মাসব্যাপী জাতীয় বৃক্ষমেলা শেষ হচ্ছে আগামীকাল রোববার। গত শুক্রবার মেলা শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে নার্সারির মালিকদের অনুরোধে মেলার মেয়াদ তিন দিন বাড়ানো হয়। এবারের মেলায় গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম চারা বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা। তাঁদের মতে, দেরিতে মেলা শুরু ও কিছু নির্দিষ্ট ক্রেতার অনুপস্থিতির কারণে বিক্রি খানিকটা কমেছে।

বন বিভাগের আয়োজনে প্রতিবছর বর্ষায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের পুরোনো বাণিজ্য মেলার মাঠে বৃক্ষমেলার আয়োজন করা হয়। সাধারণত ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসে মেলা শুরু হয়। তবে এবার ঈদুল আজহার ছুটির কারণে মেলা কিছুটা পিছিয়ে ২৫ জুন থেকে মেলা শুরু হয়। এবার মেলার প্রতিপাদ্য ছিল ‘পরিকল্পিত বনায়ন করি, সবুজ বাংলাদেশ গড়ি’।

বৃক্ষমেলার তথ্যকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত বন বিভাগের সামাজিক বন বিভাগের সমাজবিজ্ঞানী আমিনুল ইসলাম জানালেন, এবারের মেলায় ৯২টি বেসরকারি নার্সারি ও ৬টি সরকারি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত মেলায় বিক্রি হয়েছে ১৪ লাখ ৭৮ হাজার ৬৩২টি চারা। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ১২ কোটি ৭৪  লাখ ৮৬ হাজার ১৪৬ টাকা। গত বছর ২০২৪ সালে এই সময়ে বিক্রি হয়েছিল ৩১ লাখ ৮৫ হাজার ৯৯৩টি চারা, যার মূল্য ছিল ১৬ কোটি ২৮ লাখ টাকার বেশি।

আমিনুল ইসলাম বলেন, এবার দামি গাছের বিক্রি কমেছে। এ ছাড়া রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে কিছু নির্দিষ্ট ক্রেতা শ্রেণি মেলায় আসেনি। মেলাও শুরু হয়েছে কিছুটা দেরিতে। সব মিলিয়ে বিক্রি কিছুটা কম হলেও শেষ পর্যন্ত মোট বিক্রি ১৪ কোটি টাকার কাছাকাছি পৌঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

মেলার স্টলের মালিকদের কাছ থেকে প্রতিদিন লিখিতভাবে বিক্রির পরিমাণ সংগ্রহ করে তথ্যকেন্দ্র বিক্রির হিসাব প্রকাশ করে। অনেক নার্সারি মালিকই জানাচ্ছেন, শুরুতে প্রচার কম হওয়ায় প্রথম সপ্তাহে দর্শনার্থীর সংখ্যা খুবই কম ছিল, যার প্রভাব পড়েছে বিক্রিতে।

একটি স্টলে ফলদ ও বনজ গাছের চারা সাজিয়ে রাখা হয়েছে। ঢাকা, ২৬ জুলাই.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিসিএলে বিদেশি দল, এনসিএলে বিদেশি ক্রিকেটার

দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের মান নিয়ে প্রশ্ন আজকের নয়। জাতীয় ক্রিকেট লিগ, বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ যে মানের হয়, যেভাবে আয়োজন হয় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে হরহামেশা। অতীতে সমালোচনার পর কিছুটা মান বেড়েছে। কিন্তু তারপরও ‘আপ টু মার্ক’ হয়নি।

বিশেষ করে ঘরোয়া ক্রিকেটে দিব‌্যি পারফর্ম করা ক্রিকেটাররা যখন জাতীয় দলে এসে ধুকতে থাকেন তখন তারতম‌্য প্রকটভাবে ফুটে উঠে। এজন‌্য ঘরোয়া ক্রিকেটের মান বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। জাতীয় ক্রিকেট লিগে বিদেশি ক্রিকেটারকে নিয়ে আসতে চায় বিসিবি। এছাড়া বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে যুক্ত করতে চায় বিদেশি দল।

