শেখ হাসিনা একদিন বিচারের মুখোমুখি হবেন: প্রেস সচিব
Published: 7th, August 2025 GMT
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিন না একদিন দেশে ফিরে আসবেন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলার বিচারের মুখোমুখি হবেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানো নিয়ে কোনো উদ্যোগ নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, “এ বিষয়ে আমাদের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কথা বলেছেন। আমাদের সব চেষ্টাগুলোর মধ্যে একটা হচ্ছে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করা। আমরা চাই তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো আছে সেটার ন্যায়বিচার তিনি যাতে পান। আমরা সেটা চাই। এটাই বর্তমান সরকারের অন্যতম সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।”
তিনি বলেন, “আল-জাজিরার প্রতিবেদনে এসেছে এবং বিবিসি যে প্রতিবেদন করেছে সেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে ওনার রোলটা কি ছিলো। কিভাবে মরণাস্ত্র ব্যবহার করতে আন্দোলনকারীদের খুন করার জন্য তিনি অর্ডার করছেন। এই বিষয়গুলো এখন সারা বিশ্ব জানে তিনি কি করেছেন।”
প্রেস সচিব বলেন, “আমরা মনে করি এসব বিষয় যত সামনে আসবে, তার ওপর তত বেশি চাপ তৈরি হবে। যাতে তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়। আমরা আশা করি, একদিন না একদিন তিনি ফিরে আসবেন এবং এই বিচারের সম্মুখীন হবেন।”
৮ আগস্ট সরকারের এক বছর হচ্ছে। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতি, প্রশাসন ভেঙে পড়া, মোটাদাগে বড় বড় জায়গায় সরকারের একটু ব্যর্থতা দৃশ্যমান, যেটা মানুষ বলছে, গণমাধ্যমেও আসছে-এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রেস সচিব বলেন, “এ বিষয়ে আমি একমত নই। আমরা কিছুদিন আগে গত সাড়ে পাঁচ বছরের অপরাধের পুরো পরিসংখ্যান দিয়েছি। ওই পরিসংখ্যান কিন্তু প্রমাণ করে না আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি একটা-দুইটা খুব সেনসেশনাল মার্ডার হলে অনেকে ভাবছেন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বুঝি ভেঙে পড়ছে।”
তিনি বলেন, “আমরা পুলিশ হেড কোয়ার্টারকে বলে দিয়েছি পুরো স্বচ্ছ থাকতে। তারা প্রতি মাসের পরিসংখ্যান দিচ্ছে। জুলাই মাসের পরিসংখ্যানটা তাদের কাছ থেকে নেন। নিজেরাই তুলনা করেন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিটা কি!”
প্রেস সচিব বলেন, “আমরা যখন বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা বলি তারা বলেন- তারা যে পরিসংখ্যানটা দেখেন তারা মনে করেন বাংলাদেশ একটা স্বল্প অপরাধ প্রবণ দেশ। আপনারা যেটা বলছেন সেটা অনেকটা টকশোতে যারা এই ধরনের কথা বলেন সেটাই প্রতিফলন হচ্ছে।”
শফিকুল আলম বলেন, “প্রশাসন ভেঙে পড়লে আমাদের এত অর্জন হতো? গত বছর শেখ হাসিনা যখন পালিয়ে যান তখন খাদ্যের মজুদ ছিল ১৮ লাখ টন। এখন আমাদের মজুত ২১ লাখ টন। আমরা গত এক বছরে চার বিলিয়ন ডলার বকেয়া পরিশোধ করেছি। এক বছরে আমরা মূল্যস্ফীতি নামিয়ে এনেছি। আমরা ব্যাংকিং খাতকে স্থিতিশীল করেছি। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে। এই কাজগুলো কারা করেন? আমলারাই তো করেন। এসব অর্জন কি প্রশাসন ভেঙে পড়ার কারণে হয়? এই প্রশাসন দিয়ে তো এই অর্জন হয়েছে। পরিসংখ্যান নিয়ে সাক্ষ্য-প্রমাণ নিয়ে আপনি দেখান কোথায় কোথায় ভেঙে পড়েছে। গত বছর আমরা ছয় ছয়টি বন্যা মোকাবিলা করেছি, মাঠ প্রশাসন এ বন্যার মোকাবিলা করেছে।”
তিনি বলেন, “অনেকে বলেছেন এই দুর্বল সরকারের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে আলোচনা করা সম্ভব নয়। আমাদের যে টিম, আজকে সবাই তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছেন।”
পুলিশ যথেষ্ট সক্রিয় হয়েছে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, “খুনের হিসাবের মধ্যেই সেটার প্রতিফলন রয়েছে। আর অন্তর্বর্তী সরকার হওয়ায় সশস্ত্র বাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।”
ঢাকা/এএএম/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর স খ য ন সরক র র উপদ ষ ট আম দ র একদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন সম্ভব, কারণ জনগণ এটি চায়: ফখরুল
রাজনৈতিক সংকট সমাধানে তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, “জনগণই এখন নির্বাচন চায় এবং তারাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সবচেয়ে বড় প্রহরীর ভূমিকা পালন করবে।”
বুধবার (৬ আগস্ট) সকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, “১৯৯১ সালে একটি ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের পরে নির্বাচন হয়েছিলো। তখন তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন হয়েছে। এখন এই নির্বাচন আরো সম্ভব, কারণ জনগণ এটি চায়।”
দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নির্বাচন সম্ভব কি না, সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “জনগণই আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সবচেয়ে বড় প্রহরী হয়ে দাঁড়াবে।”
তিনি বলেন, “আমরা ও পুরো জাতি মনে করে, দ্রুত নির্বাচনই একমাত্র পথ, যা দিয়ে আমরা বর্তমানে রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণ করে গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটাতে পারি।”
তিনি আরো বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনূস এখন পর্যন্ত যতগুলো কাজ করেছেন, তাতে তিনি প্রমাণ করেছেন, নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অবাধ করার জন্য উনি এমন কিছু করবেন না, যাতে করে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
সংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “গতকালের ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে পরবর্তী নির্বাচিত সংসদ সংবিধানের যাবতীয় সংস্কার-সংশোধনী বাস্তবায়ন করবে। এটিই বৈধ, আইনি ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়া।”
ঢাকা/কেএন/ইভা