দুই কমিশনারসহ এনবিআরের আরও ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু
Published: 3rd, July 2025 GMT
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আরও পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ বৃহস্পতিবার তাঁদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরুর কথা জানায়।
যাঁদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে, তাঁরা হলেন বেনাপোল কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান, ঢাকা পূর্ব কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার কাজী জিয়া মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, আয়কর বিভাগের অতিরিক্ত কর কমিশনার সেহেলা সিদ্দিকা, উপকর কমিশনার মো.
অতিরিক্ত কর কমিশনার সেহেলা সিদ্দিকা হলেন এনবিআরের আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের মহাসচিব। এনবিআরের একাধিক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, আন্দোলনের জেরে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হয়রানি করার জন্য এমন তদন্ত করা হচ্ছে।
দুদকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অসাধু সদস্য ও কর্মকর্তারা কর ও শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে করদাতাদের কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও এনবিআরের কর্মকর্তারা নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য নির্ধারিত পরিমাণ কর আদায় না করে তাঁদের করের পরিমাণ কমিয়ে দিতেন বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রতিবছর সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা ঘুষ না পেয়ে কর ফাঁকি দেওয়ার মিথ্যা মামলা করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানমালিককে হয়রানি করেন।
দুদক জানায়, অনেক করদাতা আগাম কর দেন। আবার কেউ কেউ বেশি কর দেন। নিয়ম হচ্ছে, এই কর হিসাব-নিকাশ করার পর বেশি দেওয়া হলে তা ওই করদাতাকে ফেরত দিতে হয়। কিন্তু তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ আর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, করের বাড়তি টাকা ফেরত পেতে আরও অন্তত অর্ধেক টাকা ঘুষ বা উপহারে খরচ হয়। অভিযোগ রয়েছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর কর্মকর্তারা করের টাকা ফেরত দিতে নিজেরাও কামিয়ে নিচ্ছেন মোটা টাকা।
এর আগে গত চার দিনে এনবিআরের সদস্য, কমিশনারসহ উচ্চ পদের ১১ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাঁদের মধ্যে এনবিআরের দুজন সদস্য আছেন। এ ছাড়া এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদারও আছেন।
কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন স্টেশনে চাকরিকালীন বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে শুল্ক, ভ্যাট ও ক্ষেত্র বিশেষে আয়কর ফাঁকির সুযোগ করে দিয়ে ও নিজে লাভবান হয়ে রাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মাধ্যমে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন এমন অভিযোগ রয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথমবার রিটার্ন দেওয়ার সময় যে ৫টি ভুল করা যাবে না
প্রথমবার আয়কর রিটার্ন দেওয়ার সময়ে একটু সাবধান হতে হবে। অনেকেই প্রথমবার রিটার্ন দেওয়ার সময় সঠিকভাবে দেন না এবং কৌশলী হন না। এ জন্য পরে বিপাকে পড়েন তাঁরা।
প্রথমবার রিটার্ন দেওয়ার সময়ে অনেকে ভুল করেন। তাঁদের অনেকের কাছেই অজানা যে প্রথম আয়কর রিটার্নে ঠিক কী কী দেখাতে হয়? প্রথমবার ভুল আয়কর রিটার্ন জমা দিয়ে বড় জরিমানার শিকার হন অনেক করদাতা।
মনে রাখবেন, এ বছর আপনি ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত আয়–ব্যয়ের বিবরণী দেবেন।
এবার দেখা যাক, প্রথম রিটার্ন দেওয়ার সময় যে পাঁচটি ভুল করা যাবে না।
১. নগদ টাকা
আপনার হাতে যত নগদ টাকা থাকুক না কেন, এর পুরোটাই দেখিয়ে দেবেন। অনেকে মনে করেন, নগদ টাকা বেশি দেখালে ঝামেলায় পড়তে পারেন। কিন্তু এই ভাবনা ঠিক নয়। আপনার আয় যদি বৈধ হয়, তাহলে দেখালে কোনো ভয় নেই। আয়কর ফরমে ‘ক্যাশ ইন হ্যান্ড’ ঘরে নগদ টাকা দেখিয়ে দেবেন।
২. সঞ্চয়পত্র, এফডিআর, ডিপিএস, শেয়ার
এত দিন আপনার কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) ছিল না কিংবা রিটার্নও দেননি। কিন্তু কয়েক বছর ধরে আপনি সঞ্চয়পত্র, ডিপিএস, স্থায়ী আমানত (এফডিআর), শেয়ার ইত্যাদিতে বিনিয়োগ করেছেন। এবার প্রথম রিটার্ন দিতে যাচ্ছেন, তাহলে রিটার্নে অবশ্য এসব সম্পদ দেখাবেন। এগুলো রিটার্ন ফরমে আর্থিক পণ্য খাতে দেখাতে হবে।
৩. জমি–ফ্ল্যাট
আপনার নিজের নামে যদি জমি, ফ্ল্যাটসহ স্থাবর সম্পত্তি থাকে, তাহলে এনবিআরকে জানিয়ে দেবেন। এমনকি উত্তরাধিকার সূত্রে কিংবা উপহার বা দান সূত্রে পেলেও তা রিটার্নে উল্লেখ করে দেবেন। এখানে মনে রাখা দরকার, যদি আপনার সম্পদের পরিমাণ ৫০ লাখ টাকার বেশি হয়, তাহলে রিটার্নে আলাদাভাবে সম্পদের বিবরণী দিতে হবে। সম্পদের বিবরণী দেওয়ার জন্য আইটি ১০বি ফরম ব্যবহার করতে হবে।
৪. গাড়ি
আপনার নামে কোনো গাড়ি, মোটরবাইক অথবা এ ধরনের সম্পদ থাকে, তাহলে তা অবশ্যই আয়কর নথিতে দেখাতে হবে। কারণ, গাড়ির জন্য প্রতিবছর আপনি অগ্রিম আয়কর দেন, যা বছর শেষে রিটার্ন জমা দিয়ে যখন কর দেবেন, তখন তা সমন্বয় করতে পারবেন। গাড়ি দেখিয়ে দেওয়া লাভও বটে।
৫. স্বর্ণালংকার
প্রথমবার রিটার্ন দেওয়ার সময় নারী–পুরুষ করদাতা নির্বিশেষে স্বর্ণালংকারসহ দামি গয়না দেখিয়ে দেবেন। এমনকি উপহার পেলেও তা দেখাবেন। অনেক নারী করদাতার সোনার গয়নার পাশাপাশি ডায়মন্ডসহ দামি পাথরের গয়না থাকে। প্রথমবার রিটার্ন দেওয়ার সময় এসব দামি গয়না দেখাতে ভুলে যাবেন না।
মনে রাখতে হবেআপনি প্রথমবার আয়কর রিটার্নে নগদ টাকার পাশাপাশি যত সম্পদ দেখাবেন, এসব সম্পদ অর্জনের ব্যাখ্যা যেন থাকে। আয়ের উৎসের ব্যাখ্যাও দিতে হবে। এসব সম্পদের সপক্ষে যথাযথ প্রমাণ সংরক্ষণ করবেন।