তিন বছর ধরে বন্ধ চট্টগ্রামের ৪৪০ মেগাওয়াট ক্ষমতার তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র আবার চালু হয়ে গত রোববার উৎপাদনে গিয়েছিল। তিন দিনের মাথায় আগুন লেগে আবারও বন্ধ হয়ে গেছে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২ নম্বর ইউনিটের ব্যাটারি কক্ষে বিস্ফোরণের পর আগুন লাগে বলে জানিয়েছে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।

আজ বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে চট্টগ্রামের রাউজানের পাহাড়তলী ও রাঙ্গুনিয়া সীমান্তে অবস্থিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে আগুনের সূত্রপাত হয়। দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় বিকেল পাঁচটার দিকে রাউজান ফায়ার সার্ভিসের একটি দল আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক (সংরক্ষণ) মুজিবুর রহমান আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ব্যাটারি কক্ষে বিস্ফোরণ থেকে বেলা সাড়ে তিনটায় আগুন লাগে। খবর পেয়ে প্রথমে তাঁদের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়। তারা দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর রোববার ওই ইউনিটে তাঁরা ১৮০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করেছিলেন। এর মধ্যে দুর্ঘটনায় আবার বন্ধ হয়ে গেল কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ উৎপাদন।

বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, সম্পূর্ণ গ্যাসচালিত এই তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিটের মধ্যে ২ নম্বর ইউনিট বন্ধ ছিল তিন বছর ধরে। অপর ১ নম্বর ইউনিটও ছয় মাস ধরে বন্ধ।  এত দিন গ্যাস–সংকট ও টারবাইন ব্লেড নষ্ট হওয়ায় এবং সরঞ্জামের সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছিল না। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিটে উৎপাদন সক্ষমতা ২২০ মেগাওয়াট করে ৪৪০ মেগাওয়াট।

চট্টগ্রাম তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মুহাম্মদ আব্দু জাহেদ প্রথম আলোকে বলেন, মূলত গ্যাস–সংকট ও সরঞ্জাম নষ্ট হওয়ার কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির একটি ইউনিট তিন বছর আর অপরটি ছয় মাস ধরে বন্ধ ছিল। গত তিন দিন আগে গ্যাস পাওয়ায় ও মেরামত হওয়ায় ২ নম্বর ইউনিট চালু করা হয়। কিন্তু তিন দিনের মাথায় ব্যাটারি কক্ষে আগুন লাগার ঘটনা ঘটল। এ ঘটনায় অর্ধশতাধিক ব্যাটারি বিস্ফোরণে পুড়ে গেছে। তবে বিস্তারিত ক্ষয়–ক্ষতির হিসাব এখনো জানা যায়নি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আগ ন ল গ ত ন বছর

এছাড়াও পড়ুন:

ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু

দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু থামছে না। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অপর দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসের প্রথম ছয় দিনে ডেঙ্গুতে ২৯ জনের মৃত্যু হলো।

আজ বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, গত বুধবার সকাল আটটা থেকে আজ সকাল আটটা পর্যন্ত ১ হাজার ৩৪ জন রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছেন ৩৭১ জন। দুই সিটির বাইরে ঢাকা বিভাগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ১৮৮। ঢাকার বাইরে বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১৩৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। সব মিলিয়ে এবার এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে ৭৬ হাজার ২৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৭২ হাজার ৩৮৮ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৩০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত মাসে মারা গেছেন ৮০ জন, যা চলতি বছর এখন পর্যন্ত কোনো এক মাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু। গত মাসে ডেঙ্গু নিয়ে সর্বোচ্চ ২২ হাজার ৫২০ জন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গুতে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ১৫ হাজার ৮৬৬ জন।

চলতি বছরের জুনে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। ওই সময় অনেক বিশেষজ্ঞ বলেছিলেন, এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ বড় আকারের হতে পারে। কিন্তু সরকার ডেঙ্গু প্রকোপ কমাতে তেমন কোনো জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। গত জুলাই মাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা জুনের দ্বিগুণ হয়ে যায়। আগস্টে মৃত্যু ও সংক্রমণ সামান্য কমে। কিন্তু সেপ্টেম্বরে তা আবার বেড়ে যায়। সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৫ হাজার ৮৬৬ জন। অক্টোবরে প্রায় সাত হাজার রোগী বেড়েছে।

২০০০ সালে ঢাকায় বড় আকারে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ওই বছর ৫ হাজার ৫৫১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এর মধ্যে মারা যান ৯৩ জন। ঘটনাটি সাধারণ মানুষের কাছে নতুন ছিল। ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত ও মারা যান ২০২৩ সালে। সে বছর আক্রান্ত হয়েছিলেন তিন লাখের বেশি মানুষ। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