ইউটিউবে ১০১টি ভিডিও প্রকাশ করে কি মেয়র হলেন জোহরান মামদানি
Published: 6th, November 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি চলতি বছরের নির্বাচনে নিউইয়র্ক সিটির ১১১তম মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমো ও রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়াকে পরাজিত করে ইতিহাস গড়েছেন তিনি। এ জয়ের মধ্য দিয়ে জোহরান হলেন শহরটির প্রথম মুসলিম মেয়রও।
নিউইয়র্কের রাজনীতিতে জোহরান মামদানির নির্বাচনী প্রচারণায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভিন্নমাত্রিক উপস্থিতি দেখা যায়। ইউটিউবে জোহরান মামদানি ফর এনওয়াইসি নামের একটি চ্যানেলে ২ লাখ ৩৭ হাজার গ্রাহক দেখা যায়। এখানে ১০১টি ভিডিও প্রকাশ করেছেন তিনি। প্রথাগত প্রচারণার বাইরে গিয়ে মামদানির প্রচারণা ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মনোযোগ আকর্ষণ করে। মামদানি বেশ কার্যকরভাবে টিকটকের মতো মাধ্যমকে অত্যন্ত কার্যকরভাবে ব্যবহার করেছেন।
মামদানির ডিজিটাল প্রচারণার প্রধান দায়িত্বে কাজ করেন ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর অ্যান্ড্রু এপস্টাইন। তিনি জানান, মামদানি প্রচারণার সাফল্যের অন্যতম মূল কারণ ডিজিটাল আউটরিচ ও মাঠ পর্যায়ের প্রচারণার মধ্যে সেতুবন্ধ তৈরি করা। ভোটাররা যখন ফোনের মাধ্যমে মামদানির বিভিন্ন পোস্ট ও ভিডিও দেখতেন তখন নির্বাচনী এজেন্ডার সঙ্গে দ্রুত সম্পর্ক তৈরি হতো। টিভিতে বা পডকাস্টেও মামদানির একই বার্তা শোনা গেছে। টিকটকে তার অনুসারীর সংখ্যা ২৭ লাখের বেশি। বিভিন্ন ভিডিও মিলিয়ে লাইক পেয়েছেন সাড়ে ৩৩ লাখের বেশি। এসব ভিডিও অনেক শেয়ার হতে দেখা যায়। বিভিন্ন ভিডিওতে মামদানি তাঁর দক্ষিণ এশিয়ার পরিচয়, উপমহাদেশের ভাষা ও সংগীত ব্যবহার করেন। বিভিন্ন ভিডিওতে যুক্ত ফন্টে জেন–জিদের মনোযোগ আকর্ষণ করে এমন ফন্ট ব্যবহার করেছেন তিনি। টিকটকের বিভিন্ন ভিডিও বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, ১০ লাখের ওপরে ভিউ হয়েছে এমন ভিডিওর সংখ্যা অনেক। ৫৪টি ভিডিওর ১০ লাখের ওপরে ভিউ রয়েছে।
মামদানি প্রচারণায় অসংখ্য আকর্ষণীয় টিকটক ভিডিও তৈরি করেন। তরুণ ভোটারদের মধ্যে দারুণ সাড়া ফেলে দেয় বিভিন্ন ভিডিও। টিকটকের মতো মাধ্যমে ছোট, সরাসরি ও প্রাসঙ্গিক ভিডিও বার্তা দ্রুত ভাইরাল হয়। এই মাধ্যম ব্যবহার করে মামদানি ঐতিহ্যবাহী প্রচারণার বাইরে গিয়ে সরাসরি ভোটারদের কাছে নিজের তথ্য পৌঁছাতে সক্ষম হন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাধ্যমে প্রথম বা দ্বিতীয় প্রজন্মের অভিবাসী ও ক্যাবচালকদের মতো খেটে খাওয়া মানুষকে আকৃষ্ট করেন মামদানি।
ফেসবুকে মামদানির অনুসারীর সংখ্যা ৭ লাখ ৯৫ হাজারের বেশি। এই পেজ থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন ভিডিওর কোনো কোনোটি ২০ থেকে ৫০ লাখের বেশি ভিউ পেয়েছে। নিজের প্রতিদিনকার প্রচারণাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ফেসবুকে ভিডিও প্রকাশ করেন তিনি। একই সঙ্গে তাঁকে নিয়ে কেউ কোনো ভাইরাল রম্য বা হাস্যকর ভিডিও করলে তা–ও প্রকাশ করেন মামদানি। মামদানি তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রচারণায় জেন–জি প্রজন্মের আগ্রহকে গুরুত্ব দিয়ে ভিডিও ধারণ ও সংগীত ব্যবহার করেন। বিভিন্ন আলাপচারিতার ভিডিও নিজের ফেসবুক ও অন্যান্য পোর্টালে প্রকাশ করেন। বিভিন্ন ভিডিওতে মামদানি শুধু বক্তব্য দেননি, মানুষের বাস্তব অর্থনৈতিক সমস্যা নিয়ে আলাপ করেন। তাঁর প্রচারণায় যুক্ত থাকা বিশেষজ্ঞ এপস্টাইনের মতে, অনলাইনে মামদানির সাফল্যের একটি প্রধান কারণ ছিল তাঁর একটি সুস্পষ্ট অর্থনৈতিক এজেন্ডা। জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর ওপর জোর দেন তিনি।
সূত্র: ফাইন্যানশিয়াল টাইমস
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর ম মদ ন র ফ সব ক ট কটক
এছাড়াও পড়ুন:
মামদানি-মামদানি—বাংলাদেশিদের স্লোগানে মুখর কুইন্স
ইতিহাস গড়া এক ভোটে জিতে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম নগরী নিউইয়র্কের মেয়র হতে যাচ্ছেন জোহরান মামদানি। তাঁর এই বিজয়ে উচ্ছ্বাসে মেতেছে দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশিরা।গতকাল মঙ্গলবার রাতে মামদানির জয়ের খবর আসার সঙ্গে সঙ্গে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে নিউইয়র্কের কুইন্স, উচ্ছ্বাসের মাত্রা এতই বেশি ছিল যে সেই খবর সিএনএনও দিয়েছে। কুইন্সের জ্যামাইকায় অনেক বাংলাদেশিদের বাস, সেখানে রাতেই স্লোগান উঠতে থাকে—‘আমার মেয়র-তোমার মেয়র, মামদানি-মামদানি’, ‘নিউইয়র্কের মেয়র, মামদানি-মামদানি’, ‘শ্রমিক শ্রেণির মেয়র, মামদানি-মামদানি’।