Prothomalo:
2025-07-29@20:39:55 GMT

কেন ওহি আসা বন্ধ হয়েছিল

Published: 25th, July 2025 GMT

নবীজি (সা.) চল্লিশ বছর বয়সে প্রথম ওহি পান। তিনি মানবজাতির কাছে আল্লাহর বাণী প্রচার ও শিক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব পান এবং এই দায়িত্ব পালনে তিনি নিজের সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করেন।

তবে, এই ওহি গ্রহণের প্রক্রিয়া তাঁর জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যন্ত কঠিন ছিল।

ওহি গ্রহণের শারীরিক ও মানসিক প্রভাব

নবীজি (সা.) যখন ওহি গ্রহণ করতেন, তখন তা তাঁর উপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করত। হাদিসে উল্লেখ আছে যে, ওহি গ্রহণের সময় তাঁর শরীরে ভারী বোঝা অনুভূত হত, যা তাঁকে ক্লান্ত ও দুর্বল করে দিত (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২)।

এই প্রক্রিয়া শুধু শারীরিকভাবে নয়, মানসিকভাবেও ছিল কঠিন। একই সঙ্গে, তিনি মক্কার বিরোধীদের থেকে প্রবল প্রত্যাখ্যান ও বিরোধিতার সম্মুখীন হচ্ছিলেন। এই চাপের কারণে তিনি কয়েকদিন অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং এমনকি রাতের তাহাজ্জুদ নামাজের জন্যও উঠতে পারেননি।

ওহির সাময়িক বিরতি

নবীজির (সা.

)-এর অসুস্থতার সময় আল্লাহ তা‘আলা কয়েকদিনের জন্য ওহি প্রেরণ বন্ধ রাখেন, যাতে তিনি স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করতে পারেন। এই সময়ে মক্কার একজন নারী, আবু লাহাবের স্ত্রী, তাঁকে উপহাস করে বলেন, “দেখছি, তোমার ‘শয়তান’ তোমাকে ছেড়ে চলে গেছে!” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪৯৫০)।

নবী (সা.) এই উপহাসে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি, তবে ওহি না আসার কারণে তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তাঁর হৃদয়ে ওহি গ্রহণের জন্য তীব্র আকাঙ্ক্ষা জন্মেছিল।

আরও পড়ুনতিনি ওহি লিখতেন, সংকলন করেছিলেন কোরআন২৭ এপ্রিল ২০২৩সুরা দুহা: নবীজির জন্য সান্ত্বনা

এই সময়ে আল্লাহ তাআলা সুরা দুহা নাজিল করেন, যা নবীজির (সা.)-এর উদ্বেগ দূর করে এবং তাঁকে সান্ত্বনার কারণ হয়। শুরুতে আল্লাহ বলেন: “শপথ সকালের আলোর, এবং শপথ রাতের যখন তা নিস্তব্ধ হয়। তোমার প্রভু তোমাকে পরিত্যাগ করেননি এবং তিনি তোমার প্রতি বিরূপও হননি।” (আয়াত: ১-৩)

এই আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা নবীজি (সা.)-কে আশ্বাস দেন যে তিনি তাঁকে পরিত্যাগ করেননি এবং তাঁর প্রতি অসন্তুষ্টও নন। এই সান্ত্বনামূলক বাণী নবীজির মানসিক চাপ কমায় এবং তাঁকে তাঁর বিরোধীদের কথা উপেক্ষা করতে উৎসাহিত করে।

আখিরাতের শ্রেষ্ঠত্ব ও আল্লাহর প্রতিশ্রুতি

আল্লাহ তাআলা সুরা দুহায় আরও বলেন: “এবং অবশ্যই তোমার জন্য আখিরাত এই দুনিয়ার চেয়ে অনেক উত্তম। এবং শীঘ্রই তোমার প্রভু তোমাকে এত বেশি দেবেন যে তুমি সন্তুষ্ট হবে।” (আয়াত: ৪-৫)

এই আয়াতে আল্লাহ নবীজিকে আশ্বাস দেন যে আখিরাত তাঁর জন্য এই পৃথিবীর জীবনের চেয়ে অনেক উত্তম হবে। হাদিসে উল্লেখ আছে যে, আল্লাহ তাঁকে প্রতিশ্রুতি দেন যে তাঁর উম্মত ক্ষমা প্রাপ্ত হবে, তারা জান্নাতে প্রথম প্রবেশ করবে এবং তাদের নেক আমল বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৯৬)।

এই বাণী নবী (সা.)-এর হৃদয়ে অপার আনন্দ নিয়ে আসে।

আরও পড়ুনকথার শেষে কেন ‘ইনশাআল্লাহ’ বলতে হয়০৭ এপ্রিল ২০২৫আল্লাহর প্রতি নবীজির নির্ভরতা

ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত একটি ঘটনায় আছে, একবার নবীজি (সা.) মাটিতে শুয়েছিলেন এবং ওঠার সময় দেখা যায় তাঁর শরীরে দাগ পড়ে গেছে। ইবনে মাসউদ তাঁকে নরম কিছু বিছিয়ে দেওয়ার অনুমতি চাইলে নবীজি (সা.) বলেন: “আমার এবং দুনিয়ার সম্পর্ক কী? আমার সম্পর্ক দুনিয়ার সঙ্গে এমন একজন পথিকের মতো, যে একটি গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিয়েছে এবং তারপর উঠে চলে গেছে।” (সুনান তিরমিজি, হাদিস: ২৩৭৭)

