উত্তরা মোটরস লিমিটেড গত সোমবার ঢাকার গুলশান-তেজগাঁও লিংক রোডে সুজুকি প্রাইভেট কারের নতুন প্রিমিয়াম এক্সপেরিয়েন্স সেন্টার তথা শোরুম উদ্বোধন করেছে। উত্তরা মোটরস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

উত্তরা গ্রুপ অব কোম্পানিজের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মতিউর রহমান, ব্যবসায়িক পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক নাঈমুর রহমান এবং মারুতি সুজুকি ইন্ডিয়া লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ অফিসার ইয়াসুহিকো হিরোসে ও ডিভিশনাল ম্যানেজার অনিল কুমার সাইনি যৌথভাবে সুজুকি গাড়ির এই শোরুম বা বিক্রয়কেন্দ্র উদ্বোধন করেন। এ সময় উত্তরা মোটরসের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে সুজুকি গাড়ির মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েটি হলো প্রিমিয়াম সেডান সুজুকি কিয়াজ, প্রশস্ত ৭ সিটার এমপিভি এর্তিগা, ৬ সিটার এসইউভি এক্সএল৬, সম্পূর্ণ হাইব্রিড এসইউভি গ্র্যান্ড ভিতারা এবং অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের জন্য সুজুকি জিমনি।

উত্তরা মোটরসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সুজুকির এই প্রিমিয়াম এক্সপেরিয়েন্স সেন্টার গ্রাহকসেবার নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে। এটি সুজুকির সর্বশেষ মডেল ও আধুনিক প্রযুক্তিবিষয়ক একটি ইন্টারঅ্যাকটিভ শোরুম। এতে আরও জানানো হয়, উত্তরা মোটরস ১৯৮০ সাল থেকে বাংলাদেশে সুজুকি গাড়ির একমাত্র পরিবেশক হিসেবে কাজ করছে। এই প্রতিষ্ঠান বর্তমানে সারা দেশে ৮টি শোরুম ও ১০টি সার্ভিস সেন্টার পরিচালনা করছে।

উত্তরা গ্রুপ অব কোম্পানিজের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মতিউর রহমান বলেন, ‘সুজুকি গাড়ির একমাত্র পরিবেশক হিসেবে এ রকম বিশ্বমানের ফ্যাসিলিটি চালু করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। বিক্রয়কেন্দ্রটি জাপানি প্রযুক্তিতে তৈরি সুজুকি ব্র্যান্ডের গাড়িগুলোকে গ্রাহকদের কাছে আরও নতুনভাবে পরিচয় করিয়ে দেবে। ৩১ জুলাই এই নতুন আউটলেটে গ্রাহকদের জন্য সব গাড়িতে রয়েছে বিশেষ ক্যাশব্যাক সুবিধা।’

অনুষ্ঠানে মারুতি সুজুকি ইন্ডিয়ার এক্সিকিউটিভ অফিসার ইয়াসুহিকো হিরোসে বলেন, ‘এই প্রিমিয়াম এক্সপেরিয়েন্স সেন্টার বা শোরুম উদ্বোধন বাংলাদেশের জন্য সুজুকির দীর্ঘমেয়াদি প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। আমরা বিশ্বাস করি, এটি গ্রাহকদের ব্র্যান্ড অভিজ্ঞতাকে আরও সমৃদ্ধ করবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম টরস

এছাড়াও পড়ুন:

নদীতে কখন পাথর জমা পড়ে

সিলেটে ভোলাগঞ্জের ওপর দিয়ে বয়ে আসা নদীর নাম ধলাই নদ। পাহাড় থেকে ঝরনার পানির স্রোতে এই নদী বেয়েই সাদা পাথর নেমে আসে। নদী শুধু বিশেষ কোনো জলধারা নয়। নদী সাধারণভাবে পাথরের এক বিশাল বাহক। পাহাড় থেকে নেমে আসা অসংখ্য পাথর নদীর স্রোতে ভেসে চলে আসে সমতলে। নদীর বিভিন্ন পাথর মূলত পৃথিবীর ভূত্বকে থাকা বিভিন্ন শিলার ক্ষয়প্রাপ্ত অংশ।

