ঢাকা থেকে উত্তরার আবদুল্লাহপুর পার হলেই টঙ্গী। গাজীপুর মহানগরীর সীমানা এখান থেকেই শুরু। ছিনতাই, খুনসহ নানা আপরাধের শুরুটাও যেন এখান থেকেই। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ধরে দুই কিলোমিটার এগিয়ে গেলেই স্টেশন রোড এলাকা। থানার পাশে হলেও এখানে বেপরোয়া আপরাধীরা। সেখান থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে চান্দনা চৌরাস্তা এখন অপরাধের রাজত্ব। পাশাপাশি টঙ্গী উড়ালসড়ক, জয়দেবপুর ও কোনাবাড়ী এলাকাও এখন অপরাধীদের বিচরণ ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

মহানগর পুলিশের তথ্যমতে, টঙ্গী স্টেশন রোড, টঙ্গী উড়ালসড়ক, চান্দনা চৌরাস্তা, জয়দেবপুর ও কোনাবাড়ী— এই পাঁচ এলাকায় সবচেয়ে বেশি চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও হত্যার মতো ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। এসব এলাকায় টহল পুলিশের সংখ্যা ও নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। তারপরও বন্ধ করা যাচ্ছে না এসব ছোট–বড় অপরাধ। গত ৫ আগস্টের পর এই অপরাধপ্রবণতা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধির পেছনে বেশ কয়েকটি কারণের কথা বলছে পুলিশ। মহানগর পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান বলেন, গাজীপুরে ৫ আগস্টের পর অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। কর্মসংস্থান বন্ধ হয়ে গেলে ক্রাইম বেড়ে যায়। এটা জননিরাপত্তার জন্য হুমকি। আগের রেজিম (সরকার) এই জেলায় শক্তিশালী। সেই দলটি গাজীপুরকে অস্থিতিশীল করছে। সেটিও নজরদারি করা হচ্ছে। এই নজরদারি করতে গিয়ে অন্যান্য অপরাধ মনোযোগ নষ্ট করছে।

মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মহানগরীর ৮টি থানায় গত ৭ মাসে ৪৩টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি খুনের মামলা হয়েছে মহানগরের সদর থানায়। ৭ মাসে এ থানায় ১১টি হত্যা মামলা হয়েছে। ২০২৪ সালের ১২ মাসে সদর থানায় হত্যা মামলা হয়েছিল ৮টি। গত বছর নগরের আট থানায় মোট হত্যা মামলা হয়েছিল ৪৮টি।

গাজীপুর নগরের চান্দনা চৌরাস্তার মসজিদ মার্কেট এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এল ক য় নগর র অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

অধ্যাপক ইউনূসের মামলা দ্রুত প্রত্যাহার হয়েছে, সবচেয়ে কম হয়েছে শ্রমিকদের: আনু মুহাম্মদ

বিগত সরকারের আমলে হওয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতাসীনদের বিষয়ে গুরুত্ব দিলেও শ্রমিকদের মামলার কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

আনু মুহাম্মদ বলেছেন, ‘শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ২০ হাজারের বেশি মামলা আছে। সেটার ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি হয়নি। কিন্তু যাঁরা ক্ষমতাবান, তাঁদের ব্যাপারে অগ্রগতি হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের মামলা খুব দ্রুত প্রত্যাহার হয়েছে, সমাধান হয়েছে। এ রকম যাঁরা ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত আছেন, তাঁদেরটাও হয়েছে। কিন্তু সবচেয়ে কম হয়েছে শ্রমিকদের বিষয়ে।’

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর বিজয়নগরে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর: দায়িত্ব ও ভূমিকা পর্যালোচনা’ শীর্ষক এক সভায় আনু মুহাম্মদ এ কথাগুলো বলেন। অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। এতে সভাপতিত্ব করেন আনু মুহাম্মদ।

সভায় গুম, ক্রসফায়ার ও বিচারহীনতার প্রসঙ্গে আনু মুহাম্মদ বলেন, গুম প্রতিরোধ কমিশন হলেও ক্রসফায়ার নিয়ে কোনো তদন্ত বা কমিশন হয়নি। এ ছাড়া মব সন্ত্রাস, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, ধর্মীয় ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা ভাঙচুরের ঘটনায়ও সন্তোষজনক অগ্রগতি নেই। কোনো কোনো সরকারি উপদেষ্টা এগুলোকে যৌক্তিকতা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেকে এটাকে প্রেশার গ্রুপ বলেছেন। এটা তো কাণ্ডজ্ঞানের বিষয় যে মব সন্ত্রাস এবং প্রেশার গ্রুপ এক কথা নয়।

সভায় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং নজরদারি কার্যক্রমে পরিবর্তন আনার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে আনু মুহাম্মদ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যে নজরদারি প্রযুক্তি ইসরায়েলের কাছ থেকে কেনা হয়েছিল, সেই নজরদারি ব্যবস্থায় সংস্কারের কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।

সভায় ৭৪-এর বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিলের দাবি জানান আনু মুহাম্মদ। অর্থনৈতিক খাত সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার পরিবর্তনের পর কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে—রিজার্ভ ও রেমিট্যান্সে উন্নতি হয়েছে, ব্যাংকিং খাতে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে খেলাপি ঋণ উদ্ধার বা পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।

সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের ভূমিকা পর্যালোচনা করেন লেখক ও গবেষক কল্লোল মোস্তফা। জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার, মামলা–বাণিজ্য, রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনীতির গতি নিয়ে পর্যালোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অর্থনীতির গতি মন্থর হয়েছে। জনপ্রশাসন সংস্কারের বেশির ভাগ সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়নি। আমলাতন্ত্র জনবান্ধব হয়নি বরং সরকার আমলাতন্ত্রবান্ধব হয়েছে।

সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা, চলচ্চিত্র নির্মাতা আকরাম খান, স্থপতি ফারহানা শারমিন ইমু প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাকিস্তানের অন্তত পাঁচ যুদ্ধবিমান ধ্বংসের দাবি ভারতের
  • অধ্যাপক ইউনূসের মামলা দ্রুত প্রত্যাহার হয়েছে, সবচেয়ে কম হয়েছে শ্রমিকদের: আনু মুহাম্মদ
  • বনানীতে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুজন নিহত