মহানবী (সা.)-এর জীবনে নারীদের অবদান
Published: 12th, August 2025 GMT
ইসলামের প্রথম যুগে নারীরা নবীজি (সা.)-এর জীবনে এবং ইসলাম প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। শায়খ হুসাইন আল-খেচিন তাঁর আল-মার’আহ ফি আন-নাস্স আল-দীনী: কিরাআহ নাকদিয়্যাহ ফি রিওয়ায়াত জাম্ম আল-মার’আহ গ্রন্থে নারীদের বৈচিত্র্যময় ভূমিকার ওপর আলোকপাত করেছেন।
তিনি দেখিয়েছেন যে, নারীদের সম্পর্কে নিন্দাসূচক বর্ণনাগুলো হয় ভিত্তিহীন, নয়তো প্রেক্ষাপটের আলোকে বোঝা প্রয়োজন। আমরা তাঁর গ্রন্থের ভিত্তিতে রাসুল (সা.
ইসলামের প্রথম যুগে জাহিলি যুগের নারীবিদ্বেষী মানসিকতা সত্ত্বেও মুসলিম নারীরা ইসলামি সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাঁরা জ্ঞানচর্চা, হিজরত, যুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং নৈতিকতা প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ছিলেন। নিচে তাঁদের ভূমিকার বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হলো:
ক. আলেমা ও হাদিস বর্ণনাকারী নারী
জাহিলি যুগে নারীরা শিক্ষা ও জ্ঞানচর্চা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। ইসলাম তাঁদের জ্ঞানের আলোয় উদ্দীপ্ত করেছিল। অনেক নারী রাসুলের কাছ থেকে জ্ঞান অর্জন করতেন, তাঁর বাণী মুখস্থ করতেন এবং পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তা পৌঁছে দিতেন। ফাতিমা, উম্মে সালামা ও আয়েশা (রা.) ছিলেন বিশিষ্ট পণ্ডিত ও হাদিস বর্ণনাকারী। উম্মে সালামাকে ‘সাহাবীদের মধ্যে ফকিহা’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। (যাহাবি, সিয়ারু আলাম আন–নুবালা, ২/২০২)
সর্বাধিক হাদিস বর্ণনায় আবু হুরাইরার পরই আয়েশা (রা.)–এর স্থান। তিনি সহস্রাধিক হাদিস বর্ণনা করেছেন এবং ভুলভাবে নবীজির নামে প্রচারিত বাণী প্রত্যাখ্যান করেছেন। এ ছাড়া জয়নাব বিনত উম্মে সালামা এবং আবদুল মুত্তালিবের কন্যারা জ্ঞান ও সাহিত্যে পারদর্শী ছিলেন। (উসদুল গাবাহ, ৫/৪৬৯)
আরও পড়ুনমুসলিম নারী ক্যালিগ্রাফারদের গল্প১৫ জুন ২০২৫খ. হিজরতকারী নারী
নারীরা ইসলাম প্রচারের জন্য হিজরতে অংশ নিয়েছিলেন। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘হে ইমানদারগণ! যখন মুমিন নারীরা হিজরত করে তোমাদের কাছে আসে, তখন তাদের পরীক্ষা করো...যদি তাদের মুমিন বলে জানো, তবে তাদের কাফিরদের কাছে ফিরিয়ে দিয়ো না।’ (সুরা মুমতাহিনা, আয়াত: ১০)
উম্মে কুলসুম বিনত উকবা পরিবারের বিরোধিতা সত্ত্বেও তরুণ বয়সে মক্কা ছেড়ে মদিনায় হিজরত করেন। এ ছাড়া নবীজির কন্যা রুকাইয়া, আসমা বিনত উমাইস এবং উম্মে সালামা আবিসিনিয়া ও মদিনায় হিজরত করেছিলেন (ইবনে হিশাম, আস–সিরাত আন–নাবাবিয়্যাহ, ১/২১৪–২১৭)।
নুসাইবা বিনত কা’ব ওহুদের যুদ্ধে নবীজিকে রক্ষা করতে গিয়ে ১২টি ক্ষত সহ্য করেন। তিনি ইয়ামামার যুদ্ধে হাত হারান এবং তাঁর পুত্র মিথ্যা–নবী মুসাইলামাকে হত্যা করেন।গ. যোদ্ধা ও নার্স হিসেবে নারী
নারীরা যুদ্ধে সক্রিয় অংশ নিয়েছিলেন। নুসাইবা বিনত কা’ব ওহুদের যুদ্ধে নবীজিকে রক্ষা করতে গিয়ে ১২টি ক্ষত সহ্য করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘ইবন কুমাইয়া নবীজিকে আক্রমণ করতে এলে আমি প্রতিরোধ করেছি।’ (আল–মাগাজি, ১/২৭০)
