নবীজি (সা.) চল্লিশ বছর বয়সে প্রথম ওহি পান। তিনি মানবজাতির কাছে আল্লাহর বাণী প্রচার ও শিক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব পান এবং এই দায়িত্ব পালনে তিনি নিজের সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করেন।
তবে, এই ওহি গ্রহণের প্রক্রিয়া তাঁর জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যন্ত কঠিন ছিল।
ওহি গ্রহণের শারীরিক ও মানসিক প্রভাবনবীজি (সা.) যখন ওহি গ্রহণ করতেন, তখন তা তাঁর উপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করত। হাদিসে উল্লেখ আছে যে, ওহি গ্রহণের সময় তাঁর শরীরে ভারী বোঝা অনুভূত হত, যা তাঁকে ক্লান্ত ও দুর্বল করে দিত (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২)।
এই প্রক্রিয়া শুধু শারীরিকভাবে নয়, মানসিকভাবেও ছিল কঠিন। একই সঙ্গে, তিনি মক্কার বিরোধীদের থেকে প্রবল প্রত্যাখ্যান ও বিরোধিতার সম্মুখীন হচ্ছিলেন। এই চাপের কারণে তিনি কয়েকদিন অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং এমনকি রাতের তাহাজ্জুদ নামাজের জন্যও উঠতে পারেননি।
ওহির সাময়িক বিরতিনবীজির (সা.
নবী (সা.) এই উপহাসে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি, তবে ওহি না আসার কারণে তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তাঁর হৃদয়ে ওহি গ্রহণের জন্য তীব্র আকাঙ্ক্ষা জন্মেছিল।
আরও পড়ুনতিনি ওহি লিখতেন, সংকলন করেছিলেন কোরআন২৭ এপ্রিল ২০২৩সুরা দুহা: নবীজির জন্য সান্ত্বনাএই সময়ে আল্লাহ তাআলা সুরা দুহা নাজিল করেন, যা নবীজির (সা.)-এর উদ্বেগ দূর করে এবং তাঁকে সান্ত্বনার কারণ হয়। শুরুতে আল্লাহ বলেন: “শপথ সকালের আলোর, এবং শপথ রাতের যখন তা নিস্তব্ধ হয়। তোমার প্রভু তোমাকে পরিত্যাগ করেননি এবং তিনি তোমার প্রতি বিরূপও হননি।” (আয়াত: ১-৩)
এই আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা নবীজি (সা.)-কে আশ্বাস দেন যে তিনি তাঁকে পরিত্যাগ করেননি এবং তাঁর প্রতি অসন্তুষ্টও নন। এই সান্ত্বনামূলক বাণী নবীজির মানসিক চাপ কমায় এবং তাঁকে তাঁর বিরোধীদের কথা উপেক্ষা করতে উৎসাহিত করে।
আখিরাতের শ্রেষ্ঠত্ব ও আল্লাহর প্রতিশ্রুতিআল্লাহ তাআলা সুরা দুহায় আরও বলেন: “এবং অবশ্যই তোমার জন্য আখিরাত এই দুনিয়ার চেয়ে অনেক উত্তম। এবং শীঘ্রই তোমার প্রভু তোমাকে এত বেশি দেবেন যে তুমি সন্তুষ্ট হবে।” (আয়াত: ৪-৫)
এই আয়াতে আল্লাহ নবীজিকে আশ্বাস দেন যে আখিরাত তাঁর জন্য এই পৃথিবীর জীবনের চেয়ে অনেক উত্তম হবে। হাদিসে উল্লেখ আছে যে, আল্লাহ তাঁকে প্রতিশ্রুতি দেন যে তাঁর উম্মত ক্ষমা প্রাপ্ত হবে, তারা জান্নাতে প্রথম প্রবেশ করবে এবং তাদের নেক আমল বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৯৬)।
এই বাণী নবী (সা.)-এর হৃদয়ে অপার আনন্দ নিয়ে আসে।
আরও পড়ুনকথার শেষে কেন ‘ইনশাআল্লাহ’ বলতে হয়০৭ এপ্রিল ২০২৫আল্লাহর প্রতি নবীজির নির্ভরতাইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত একটি ঘটনায় আছে, একবার নবীজি (সা.) মাটিতে শুয়েছিলেন এবং ওঠার সময় দেখা যায় তাঁর শরীরে দাগ পড়ে গেছে। ইবনে মাসউদ তাঁকে নরম কিছু বিছিয়ে দেওয়ার অনুমতি চাইলে নবীজি (সা.) বলেন: “আমার এবং দুনিয়ার সম্পর্ক কী? আমার সম্পর্ক দুনিয়ার সঙ্গে এমন একজন পথিকের মতো, যে একটি গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিয়েছে এবং তারপর উঠে চলে গেছে।” (সুনান তিরমিজি, হাদিস: ২৩৭৭)
এতে বোঝা যায়, দুনিয়ার প্রতি তিনি ছিলেন উদাসীন, তার সকল আগ্রহ ছিল আল্লাহর প্রতি। তিনি দুনিয়ার আরামের প্রতি আকর্ষণ বোধ করেননি, বরং তাঁর লক্ষ্য ছিল আল্লাহর সন্তুষ্টি ও আখিরাতের কল্যাণ।
সূত্র: অ্যবাউট ইসলাম ডট নেট
আরও পড়ুনমুসা (আ.)-এর জীবনের ঘটনা১০ জুন ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আল ল হ ত গ রহণ র র জন য নব জ র
এছাড়াও পড়ুন:
যমুনা ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন
যমুনা ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের সভায় ব্যাংকের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মো. বেলাল হোসেন সর্বসম্মতিক্রমে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি দেশের একজন সফল উদ্যোক্তা। খবর বিজ্ঞপ্তি
যমুনা ব্যাংকের ওয়েবসাইটের তথ্যানুসারে, মো. বেলাল হোসেন ১৯৫৬ সালে নওগাঁ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ব্যবসা-বাণিজ্যের জগতে তাঁর পরিবারের দেশ-বিদেশে সুনাম আছে। পরিবারের মালিকানাধীন বৃহৎ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ছাড়াও আছে নানা ধরনের ক্ষুদ্র ও বৃহৎ খাদ্যশস্য শিল্প। তিনি একজন বিশিষ্ট আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক। বর্তমানে তিনি বেলকন কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড, বিএইচ হাইটেক ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেড, নাদিয়া ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেড ও বিএইচ স্পেশালাইজড কোল্ডস্টোরেজ প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বেলাল হোসেন নওগাঁ, দিনাজপুর ও হিলি অঞ্চলের বিভিন্ন ক্রীড়া ও ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত। ২০০৪ সালে তিনি বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে অতীশ দীপঙ্কর গবেষণা পরিষদের এডিজিপি ফেলো মেম্বারশিপ সম্মাননা লাভ করেন। ২০০৫ সালে এফএনএস বিজনেস অ্যাওয়ার্ডে সেরা কৃষিভিত্তিক শিল্প উদ্যোক্তা হিসেবে স্বীকৃতি পান।
বেলাল হোসেন নওগাঁ রাইস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, নওগাঁ এবং বাংলাদেশ অটো মেজর ও হাসকিং মিল মালিক সমিতি, ঢাকার কার্যনির্বাহী সদস্য।