ব্রিটিশ বণিকেরা সপ্তদশ শতকের (১৬০১–১৭০০ খ্রিষ্টাব্দ) শুরুতে ভারতের উপকূলে পা রাখেন। তাঁরা এখানে মসলা ও রেশমের সন্ধানে এলেও থেকে যান শতাব্দীর পর শতাব্দী। দেশটিতে তাঁরা এমন এক উত্তরাধিকার রেখে গেছেন, যা ঔপনিবেশিক শাসন–শোষণ অবসানের বহু পরও এই জাতিকে গভীরভাবে প্রভাবিত করছে। আর সেটি হলো ইংরেজি ভাষা।
ভারতে ইংরেজি প্রথমে ছিল বাণিজ্যের হাতিয়ার। পরে হলো আইনের ভাষা। কালের বিবর্তনে এটি একপ্রকার নাগরিক মর্যাদার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। আর এভাবেই শতাব্দীর পর শতাব্দী এ ভাষা ধীরে ধীরে ভারতীয়দের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।
বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সম্ভবত ইংরেজি ভাষার অবস্থানকে ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। দলটি ভারতে এক দশকের বেশি সময় ধরে হিন্দুত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।
গত মাসে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘যাঁরা ইংরেজি ভাষায় কথা বলেন, তাঁরা শিগগিরই লজ্জাবোধ করবেন।’ তাঁর এ মন্তব্য ১৪০ কোটি জনসংখ্যার বহু ভাষী মানুষের দেশটিতে জাতীয় পরিচয় ও সামাজিক উন্নয়ন নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক উসকে দেয়।
ভারতে শুরুতে বাণিজ্যকুঠি ও দপ্তরগুলোর হিসাবের খাতা ও চুক্তিপত্রের ভাষা ছিল ইংরেজি। কিন্তু গুজরাটের বন্দর পেরিয়ে দিল্লির প্রাসাদ পর্যন্ত ব্রিটিশ শাসন বিস্তৃত হওয়ার পর ইংরেজি হয়ে উঠল ঔপনিবেশিক অভিজাত শ্রেণির অভিন্ন ভাষা।যদিও অমিত শাহ সরাসরি ভারতের ঔপনিবেশিক শাসকদের কথা উল্লেখ করেননি। তবে তিনি ঘোষণা দেন, ‘আমাদের দেশের ভাষাগুলো আমাদের সংস্কৃতির রত্ন।’ এসব ভাষা ছাড়া ‘আমরা প্রকৃত ভারতীয় হতে পারি না।’
ভারতে শুরুতে বাণিজ্যকুঠি ও দপ্তরগুলোর হিসাবের খাতা ও চুক্তিপত্রের ভাষা ছিল ইংরেজি। কিন্তু গুজরাটের বন্দর পেরিয়ে দিল্লির প্রাসাদ পর্যন্ত ব্রিটিশ শাসন বিস্তৃত হওয়ার পর ইংরেজি হয়ে উঠল ঔপনিবেশিক অভিজাত শ্রেণির অভিন্ন ভাষা।
স্বাধীনতার সময় ভারত দোটানার মুখে পড়ে। দেশজুড়ে শত শত ভাষা ও উপভাষা প্রচলিত থাকায় নবনির্বাচিত নেতারা এ প্রশ্নে দ্বিধায় পড়েন যে কোন ভাষা নতুন দেশটির প্রতিনিধিত্ব করবে?
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।
দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।
ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।
৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।
ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট