেকে দূরে থাকবে। আমাদের যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বাসস্থান দরকার তেমনি বিনোদনের জন্য সিনেমা হল দরকার।’

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানী বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে ‘উৎসব’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনী শেষে কথাগুলো বলছিলেন নন্দিত অভিনেতা জাহিদ হাসান।

‘উৎসব’ সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান। চরিত্রের নাম জাহাঙ্গীর। শুটিংয়ের বহুদিন পেরিয়ে গেলেও জাহাঙ্গীর চরিত্রের মধ্যে থেকে এখনো বের হতে পারেননি বলেন জানালেন এই অভিনেতা।

জাহিদ হাসান বলেন, ‘এখনো আমি এই চরিত্রটার মধ্যে ডুবে আছি। সিনেমার আমার চরিত্রের নাম জাহাঙ্গীর। আসলে আমাদের প্রত্যেকটা মানুষের মাঝে জাহাঙ্গীর লুকিয়ে আছে। কারণ, আমাদের প্রত্যেকটি মানুষের মাঝে হিরোইজম আছে, ভিলেন আছে। আছে উপলব্ধি করার ক্ষমতা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমাদের সেই রিয়েলাইজেশনের সময়টা আছে। কখন মৃত্যু হয় আমরা জানি না। এই রিয়েলাইজ যদি আমাদের মধ্যে থাকে তাহলে আজ আমরা যারা জাহাঙ্গীরের মত আছি, কাল আমরা ভালো হয়ে যাবো।’

ঈদের সিনেমা মানেই এখন যেন অ্যাকশন অথবা থ্রিলার। গত কয়েক বছরে ঈদে বাজিমাত করা সিনেমাগুলোর দিকে তাকালে এমনটাই মনে হতে পারে। সেসব থেকে বেরিয়ে হাস্যরস পরিবার এবং সম্পর্কের গল্পে এবার ঈদে বাজিমাত করেছে ‘উৎসব’। এই সফলতার কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করলেন প্রত্যেক শিল্পীর সততাকে।

জাহিদ হাসানের কথায়, ‘প্রডাক্টশন বয় থেকে শুরু করে এই সিনেমার সঙ্গে আমরা যারা যুক্ত ছিলাম তারা প্রত্যেকেই অনেক সৎ ছিলাম। অভিনয় নিয়ে কোনো অসৎ অবস্থার মধ্যে আমরা যাইনি। এটাই মনে হয় আমাদের সফলতার বড় বিষয়। এই সিনেমার প্রত্যেকটি দৃশ্যের সঙ্গে আমাদের আবেগ জড়িয়ে আছে।’

করোনা মহামারির পর অভিনয়ে খুব একটা দেখা যায়নি জাহিদ হাসানকে। নির্মাতাদের সঙ্গে অভিনয় নিয়ে খুব একটা কথা হয়নি তার। কারোনার পর ‘উৎসব’-ই তার প্রথম সিনেমা।

তার ভাষ্য, ‘করোনার পর খুব একটা অভিনয় করা হয়নি। আমাকে অভিনয়ে নেওয়া বা না নেওয়াটা নির্মাতাদের দায়িত্ব। বলতে গেলে গত কয়েকবছর সেভাবে সুযোগও আসেনি। ‘উৎসব’ সিনেমার মধ্যে সেই সুযোগটা এলো। অভিনয় করলাম। দর্শক প্রতিক্রিয়া দেখে বুঝেছি অনন্ত ফেল করিনি।’

সিনেমার হলের সংখ্যা কম হওয়ায় দেশের সিনেমা সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছচ্ছে না বলে দুঃখ প্রকাশ করেন জাহিদ হাসান। সেইসঙ্গে জেলা প্রশাসকদের বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ারও অনুরোধ জানান তিনি।

জাহিদ হাসান বলেন, ‘আমার বাড়ি সিরাজগঞ্জ। আমার বোন ফোন করে বললেন এখানে তো সিনেমা হলে নেই। তাই আমরা সিনেমা দেখতে পারছি না। এই কথা শুনে কষ্ট পেয়েছি। এটা সত্য সিরাজগঞ্জের মত দেশের অনেক বড় শহরে সিনেমা হল নেই। জেলা প্রশাসকসহ দায়িত্বশীল পর্যায়ে যারা আছে তাদের সবাইকে অনুরোধ করবো তারা যেন প্রত্যেকটি জেলায় সিনেমা হলের ব্যবস্থার উদ্যোগ নিয়ে তার বাস্তবায়ন করেন।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আম দ র চর ত র দরক র

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উৎসব পালনে পূজা পরিষদের মতবনিময় সভা

