মধ্যপ্রাচ্যে যেভাবে সংঘাত ছড়িয়ে দিচ্ছে ইসরায়েল
Published: 27th, June 2025 GMT
১২ দিনব্যাপী যুদ্ধের পর ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি নাজুক যুদ্ধবিরতি চলছে, যা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণার এক দিন পর কার্যকর হয়। ১৩ জুন ইরানের কয়েকটি সামরিক অবকাঠামো ও পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ইসরায়েলের আকস্মিক হামলার পর এ যুদ্ধের সূচনা হয়েছিল।
আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডেটা প্রজেক্টের (এসিএলইডি) তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ বছরের ১৩ জুন ইরানে প্রথম হামলা করার দিন পর্যন্ত ইসরায়েল গাজা ও অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড, লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন ও ইরানে প্রায় ৩৫ হাজার হামলা চালিয়েছে। এসব হামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
ইসরায়েল এসব হামলায় যুদ্ধবিমান ও ড্রোন ব্যবহার করেছে, গোলাবর্ষণের পাশাপাশি ছুড়েছে ক্ষেপণাস্ত্র, ঘটিয়েছে দূরনিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ। এ ছাড়া সুপরিকল্পিতভাবে সম্পত্তি ধ্বংস করেছে।
সবচেয়ে বেশি হামলা চালানো হয়েছে ফিলিস্তিনিদের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে। এর মধ্যে অন্তত ১৮ হাজার ২৩৫টি হামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। এরপর যথাক্রমে লেবানন (১৫ হাজার ৫২০), সিরিয়া (৬১৬), ইরান (৫৮) ও ইয়েমেনে (৩৯) বেশি হামলা হয়।
ইসরায়েলের আকাশ যুদ্ধইসরায়েল বেশির ভাগ হামলা চালিয়েছে গাজা, অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড পশ্চিম তীর ও লেবাননে। তবে তাদের সামরিক অভিযান আঞ্চলিক এ সীমানা ছাড়িয়ে আরও দূরবর্তী অঞ্চলেও পৌঁছেছে।
ইসরায়েলের যুদ্ধবিমানগুলো শত শত, এমনকি হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে উড়ে গিয়ে হামলা চালিয়েছে; যেমন সিরিয়ার প্রায় ৫৫০ কিলোমিটার (প্রায় ৩৪০ মাইল), ইরানে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কিলোমিটার (৯০০ মাইল) ও ইয়েমেনে প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার (১ হাজার ২০০ মাইল) ভেতর পর্যন্ত প্রবেশ করে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে।
সিরিয়ায় প্রায় ৫৫০ কিলোমিটার (প্রায় ৩৪০ মাইল), ইরানে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কিলোমিটার (৯০০ মাইল) ও ইয়েমেনে প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার (১ হাজার ২০০ মাইল) ভেতর পর্যন্ত প্রবেশ করে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে ইসরায়েল।দূরপাল্লার এই হামলাগুলো সংঘাতের ভৌগোলিক পরিসর উল্লেখযোগ্যভাবে বিস্তৃত করেছে, যা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আরও ব্যাপক যুদ্ধ শুরু করা বা সামরিক অভিযান চালানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ইসরায়েলের এসব অভিযান সম্ভব হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা সর্বাধুনিক বিমানবহরের কারণে, যার মধ্যে রয়েছে এফ-১৫, এফ-১৬ এবং রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম স্টেলথ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান। রাডারে স্টেলথ ক্ষমতাসম্পন্ন যুদ্ধবিমান শনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব। এফ-৩৫ ইসরায়েলের অস্ত্রাগারে থাকা সবচেয়ে উন্নত যুদ্ধবিমান।
নজরদারি করা ও লক্ষ্যভিত্তিক হামলা চালানোর জন্য ইসরায়েল ড্রোনের ওপরও ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের ১৩ জুন পর্যন্ত ইসরায়েল যেসব হামলা চালিয়েছে, তার একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র নিচে তুলে ধরা হলো।
গাজায় ইসরায়েলের হামলার পর ধ্বংসস্তূপের ওপর অসহায় এক ফিলিস্তিনি.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জিরো ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল আইনত দণ্ডনীয়: এনবিআর
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া পোস্টে সব কয়টি ঘর ‘শূন্য’ হিসেবে পূরণ করে রিটার্ন দাখিল করা যায় বলে ভ্রান্ত ধারণা প্রচার করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘জিরো রিটার্ন’ দাখিল বিষয়ক কিছু ভ্রান্ত ধারণার পোস্ট জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নজরে এসেছে।
এসব ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে কোনো কোনো করদাতা তাঁদের আয়কর রিটার্নে আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়ের বিষয়ে অসত্য ঘোষণা প্রদান করে আসছেন। এসব জিরো ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল আইনত দণ্ডনীয় বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআর।
রবিবার (১০ আগস্ট) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড জানায়, করদাতাদের জানানো যাচ্ছে যে, আয়কর আইন, ২০২৩ অনুসারে ‘জিরো রিটার্ন’ নামে কোনো প্রকার রিটার্ন দাখিলের বিধান নেই। আয়কর আইন অনুসারে একজন করদাতাকে তাঁর প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় অবশ্যই সঠিকভাবে আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করতে হবে।
করদাতার প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় প্রদর্শন না করে এর কোন একটি শূন্য অথবা সবগুলো তথ্য শূন্য হিসেবে প্রদর্শন করা সম্পূর্ণ বে-আইনি এবং এটি একটি ফৌজদারী অপরাধ। করদাতা কর্তৃক দাখিলকৃত আয়কর রিটার্নে তাঁর আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় সম্পর্কিত সঠিক তথ্য প্রদর্শন না করে মিথ্যা বা অসত্য তথ্য প্রদান করলে আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ৩১২ ও ৩১৩ অনুসারে করদাতাকে ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড প্রদানের বিধান রয়েছে।
একজন করদাতার আয়, ব্যয়, সম্পদ বা দায় সংক্রান্ত বিষয়ে রিটার্নে সঠিক ঘোষণা প্রদান করা একজন করদাতার পবিত্র নাগরিক ও আইনি দায়িত্ব। করদাতার প্রকৃত আয়ের পরিমাণ আইনানুযায়ী করযোগ্য না হলে তাঁকে কোনো কর পরিশোধ করতে হবে না। তবে কর প্রদেয় না হলেও সঠিক তথ্য-উপাত্ত প্রদর্শন না করে শূন্য আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় দেখিয়ে শুন্য বা জিরো রিটার্ন দাখিল করার কোন সুযোগ আয়কর আইনে নেই।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করে যে, করদাতা দায়িত্বশীল নাগরিক হিসাবে আয়কর রিটার্নে প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় প্রদর্শন করে দেশের উন্নয়নে গর্বিত অংশীদার হবেন। একইসাথে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত প্রতারনামূলক জিরো রিটার্নের ফাঁদে পা না দিয়ে নিজেকে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড হতে সুরক্ষিত রাখবেন।
ঢাকা/নাজমুল/এস