সিলেটে ফুটসাল টুর্নামেন্টে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, আটক ১
Published: 7th, August 2025 GMT
সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীদের আয়োজিত ‘জুলাই স্মৃতি ফুটসাল টুর্নামেন্ট’–এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে কলেজের ১১ শিক্ষার্থীসহ অন্তত ১৫-১৬ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট নগরের বালুচর নয়াবাজার এলাকার কিংস ফুটসাল মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আহত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে টুর্নামেন্ট চলাকালীন মাঠে হামলা চালান। তাঁদের দাবি, স্থানীয় ছাত্রলীগকর্মী মামুনের নেতৃত্বেই পরিকল্পিত এ হামলা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, হামলাকারীদের মধ্যে একজনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটক ব্যক্তি শিক্ষার্থীদের কাছে স্বীকার করেছেন, ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের নির্দেশেই তিনি হামলায় অংশ নিয়েছিলেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা রাতেই ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে তাঁরা স্লোগান দেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মরণে টুর্নামেন্টটি আয়োজন করে, যা শুরু হয় গত মঙ্গলবার থেকে। বালুচরের একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন মাঠে খেলা চলাকালে গতকাল সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তা মারামারিতে রূপ নেয়। আহতদের মধ্যে ১১ শিক্ষার্থী ও একজন স্থানীয় বাসিন্দা সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, হামলার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। খেলার মাঠ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রলীগ জড়িত থাকার অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু
দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু থামছে না। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অপর দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসের প্রথম ছয় দিনে ডেঙ্গুতে ২৯ জনের মৃত্যু হলো।
আজ বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, গত বুধবার সকাল আটটা থেকে আজ সকাল আটটা পর্যন্ত ১ হাজার ৩৪ জন রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছেন ৩৭১ জন। দুই সিটির বাইরে ঢাকা বিভাগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ১৮৮। ঢাকার বাইরে বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১৩৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। সব মিলিয়ে এবার এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে ৭৬ হাজার ২৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৭২ হাজার ৩৮৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৩০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত মাসে মারা গেছেন ৮০ জন, যা চলতি বছর এখন পর্যন্ত কোনো এক মাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু। গত মাসে ডেঙ্গু নিয়ে সর্বোচ্চ ২২ হাজার ৫২০ জন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গুতে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ১৫ হাজার ৮৬৬ জন।
চলতি বছরের জুনে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। ওই সময় অনেক বিশেষজ্ঞ বলেছিলেন, এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ বড় আকারের হতে পারে। কিন্তু সরকার ডেঙ্গু প্রকোপ কমাতে তেমন কোনো জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। গত জুলাই মাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা জুনের দ্বিগুণ হয়ে যায়। আগস্টে মৃত্যু ও সংক্রমণ সামান্য কমে। কিন্তু সেপ্টেম্বরে তা আবার বেড়ে যায়। সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৫ হাজার ৮৬৬ জন। অক্টোবরে প্রায় সাত হাজার রোগী বেড়েছে।
২০০০ সালে ঢাকায় বড় আকারে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ওই বছর ৫ হাজার ৫৫১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এর মধ্যে মারা যান ৯৩ জন। ঘটনাটি সাধারণ মানুষের কাছে নতুন ছিল। ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত ও মারা যান ২০২৩ সালে। সে বছর আক্রান্ত হয়েছিলেন তিন লাখের বেশি মানুষ। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।