পাকিস্তানের সঙ্গে কাশ্মীর সীমান্তে গোলাগুলির খবর, ভারতীয় সেনাবাহিনীর অস্বীকার
Published: 6th, August 2025 GMT
ভারতের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কাশ্মীরের পুঞ্চ এলাকায় নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর গোলাগুলির খবর প্রচার করা হয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, সীমান্তে গুলি ছুড়ে পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে।
তবে এ খবর অস্বীকার করে ভারতীয় সেনাবাহিনী গতকাল মঙ্গলবার বিবৃতি দিয়েছে। তারা বলেছে, নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এলওসির মাধ্যমে কাশ্মীরকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ভাগ করা হয়েছে।
এই বিবৃতির আগে হিন্দুস্তান টাইমস, পিটিআইসহ ভারতীয় কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে কর্মকর্তাদের বরাতে বলা হয়, ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলার কৃষ্ণাঘাটি সেক্টরে পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের জবাবে পাল্টা হামলা চালায় ভারতীয় সেনাবাহিনী। উভয় পক্ষের মধ্যে অন্তত ১৫ মিনিট ধরে গোলাগুলি চলে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
পরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কয়েকটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুঞ্চ এলাকায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানানো যাচ্ছে যে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর কোনো যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে জানতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স থেকে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল, কিন্তু তারা এ নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
গত এপ্রিলে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে ২৬ ভারতীয় পর্যটককে গুলি করে হত্যার ঘটনার জেরে মে মাসে দুই প্রতিবেশী দেশ সংঘাতে জড়িয়েছিল। চার দিন ধরে চলা সংঘাতে উভয় পক্ষেই বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। পরে যুক্তরাষ্ট্রের ডাকে উভয় পক্ষ একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
আরও পড়ুনভারত-পাকিস্তান সীমান্তে ষষ্ঠ দিনের মতো গোলাগুলি৩০ এপ্রিল ২০২৫আরও পড়ুনকীভাবে ভারত–পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণরেখা বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক সীমান্ত হয়ে উঠল১৯ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু
দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু থামছে না। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অপর দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসের প্রথম ছয় দিনে ডেঙ্গুতে ২৯ জনের মৃত্যু হলো।
আজ বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, গত বুধবার সকাল আটটা থেকে আজ সকাল আটটা পর্যন্ত ১ হাজার ৩৪ জন রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছেন ৩৭১ জন। দুই সিটির বাইরে ঢাকা বিভাগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ১৮৮। ঢাকার বাইরে বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১৩৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। সব মিলিয়ে এবার এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে ৭৬ হাজার ২৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৭২ হাজার ৩৮৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৩০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত মাসে মারা গেছেন ৮০ জন, যা চলতি বছর এখন পর্যন্ত কোনো এক মাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু। গত মাসে ডেঙ্গু নিয়ে সর্বোচ্চ ২২ হাজার ৫২০ জন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গুতে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ১৫ হাজার ৮৬৬ জন।
চলতি বছরের জুনে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। ওই সময় অনেক বিশেষজ্ঞ বলেছিলেন, এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ বড় আকারের হতে পারে। কিন্তু সরকার ডেঙ্গু প্রকোপ কমাতে তেমন কোনো জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। গত জুলাই মাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা জুনের দ্বিগুণ হয়ে যায়। আগস্টে মৃত্যু ও সংক্রমণ সামান্য কমে। কিন্তু সেপ্টেম্বরে তা আবার বেড়ে যায়। সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৫ হাজার ৮৬৬ জন। অক্টোবরে প্রায় সাত হাজার রোগী বেড়েছে।
২০০০ সালে ঢাকায় বড় আকারে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ওই বছর ৫ হাজার ৫৫১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এর মধ্যে মারা যান ৯৩ জন। ঘটনাটি সাধারণ মানুষের কাছে নতুন ছিল। ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত ও মারা যান ২০২৩ সালে। সে বছর আক্রান্ত হয়েছিলেন তিন লাখের বেশি মানুষ। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।