বিসিবির পরিচালক ও টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম‌্যান আকরাম খান রাইজিংবিডিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

তিন সপ্তাহের জন্য আসছেন উড, মনোবিদ স্কট

সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার বেলায়েত হোসেন মারা গেছেন

বিসিএল শুরু থেকে ছিল ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক প্রতিযোগিতা। ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোন, প্রাইম ব‌্যাংক সাউথ জোন, ইসলামী ব‌্যাংক ইষ্ট জোন ও বিসিবি নর্থ জোন নামে চারটি দল শুরুর কয়েক বছর বিসিএলে অংশ নিয়েছে। পেশাদারিত্বের ঘাটতি, পরিকল্পনার অভাব এবং বাণিজ‌্যিকভাবে লাভবান না হওয়ায় তিনটি ফ্রাঞ্চাইজি ধীরে ধীরে সরে যায়। পরবর্তীতে বিসিবি চারটি দলই নিজস্ব খরচে পরিচালনা করে বিসিএল চালু রাখে। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বীতার অভাব বোঝা যায়।

এজন‌্য বিসিবি সামনের আসরে বিদেশ থেকে একটি দল নিয়ে আসতে চায়। শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগও করেছে। বিসিএল যেই সময়ে আয়োজন করতে চাচ্ছে সেই সময়ে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটাররা ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ে ব‌্যস্ত থাকবেন। আফগানিস্তানকে চূড়ান্ত করার পথে হাঁটছে। বিসিবির পুরো খরচেই অতিথি দল প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। বাকি তিনটি দল গঠন করবে বিসিবি।

আকরাম খান বলেছেন, ‘‘আমরা প্রথমবারের মতো বিসিএলে একটি বিদেশি দলকে পেতে যাচ্ছি। হয়তো তারা এ দল হিসেবে আসবে। নয়তো অন‌্য কোনো নামে। এক মাস এই টুর্নামেন্ট চলবে। ফেব্রুয়ারিতে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।’’

এদিকে জাতীয় ক্রিকেট লিগে বিদেশি ক্রিকেটার অন্তর্ভূক্ত করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে কোন প্রক্রিয়ায় তারা যুক্ত হবেন, কিভাবে আসবেন, পারিশ্রমিক কত হতে পারে সেসব নিয়ে এখনও কোনো উপায় খুঁজতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। তবে ভালোমানের বিদেশি খোঁজার প্রক্রিয়া চলছে।

তাদের পারিশ্রমিক চূড়ান্ত করা, পুরো আসরে অ‌্যাভেইলেভেল থাকবেন কিনা সেসব নিয়েও কাজ হচ্ছে। এজন‌্য আগেভাগে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চান না আকরাম।

আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত দুই স্তরে জাতীয় ক্রিকেট লিগের খেলা অনুষ্ঠিত হবে। আট দলে একজন করে বিদেশি ক্রিকেটার রাখার ইচ্ছা বিসিবির। অতীতে বিদেশি ক্রিকেটার জাতীয় ক্রিকেট লিগে অংশ নিয়েছে। ইমরান ফরহাদ, আমির ওয়াসিমরা খেলেছেন দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রথম শ্রেণির এই টুর্মামেন্টে।

মূলত প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি এবং মান বাড়াতে এই উদ‌্যোগ নিতে যাচ্ছে আয়োজকরা। যদিও একজন করে বিদেশি ক্রিকেটার খেলানোর নিয়ম প্লেয়িং কন্ডিশনে সব সময়ই ছিল, ছিল সর্বশেষ মৌসুমেও। বিভাগীয় দলগুলো আগ্রহ না থাকায় বিসিবিও জোর দেয়নি। তবে এবার বিসিবি বিদেশি ক্রিকেটারকে যুক্ত করবে। পাশাপাশি তাদের পারিশ্রমিক ও সুযোগ সুবিধার বিষয়টিও দেখভাল করবে।

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