এটা অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, তিস্তা ব্যারাজ লালমনিরহাট জেলায় অবস্থিত হলেও এখানকার এক ইঞ্চি জমি এখনো এই ব্যারাজ থেকে সেচসুবিধা পাচ্ছে না। লালমনিরহাটের কৃষকেরা বাধ্য হয়ে বিদ্যুৎ ও ডিজেলচালিত পাম্প ব্যবহার করে ভূগর্ভস্থ পানি তুলে সেচ দেন, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এতে কৃষকেরা যেমন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমাগত নিচে নেমে গিয়ে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

সেচ মৌসুমে জাতীয় পর্যায়েও বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ওপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। এ জন্য লালমনিরহাট জেলার সম্ভাব্য সব কৃষিজমিতে তিস্তা ব্যারাজ থেকে সরাসরি সেচসুবিধা সম্প্রসারণ জরুরি হয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, সরকার ইতিমধ্যে ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এই মহাপরিকল্পনার আওতায় লালমনিরহাট জেলায় সেচসুবিধা সম্প্রসারণের বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে লালমনিরহাট থেকে বুড়িমারীগামী রেলপথের দুই পাশের ফাঁকা জায়গাকে খালে রূপান্তর করা যেতে পারে। এতে জমি অধিগ্রহণের জটিলতা ও খরচ কমে আসবে এবং সহজেই সেচসুবিধার সম্প্রসারণ সম্ভব হবে।

মো.

দেলোয়ার হোসেন

আহ্বায়ক, লালমনিরহাট জেলা আর্থসামাজিক উন্নয়ন গবেষণা মঞ্চ

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু

দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু থামছে না। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অপর দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসের প্রথম ছয় দিনে ডেঙ্গুতে ২৯ জনের মৃত্যু হলো।

আজ বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, গত বুধবার সকাল আটটা থেকে আজ সকাল আটটা পর্যন্ত ১ হাজার ৩৪ জন রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছেন ৩৭১ জন। দুই সিটির বাইরে ঢাকা বিভাগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ১৮৮। ঢাকার বাইরে বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১৩৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। সব মিলিয়ে এবার এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে ৭৬ হাজার ২৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৭২ হাজার ৩৮৮ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৩০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত মাসে মারা গেছেন ৮০ জন, যা চলতি বছর এখন পর্যন্ত কোনো এক মাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু। গত মাসে ডেঙ্গু নিয়ে সর্বোচ্চ ২২ হাজার ৫২০ জন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গুতে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ১৫ হাজার ৮৬৬ জন।

চলতি বছরের জুনে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। ওই সময় অনেক বিশেষজ্ঞ বলেছিলেন, এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ বড় আকারের হতে পারে। কিন্তু সরকার ডেঙ্গু প্রকোপ কমাতে তেমন কোনো জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। গত জুলাই মাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা জুনের দ্বিগুণ হয়ে যায়। আগস্টে মৃত্যু ও সংক্রমণ সামান্য কমে। কিন্তু সেপ্টেম্বরে তা আবার বেড়ে যায়। সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৫ হাজার ৮৬৬ জন। অক্টোবরে প্রায় সাত হাজার রোগী বেড়েছে।

২০০০ সালে ঢাকায় বড় আকারে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ওই বছর ৫ হাজার ৫৫১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এর মধ্যে মারা যান ৯৩ জন। ঘটনাটি সাধারণ মানুষের কাছে নতুন ছিল। ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত ও মারা যান ২০২৩ সালে। সে বছর আক্রান্ত হয়েছিলেন তিন লাখের বেশি মানুষ। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