জুলাই ঘোষণাপত্র না আসায় ক্ষোভ, মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা আপ বাংলাদেশের
Published: 30th, June 2025 GMT
জুলাই ঘোষণাপত্র, প্ল্যাটফর্মের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম এবং গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রাজধানীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আপ বাংলাদেশ সরকারকে কঠোর ভাষায় দায়ী করেছে এবং ঘোষণাপত্র না দেওয়ার ব্যর্থতার জন্য তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। একই সঙ্গে সংগঠনটি মাসব্যাপী ৩৬ দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই—জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র কোনো প্রাইভেট ইনিশিয়েটিভ হতে পারে না, এটি একটি রাষ্ট্রীয় দলিল। ফলে এই ঘোষণাপত্র অবশ্যই সরকারকেই দিতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে ছাত্র-জনতা প্রয়োজনে আবারও রাজপথে নেমে এসে সকল রাজনৈতিক দল, মত ও অংশীজনকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের কাছ থেকেই জুলাই ঘোষণাপত্র আদায় করে নেবে ইনশাআল্লাহ।’
তিনি আরও বলেন, ‘‘সাড়ে পনেরো বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াই এবং লাখো ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা একটি ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি। কিন্তু সরকার এখনও পর্যন্ত শহীদদের স্বীকৃতি, আহতদের পুনর্বাসন কিংবা ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।”
গত ১০ মে সরকার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছিল। সেই সময়সীমা ২৫ জুনে শেষ হলেও এখন পর্যন্ত সরকার কোনো বক্তব্য বা ব্যাখ্যা দেয়নি—এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আপ বাংলাদেশ।
৩৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা:
আপ বাংলাদেশ জানায়, ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশব্যাপী নানা কর্মসূচি পালিত হবে। ঘোষিত কর্মসূচিগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১। ১ জুলাই–৩৬ জুলাই: দেশব্যাপী গণসংযোগ
২। ৪ জুলাই: বরিশাল বিভাগীয় গণসংযোগ
৩। ৫ জুলাই: রংপুর বিভাগীয় গণসংযোগ
৪। ১১ জুলাই: চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণসংযোগ
৫। ১২ জুলাই: সিলেট বিভাগীয় গণসংযোগ
৬। ১৫ জুলাই: নারী শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধ স্মরণ
৭। ১৬ জুলাই: দোয়া ও শহীদদের কবর জিয়ারত
৮। ১৮ জুলাই: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিরোধ স্মরণ
৯। ১৮ জুলাই: খুলনা বিভাগীয় গণসংযোগ
১০। ১৯ জুলাই: রাজশাহী বিভাগীয় গণসংযোগ
১১। ১৯ জুলাই: মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধ স্মরণ
১২। ২০ জুলাই: মেহনতি মানুষের প্রতিরোধ স্মরণ
১৩। ২৫ জুলাই: ময়মনসিংহ বিভাগীয় গণসংযোগ
১৪। ২৬ জুলাই: ঢাকা বিভাগীয় গণসংযোগ
১৫। ১ আগস্ট: জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল
১৬। ৩ আগস্ট: হাসিনা পতনের এক দফা স্মরণ
১৭। ৫ আগস্ট: গণঅভ্যুত্থান ও নতুন বাংলাদেশ দিবস উদযাপন
এছাড়া, জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবিতে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও সংলাপের আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। পাশাপাশি, সারাদেশে সাধারণ সমর্থক বৃদ্ধির কার্যক্রমও চলমান থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনের সমাপ্তিতে বলা হয়, ‘‘জুলাই আমার, জুলাই আপনার, জুলাই বাংলাদেশের আপামর ছাত্র-জনতার। নতুন বাংলাদেশের পথরেখা হবে এই আত্মত্যাগ ও কুরবানির ভিত্তিতেই। সরকার যেন আর কালক্ষেপণ না করে, জনগণের স্পন্দন বুঝে দ্রুতই ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করে।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আপ বাংলাদেশের সদস্য সচিব আরেফিন মোহাম্মদ হিজবুল্লাহ, প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা ইরা, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমাদ এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় সদস্য ও সংগঠকবৃন্দ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আপ ব ল দ শ ব ভ গ য় গণস য গ ভ গ য় গণস য গ ১ প রক শ সরক র আগস ট
এছাড়াও পড়ুন:
গণঅভ্যুত্থানে হত্যায় বিএনপি নেতাকর্মীদের আসামি করার প্রতিবাদে বিক
রাজধানীর মিরপুর থানায় দায়ের করা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যা মামলায় শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে উপজেলা বিএনপি এবং সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বুধবার (১ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় উপজেলার কোদালপুর বাজার থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে বাজার প্রদক্ষিণ করে কোদালপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে এক ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
আরো পড়ুন:
জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বিক্ষোভ
খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা বহাল, ২ মহাসড়কে অবরোধ শিথিল
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকার মিরপুর থানায় ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে প্রধান আসামি করে গণঅভ্যুত্থানে নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা করা হয়। মামলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে গোসাইরহাট উপজেলা বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অবিলম্বে মামলা থেকে নিরপরাধ বিএনপি নেতাকর্মীদের নাম প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা।
গোসাইরহাট উপজেলা বিএনপির সদস্য তারেক আজিজ মোবারক ঢালী বলেন, ‘‘যেসব বিএনপি নেতাকর্মীর নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তারা সকলে বিগত দিনে স্বৈরাচারি হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে আমার সঙ্গে কাজ করেছেন। তাদের ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আমরা চাই অবিলম্বে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হোক।’’
কোদালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম সালু মৃধা বলেন, ‘‘বিগত দিনে বিএনপি করার কারণে আমরা মামলা খেয়েছি, জেল খেটেছি, হামলার শিকার হয়েছি। এখন আবার আমাদের নাম একই মামলায় জড়ানো হয়েছে। এটি ঘৃণিত ষড়যন্ত্র, এর সঙ্গে জড়িতদের বিচার চাই।’’
ভুক্তভোগী উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন মৃধা বলেন, ‘‘আমি বিগত দিনে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ছিলাম। এমনকি, জুলাই আন্দোলনেও অংশ নিয়েছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, গত ২০ সেপ্টেম্বর আমার নাম মিরপুর থানার মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।’’
তিনি এর তীব্র নিন্দা এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মামলা থেকে তার নাম প্রত্যাহারের দাবি জানান।
ঢাকা/আকাশ/বকুল