আগামী ১৬ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী।

উৎসবকে সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) বিকেলে শহরের চাষাঢ়াস্থ শ্রী শ্রী গোপাল জিউর বিগ্রহ মন্দির প্রাঙ্গণে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সভাপতি  বিষ্ণুপদ সাহা'র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাধারণ সম্পাদক সুশীল দাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক সংকর কুমার দে এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান সনাতন ধর্মাবলম্বী সকলকে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উৎসবের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ধর্মীয় সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী।

এখানে সকল ধর্মের মানুষ একসাথে মিলেমিশে থাকতে চায় কিন্তু গত ১৫ বছর স্বৈরাচারী খুনি হাসিনা সরকার মুসলমানদের আলেম সমাজের উপর নির্মম জুলুম অত্যাচার চালিয়েছিলেন। তারা দেশের মানুষের মধ্যে একটা ধর্মীয় বিরোধ তৈরি করেছিলো।  

তিনি বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় আমরা সকল ধর্মের মানুষের সুখ দুঃখের পাশে থাকবো। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পরপরই তিনি আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন, নারায়ণগঞ্জে যাতে কোনো ধর্মীয় সহিংসতা না ঘটে। আমরাও সেই নির্দেশনা মোতাবেক আপনাদের পাশে ছিলাম এবং এখনো আছি। হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান সকল ধর্মের মানুষ আমরা মিলেমিশে থাকবো। 

তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে কেউ প্রথম শ্রেণীর নাগরিক কিংবা কেউ দ্বিতীয়, তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক প্রথা চালু নেই। আমাদের দেশের সকল নাগরিকের সমান অধিকার। সকল ধর্মের, সকল পেশার এবং সকল বয়সের নাগরিক সমান অধিকার নিয়ে জন্মায়। তাই নিজেকে সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগরিষ্ঠ ভাবার সুযোগ নাই। আমরা সবাই মিলেমিশে এদেশে বসবাস করবো।

বিশেষ বক্তার বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, পৃথিবীর সকল ধর্মই শান্তির কথা বলে। সত্য ও ন্যায়নীতির কথা বলে।

আমাদের ইসলাম ধর্মে আমাদের রাসূল আছেন, নবী আছেন, পীর আউলিয়া আছেন। আমরা যাদের আদর্শ মনে কর জীবন যাপন করি, তেমনিভাবে আপনারাদের ধর্মেও  ঠাকুর দেবতা রয়েছে তাদের আদর্শে আপনারা পরিচালিত হন।

সবখানেই আপনি শান্তির বাণী পাবেন। তাই আমরা সকল ধর্মের মানুষ এদেশে সুন্দরভাবে বসবাস করবো। আপনারা যেখানেই ডাকবেন আমরা মহানগর বিএনপি সবসময় আপনাদের পাশে থাকব।

তিনি বলেন, আসন্ন জন্মাষ্টমীর উৎসব উপলক্ষে সকল হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভাইবোনদেরকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আপনারা সকল ভয়-ভীতির উর্ধ্বে উঠে জাঁক জমকপূর্ণভাবে জন্মাষ্টমী আয়োজনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করুন। কোথাও কোন বাঁধার সম্মুখীন হলে আমাদেরকে জানাবেন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপন বলেন, আমরা ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষ শান্তিতে একসাথে বসবাস করতে চাই, কোনো সাম্প্রদায়িক সহিংসতা চাই না। গত ৫ আগস্টের পর থেকে নারায়ণগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিয়েছেন স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। ভবিষ্যতে এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলে আমরা আশা রাখি। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশে জন্মাষ্টমী উৎসব পালন করা হবে।

এবার নারায়ণগঞ্জ জেলার প্রত্যেকটি উপজেলায় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে প্রাণবন্তভাবে সনাতন ধর্মাবলম্বী সকলে যেন এই উৎসব নির্বিঘ্নে উদযাপন করতে পারে সেই লক্ষ্যে সব ধরণের প্রস্তুতি নেয়া হবে। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে সকলকে জন্মাষ্টমীর আগাম শুভেচ্ছা ও নিমন্ত্রণ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চারুকলায় বর্ষা উৎসব ঘিরে প্রাণের মেলা
  • ৫২ বছর আগের ‘রংবাজ’-এর মতো চমকে দিল ‘উৎসব’
  • যুদ্ধবিধ্বস্ত সীমান্ত শহরে ভূগর্ভস্থ কবিতা উৎসব
  • জাপাকে তিন কাজের পরামর্শ দিলেন জেপি মহাসচিব শেখ শহীদ
  • এক ঢেউয়ে নিভে গেছে মুন্ডাদের কারাম উৎসবের প্রদীপ
  • রাখিবন্ধন: ভেদাভেদ ভুলে মানবতার উৎসব
  • এ সপ্তাহের রাশিফল (৯-১৫ আগস্ট)
  • আনন্দধারার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও অভিষেক অনুষ্ঠান
  • শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উৎসব পালনে পূজা পরিষদের মতবনিময় সভা
  • টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসবে ‘আলী’