তিনি ইয়ামামার যুদ্ধে হাত হারান এবং তাঁর পুত্র মিথ্যা–নবী মুসাইলামাকে হত্যা করেন। এ ছাড়া আসমা বিনত উমাইস, উম্মে সালিম, আল-রুবাইয়ি বিনত মুআওয়ায এবং রুফাইদা আল-আনসারিয়া যুদ্ধে আহতদের সেবা করতেন। (উসদুল গাবাহ, ৫/৫৯১)
ঘ. নৈতিকতা প্রতিষ্ঠাকারী নারী
নারীরা ‘আমর বিল মারুফ ও নাহি আনিল মুনকার’ (ভালোর আদেশ ও মন্দের নিষেধ)-এর দায়িত্ব পালন করতেন। সুমরা বিনত নাহিক চাবুক হাতে নিয়ে সমাজে নৈতিকতা প্রতিষ্ঠা করতেন, এমনকি পুরুষদেরও সংশোধন করতেন। (আল–মু’জাম আল–কাবির, ২৪/৩১১)
একজন নারী খলিফা ওমর (রা.)-এর মজলিশে তাঁর মোহর সম্পর্কিত ভুল বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন এবং কোরআনের আয়াত (সুরা নিসা, আয়াত: ২০) উল্লেখ করে তাঁকে সংশোধন করেন। ওমর বলেন, ‘একজন নারী ওমরের সঙ্গে তর্ক করে তাঁকে পরাজিত করেছে!’ (আল–মুসান্নাফ, ৬/১৮০)
ঙ. স্বামীদের আগে ইসলাম গ্রহণকারী নারী
অনেক নারী তাঁদের স্বামীদের আগে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। ওয়ালিদ বিন মুগিরার কন্যা মক্কা বিজয়ের দিন ইসলাম গ্রহণ করেন, যখন তাঁর স্বামী সাফওয়ান বিন উমাইয়া পালিয়ে যান। (মুয়াত্তা মালিক, ২/৫৪৩)
উম্মে হাকিম বিনত আল-হারিস তাঁর স্বামী ইকরিমা বিন আবি জাহলকে ইসলামের পথে আনেন। (মুসতাদরাকে হাকিম, ৩/২৪১)
নবীজির কন্যা জয়নাব (রা.) তাঁর স্বামী আবু আল-আসের আগে ইসলাম গ্রহণ করেন। (মুসতাদরাকে হাকিম, ৩/২৩৬)
আরও পড়ুনহিজরতে মহানবী (সা.)–কে সাহায্য করলেন দৃঢ়চেতা এক নারী২৯ জুন ২০২৫ইতিহাসে অমর নারীদের নামইসলামের ইতিহাসে কিছু নারীর নাম চিরস্থায়ী হয়ে আছে, যাঁরা তাঁদের অবদানের মাধ্যমে ইসলামের প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
ক. রাসুল (সা.)-এর পরিবারের নারী
খাদিজা (রা.) ছিলেন নবীজির সবচেয়ে কাছের সঙ্গী ও সমর্থক। তিনি তাঁর সম্পদ ইসলামের জন্য উৎসর্গ করেন এবং তাঁকে বিশ্বাস করেন, যখন অন্যরা অস্বীকার করেছিল। নবীজি বলেছেন, ‘আল্লাহ আমাকে খাদিজার চেয়ে উত্তম কাউকে দেননি।’ (মুসনাদে আহমাদ, ৬/১১৮)
তিনি তাঁর প্রতি অপরিসীম ভালোবাসা ও আনুগত্য প্রকাশ করতেন, এমনকি তাঁর মৃত্যুর পরও। (আল–মু’জাম আল–কাবির, ২৩/১৩)
ফাতিমা (রা.) ছিলেন নবীজির প্রিয় কন্যা, যিনি তাঁকে ‘বিশ্বের নারীদের শীর্ষজন’ বলে ঘোষণা করেন। (আল–ইসতি’আব, ৪/১৮৯৪)।
তিনি ছিলেন পবিত্রতা, ধৈর্য ও জ্ঞানের প্রতীক।
উম্মে সালামা (রা.) ছিলেন একজন আলেমা ও হাদিস বর্ণনাকারী। তিনি পবিত্রতার আয়াত প্রকাশের সময় রাসুলের সঙ্গে আহলে বাইতের সঙ্গে যোগ দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেন এবং নবীজি বলেন, ‘তুমি কল্যাণের পথে আছ’। তিনি রাসুলের ইচ্ছা অনুসরণ করেন এবং আয়েশাকে বসরার যুদ্ধে অংশ না নিতে পরামর্শ দেন। (ফুতুহুল বুলদান, ২/৪৫৪)
উম্মে ওয়ারাকা আল-আনসারিয়া (রা.) ছিলেন কোরআনের হাফেজা এবং নবীজি তাঁকে জীবদ্দশায় ‘শহীদ’ বলে ডাকতেন। পরবর্তী সময়ে তিনি শহীদ হন।খ. সাধারণ সমাজের নারী
ওহুদের যুদ্ধে আল-সুমাইরা বিনত কায়সের দুই পুত্র শহীদ হন। তিনি শোক প্রকাশের পরিবর্তে জিজ্ঞাসা করেন, ‘রাসুল কেমন আছেন?’ তাঁরা বলেন, ‘তিনি নিরাপদ।’ তিনি বলেন, ‘রাসুলের ক্ষতির পরই দুর্যোগ গুরুতর।’ (আল–মাগাজি, ১/২৯২)