পাথর তৈরির প্রক্রিয়াকে প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। পৃথিবীর অভ্যন্তরে থাকা অত্যধিক উত্তপ্ত গলিত ম্যাগমা বা লাভা ঠান্ডা ও কঠিন হয়ে আগ্নেয় শিলা তৈরি হয়। আগ্নেয় শিলার মধ্যে গ্রানাইট ও ব্যাসল্ট অন্যতম। পাহাড়ের ওপরের অংশে এ ধরনের শিলা ব্যাপকভাবে দেখা যায়। এ ছাড়া পাললিক শিলা দেখা যায়। বিভিন্ন ধরনের শিলা, বালি, কাদা ও জৈব পদার্থ একত্র হয়ে স্তরে স্তরে জমাট বেঁধে এমন শিলা তৈরি হয়। নদীর তলদেশে বা প্রাচীন হ্রদের তলদেশে এই শিলা প্রায়শই দেখা যায়। বেলেপাথর বা স্যান্ডস্টোন ও চুনাপাথর বা লাইমস্টোন এমন শিলা। আমরা প্রকৃতিতে রূপান্তরিত শিলা দেখি। আগ্নেয় বা পাললিক শিলা উচ্চ তাপমাত্রা ও চাপের প্রভাবে পরিবর্তিত হয়ে রূপান্তরিত শিলায় পরিণত হয়। মার্বেল ও স্লেট এমন ধরনের শিলা।

সিলেটের ভোলাগঞ্জে চুনাপাথর জমা হয়। এই পাললিক শিলা প্রধানত ক্যালসিয়াম কার্বনেট। পাহাড়ের ওপরে থাকা বিশাল শিলা আবহাওয়ার পরিবর্তন, তাপমাত্রা, বাতাস ও বৃষ্টির কারণে ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হতে থাকে। এই ক্ষয়প্রাপ্ত অংশগুলো ছোট ছোট টুকরা হয়ে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে গড়িয়ে নিচে আসে। বরফ গলে কিংবা বৃষ্টিপাতের মাধ্যমে এসব পাথর নদীর স্রোতের সঙ্গে যুক্ত হয়। নদীর স্রোত পাথরের আকার ও ওজনের ওপর নির্ভর করে সেগুলোকে টেনে নিচে নামাতে থাকে। বড় ও ভারী পাথরগুলো স্রোতের অভাবে খুব বেশি দূর যেতে পারে না। তারা সাধারণত নদীর উপরিভাগে বা তীরে জমা হয়।

নদীর দীর্ঘ যাত্রায় পাথরগুলো ক্রমাগত একে অপরের সঙ্গে ও নদীর তলদেশের সঙ্গে ঘষা খেতে থাকে। এই ঘষা খাওয়ার ফলে পাথরের কোণগুলো মসৃণ হয়ে যায় এবং তাদের আকার ছোট হতে থাকে। এ কারণেই পাহাড়ি নদীর পাথরের আকৃতি প্রায়শই মসৃণ ও গোলাকার হয়। নদীর স্রোত যখন দুর্বল হয়ে যায়, তখন তা আর পাথর বা পলি বহন করতে পারে না। নদীর সমতল এলাকায় দুর্বল স্রোতের কারণে তলদেশে পাথর বেশি জমা হয়।

ভূতত্ত্ববিদেরা নদীর পাথর নিয়ে গবেষণা করে অনেক তথ্য জানার চেষ্টা করেন। পাথরের গঠন, আকার ও ধরন থেকে বোঝা যায় নদীর উৎপত্তিস্থল কোথায়, স্রোতের গতি কেমন এবং নদীটি কত পুরোনো। পাথরের মধ্যে থাকা জীবাশ্ম থেকে নদীর গতিপথের পরিবর্তন এবং লাখ লাখ বছর আগের ভূপ্রকৃতির ইতিহাসও জানা যায়।

সূত্র: দ্য লিভিং রিভার

সম্পর্কিত নিবন্ধ