স্ত্রীকে পিটিয়ে-শ্বাসরোধে হত্যা, ঘাতকের বাড়িতে জনতার আগুন
Published: 7th, August 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরে স্ত্রীকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক মাদকাসক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে। হত্যার পর মৃতদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যান অভিযুক্ত। পরে এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ জনতা তার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সকালে উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বরমী মধ্যপাড়া গ্রামে এ চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূ সুইটি আক্তার (২০) ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার নিগুয়ারী ইউনিয়নের চাকুয়া গ্রামের মৃত আফসারুল ইসলামের মেয়ে।
প্রায় দেড় বছর আগে তার বিয়ে হয় মো.
স্থানীয়রা জানান, মাদকাসক্ত নূরুল ইসলাম প্রায়ই স্ত্রী সুইটির ওপর অমানবিক নির্যাতন চালাতেন। ঘটনার দিনও বর্বরভাবে ইট দিয়ে আঘাত করে এবং গলা টিপে ধরে সুইটিকে। সুইটির মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দেন।
নিহত সুইটির মামা জসিম শেখ শ্রীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা অভিযুক্তের দুটি বসতবাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়।
মাওনা ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যার হাউস ইন্সপেক্টর মো. হুমায়ুন কবির জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ততক্ষণে ছয়টি কক্ষ সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুস ছামাদ বলেন, “একটি নিরপরাধ মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তার ওপর দীর্ঘদিন ধরে চালানো হচ্ছিল অমানবিক নির্যাতন। এ হত্যাকাণ্ডের জন্য শুধু ঘাতক স্বামী নয়, তার পরিবারও সমানভাবে দায়ী।”
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, “হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত নূরুল ইসলামকে গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।”
ঢাকা/রফিক/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু
দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু থামছে না। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অপর দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসের প্রথম ছয় দিনে ডেঙ্গুতে ২৯ জনের মৃত্যু হলো।
আজ বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, গত বুধবার সকাল আটটা থেকে আজ সকাল আটটা পর্যন্ত ১ হাজার ৩৪ জন রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছেন ৩৭১ জন। দুই সিটির বাইরে ঢাকা বিভাগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ১৮৮। ঢাকার বাইরে বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১৩৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। সব মিলিয়ে এবার এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে ৭৬ হাজার ২৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৭২ হাজার ৩৮৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৩০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত মাসে মারা গেছেন ৮০ জন, যা চলতি বছর এখন পর্যন্ত কোনো এক মাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু। গত মাসে ডেঙ্গু নিয়ে সর্বোচ্চ ২২ হাজার ৫২০ জন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গুতে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ১৫ হাজার ৮৬৬ জন।
চলতি বছরের জুনে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। ওই সময় অনেক বিশেষজ্ঞ বলেছিলেন, এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ বড় আকারের হতে পারে। কিন্তু সরকার ডেঙ্গু প্রকোপ কমাতে তেমন কোনো জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। গত জুলাই মাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা জুনের দ্বিগুণ হয়ে যায়। আগস্টে মৃত্যু ও সংক্রমণ সামান্য কমে। কিন্তু সেপ্টেম্বরে তা আবার বেড়ে যায়। সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৫ হাজার ৮৬৬ জন। অক্টোবরে প্রায় সাত হাজার রোগী বেড়েছে।
২০০০ সালে ঢাকায় বড় আকারে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ওই বছর ৫ হাজার ৫৫১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এর মধ্যে মারা যান ৯৩ জন। ঘটনাটি সাধারণ মানুষের কাছে নতুন ছিল। ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত ও মারা যান ২০২৩ সালে। সে বছর আক্রান্ত হয়েছিলেন তিন লাখের বেশি মানুষ। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।