সুমাইয়া বিনত খাইয়াত ছিলেন ইসলামের প্রথম শহীদ নারী। তিনি, তাঁর স্বামী ইয়াসির এবং পুত্র আম্মার ইসলাম গ্রহণের জন্য নির্যাতন সহ্য করেন। আবু জাহল তাঁকে হত্যা করেন, কিন্তু তিনি ইমান ত্যাগ করেননি (আত–তাবাকাত আল–কুবরা, ৮/২৬৪)
আসমা বিনত উমাইস (রা.) ছিলেন একজন আলেমা ও হাদিস বর্ণনাকারী। তিনি আবিসিনিয়ায় হিজরত করেন। উম্মে ওয়ারাকা আল-আনসারিয়া (রা.) ছিলেন কোরআনের হাফেজা এবং নবীজি তাঁকে জীবদ্দশায় ‘শহীদ’ বলে ডাকতেন। পরবর্তী সময়ে তিনি শহীদ হন। (আল–মু’জাম আল–কাবির, ২৫/১৩৪)।
নবীজির জীবনে নারীরা জ্ঞানচর্চা, হিজরত, যুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং নৈতিকতা প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। খাদিজা, ফাতিমা, উম্মে সালামা, নুসাইবা, সুমাইয়া ও আসমা (রা.)–এর মতো নারীরা ইসলামের প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় অমর হয়ে আছেন।
ইসলাম নারীদের জাহিলি শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করে তাঁদের সম্মান ও সক্রিয়তার সুযোগ দিয়েছে। এই নারীদের অবদান আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা এবং ইসলামের সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রমাণ।
আরও পড়ুনফকিহদের দৃষ্টিতে নারী-পুরুষের মধ্যকার প্রেম–ভালোবাসা২৬ জুলাই ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসল ম র প রথম ইসল ম গ রহণ দ র অবদ ন জ ঞ নচর চ কর ছ ল ন ন ইসল ম র জ বন আল ক ব নব জ র কর ছ ন প রক শ ত কর ছ ন ত কত ন কর ছ র জন য ক রআন করত ন
এছাড়াও পড়ুন:
জবি ছাত্র জোবায়েদ হত্যা মামলায় ২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জোবায়েদ হোসেন হত্যা মামলায় দুইজন সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিজাম উদ্দীন তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
আরো পড়ুন:
সখীপুরে মেয়েকে হত্যার পর নিজেকে শেষ করলেন মা
নেত্রকোণায় চালককে হত্যা করে মোটরসাইকেল ছিনতাই
সাক্ষীরা হলেন, জবি শিক্ষার্থী সৈকত হোসেন এবং সালাউদ্দিন স্পেশালাইজড হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. ওয়াহিদুর রহমান। সৈকত নিহত জোবায়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ভাই এবং ডা. ওয়াহিদ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি বর্ষার মামা।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বংশাল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফ হোসেন সাক্ষীদের জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য আবেদন করেন।
জবানবন্দিতে সৈকত বলেন, “আমি জবির ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী ও জোবায়েদ ভার্সিটির বড় ভাই। আমি জোবায়েদ ভাইয়ের ক্লোজ ছোট ভাই হওয়াতে বর্ষা আমার নাম্বার জোবায়েদ ভাই থেকে নেয়। মাঝে মাঝে হোয়াটসঅ্যাপ হাই, হ্যালো কথাবার্তা হত। ২-৩ মাস আগে বর্ষা আমাকে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়। তখন থেকে বর্ষার সঙ্গে আমার আর যোগাযোগ হয়নি। জোবায়েদ ভাই প্রায় ১ বছর ধরে বর্ষাকে বাসায় টিউশন পড়াত।”