এতে বোঝা যায়, দুনিয়ার প্রতি তিনি ছিলেন উদাসীন, তার সকল আগ্রহ ছিল আল্লাহর প্রতি। তিনি দুনিয়ার আরামের প্রতি আকর্ষণ বোধ করেননি, বরং তাঁর লক্ষ্য ছিল আল্লাহর সন্তুষ্টি ও আখিরাতের কল্যাণ।

সূত্র: অ্যবাউট ইসলাম ডট নেট

আরও পড়ুনমুসা (আ.)-এর জীবনের ঘটনা১০ জুন ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আল ল হ ত গ রহণ র র জন য নব জ র

এছাড়াও পড়ুন:

লাইলীকে বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চান আনোয়ার

বরগুনার বিষখালী নদীর পাড়ে বেড়ে উঠেছেন লাইলী বেগম। বাবার মৃত্যুর পর ভাইয়েরা অসুস্থ মায়ের দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানান, তখন কন্যা হয়েও লাইলী সেই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। অভাব, ক্ষুধা আর সমাজের অবহেলা তার নিত্যসঙ্গী হয়। তারপরও থেমে যাননি লাইলী।  

জীবনের চাকা ঘুরাতে, মাছ ধরা থেকে বর্গাচাষ—সবই করেছেন লাইলী। গত ২১ বছর ধরে নদী ও সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বরগুনা জেলার সরকারিভাবে নিবন্ধিত একমাত্র নারী জেলে তিনি। এই লাইলীকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে প্রামাণ্যচিত্র ‘উত্তরের বৈঠা’। এটি নির্মাণ করেছেন আনোয়ার হোসেন।

পরিচালক আনোয়ার হোসেন

আরো পড়ুন:

জসীমের কবরে রাতুলকে সমাহিত করে দুই ভাইয়ের আবেগঘন পোস্ট

নীনার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবরে কী বলেছিলেন ক্রিকেটার ভিভ?

এ নিয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেন পরিচালক আনোয়ার হোসেন। তরুণ এই নির্মাতা বলেন, “এই চলচ্চিত্র শুধু একজন নারী জেলের গল্প নয়, এটি একজন মানুষের বেঁচে থাকার অদম্য চেষ্টা, একাকিত্বে গড়ে ওঠা সাহসিকতার প্রতিচ্ছবি। লাইলী বেগম যখন নদীতে জাল ছুঁড়ে দেন, সেই মুহূর্তে তিনি শুধু মাছ খোঁজেন না—তিনি খুঁজে ফেরেন নিজের অবস্থান, নিজের সম্মান, আর অস্তিত্বের উত্তর।” 

লাইলীর চোখ দিয়ে বাস্তবতা দেখাতে চেয়েছেন নির্মাতা। তার ভাষায়, “এই ফিল্মে আমি কোনো কৃত্রিম কণ্ঠ বা নাটকীয় ভাষা ব্যবহার করিনি। কারণ আমি চেয়েছি দর্শক যেন লাইলীর চোখ দিয়েই এই বাস্তবতা দেখেন। তার নীরবতা, তার কথাবার্তা, তার দৃষ্টি—সবই যেন একেকটি দৃশ্যপট হয়ে ওঠে। একজন নির্মাতা হিসেবে আমার দায়িত্ব ছিল শুধু একটি ফ্রেম তৈরি করে দেওয়া, বাকিটা বলে গেছেন লাইলী নিজেই—তার জীবনযাত্রা, নদী এবং অব্যক্ত যন্ত্রণা দিয়ে।” 

‘লাইলী’-কে বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চান পরিচালক। তা জানিয়ে আনোয়ার হোসেন বলেন, “এই ফিল্মটি তাদের জন্য, যারা নিঃশব্দে লড়াই করেন এবং যারা কখনো আলোয় আসেন না। এখানে আমি সংক্ষিপ্ত আকারে প্রামাণ্য চিত্রটি তৈরি করেছি, পূর্ণদৈর্ঘ্য আকারে তৈরি করার প্রস্তুতি চলছে। আপনাদের সহযোগিতা ও আগ্রহ আমাকে অনুপ্রাণিত করবে। এই জীবন সংগ্রামের কথা বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চাই।” 

সমাজের বাঁকা চোখ উপেক্ষা করে লাইলী প্রমাণ করেছেন, নারীর স্থান কেবল ঘরে নয়, সাহস আর সংগ্রামেও। লাইলী কেবল একজন নারী জেলে নন, এক অনুপ্রেরণার নাম। নারী চাইলে সব পারে—লাইলী তা নিঃশব্দে প্রমাণ করেছেন বলেও মনে করেন নির্মাতা।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘নতুন একটি দলের কয়েকজন মহারথী’ বলার পর বক্তব্য বদলালেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে একজনের মৃত্যু
  • ভাসানীরা না থাকলে শেখ মুজিব কখনো তৈরি হতেন না: নাহিদ
  • কাভার্ড ভ্যানের পেছনে ধাক্কা দিয়ে দুমড়েমুচড়ে গেল যাত্রীবাহী বাস
  • নিউ ইয়র্কে নিহত বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তা সম্পর্কে যা জানা গেলো
  • পাঁচ দ্বীপে বাড়ি কিনলেই পাবেন পাসপোর্ট, দেড় শতাধিক দেশে ভিসামুক্ত প্রবেশ সুবিধা
  • মানুষকে জড়িয়ে ধরল হস্তীশাবক
  • ‘একজন শিল্পীকে ভীষণভাবে অসম্মানিত করা হচ্ছে’
  • ‘শফিউল বারী বাবু ছিলেন আন্দোলনের প্রেরণা’ 
  • লাইলীকে বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চান আনোয়ার