তিনি বলেন, “ভার্সিটি এলাকায় থাকাকালে গত ১৯ অক্টোবর বিকেল ৫টা ৫৮ মিনিটের দিকে বর্ষা তাকে ম্যাসেঞ্জারে ম্যাসেজ দেয়, ‘ভাইয়া কই তুমি?’ আমি জানাই ক্যাম্পাসে। বর্ষা বলে, ‘স্যারের আম্মুর নাম্বার আছে?’ কারণ জানতে চাইলে বর্ষা বলে, ‘লাগবে।’ ভাইয়ের কিছু হয়ছে কি না জানতে চাইলে বর্ষা বলে, ‘ভাইরে (জোবায়দে) কে জানি মাইরা ফেলছে।’ আমি বলি, মাইরা ফেলছে বলতে? বর্ষা বলে, ‘খুন করে ফেলছে।’ তখন বর্ষাকে কল দেওয়ার চেষ্টা করি, কিন্তু তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। এরপর বিষয়টি বড় ভাইদের জানাই।”
ডা. ওয়াহিদুর রহমান জবানবন্দিতে বলেন, “গত ১৯ অক্টোবর সাপ্তাহিক নৈশ্যকালীন ডিউটি থাকায় বাসায় অবস্থান করছিলাম এবং ড্রইং রুমে বসে টিভি দেখছিলাম। হঠাৎ আমার স্ত্রীকে দ্বিতীয় তলার চাচাতো ভাই ফোন করে জানায়, সিঁড়িতে কোনো একজন লোক পড়ে আছে। আমরা তখন সঙ্গে সঙ্গে দরজা খুলে দেখি সিঁড়ির মাঝামাঝি একজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।”
তিনি বলেন, “তাদের চিৎকার চেঁচামেচিতে বাড়ির লোকজন জড় হয়ে যায় এবং সেখানে শনাক্ত হয় যে, আমার ভাগ্নি বর্ষার প্রাইভেট টিউটর জুবায়েদের মরদেহ। তাৎক্ষণিক ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশকে অবহিত করি।”
বর্ষার মামা জানান, পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন তার ভাগ্নি বর্ষার সঙ্গে মাহির নামক এক ছেলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং জোবায়েদ মাস্টারের সঙ্গেও বর্ষার প্রেম ছিল। এই দ্বন্দ্বের কারণে মাহির রহমান, জোবায়েদ মাস্টারকে হত্যা করে ঘটনার দিন দৌড়ে পালিয়ে যায়।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, মো. জোবায়েদ হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করতেন। প্রতিদিনের মতো গত ১৯ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বংশাল থানাধীন ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে নুর বক্স লেনের ১৫ নম্বর হোল্ডিং রৌশান ভিলায় বর্ষাকে পড়ানোর জন্য যান।
সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটের দিকে ওই ছাত্রী জোবায়েদ হোসেনের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ভাই সৈকতকে ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে জানায়, “জোবায়েদ স্যার, খুন হয়ে গেছে। কে বা কারা জোবায়েদ স্যারকে খুন করে ফেলছে।”
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মো. কামরুল হাসান ৭টার দিকে জোবায়েদের ভাই এনায়েত হোসেনকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তথ্যটি জানান। এনায়েত তার শ্যালক শরীফ মোহাম্মদকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে সাড়ে ৮টার দিকে ঘটনাস্থল রৌশান ভিলায় পৌঁছান। ভবনের নিচতলা থেকে ওপরে ওঠার সময় সিঁড়ি এবং দেয়ালে রক্তের দাগ দেখতে পান। ওই ভবনের তৃতীয় তলার রুমের পূর্ব পার্শ্বে সিঁড়িতে জোবায়েদের রক্তাক্ত মরদেহ উপুড় অবস্থায় দেখতে পান।
ঘটনার দুইদিন পর ২১ অক্টোবর জোবায়েদের ভাই এনায়েত হোসেন বংশাল থানায় মামলা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে জোবায়েদকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলার ডান পাশে আঘাত করে হত্যা করেছে।
মামলায় বর্ষা, তার প্রেমিক মো. মাহির রহমান, মাহিরের বন্ধু ফারদীন আহম্মেদ আয়লান ২১ অক্টোবর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছে।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী