স্বাস্থ্য খাতের সিন্ডিকেট ভাঙাসহ তিন দফা দাবিতে বরিশালে চলমান আন্দোলন নিয়ে বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবু জাফর বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। সভায় তিনি আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে আন্দোলনকারীরা স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বরিশালে না আসা পর্যন্ত ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।

তিন দফা দাবিতে গত কয়েক দিনের আন্দোলন ও মহাসড়ক অবরোধের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সকালে বরিশালে আসেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো.

আবু জাফর। এরপর দুপুর ১২টায় বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের সম্মেলনকক্ষে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, চিকিৎসক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনা করেন মহাপরিচালক। তবে সভায় আন্দোলনের সংগঠক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি কিংবা অন্য কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। বেলা সোয়া তিনটা পর্যন্ত চলে এ সভা।

সভায় অংশগ্রহণকারীরা শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা নিয়ে নানা অসংগতি, জনবল, যন্ত্রপাতি ও অবকাঠামো সংকট, হয়রানি ও অনিয়ম নিয়ে বক্তব্য দেন। এ সময় মহানগর জামায়াতের আমির জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর ও মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব জিয়া উদ্দিন সিকদারসহ কয়েকজন জনদুর্ভোগ তৈরি করা চলমান ‘ব্লকেড’ কর্মসূচির সমালোচনা করে বক্তব্য দেন।

সভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবু জাফর বলেন, ‘চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়ার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের যে দাবিগুলো রয়েছে, সেই দাবিগুলো পূরণের জন্য ইতিমধ্যে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আন্দোলনের ১৭ দিন পার হলেও সব খবরাখবর নিয়েছি।’ আন্দোলনকারীদের অনুরোধ করে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনে যাতে কারও দুর্ভোগ না হয়, সেই বিষয়টি সবাইকে মাথায় রাখতে হবে।’

সভায় অতিরিক্ত সচিব এ টি এম সাইফুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক আবু হোসেন মোহাম্মদ মইনুল আহসান, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে তাঁরা বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফটকে অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে যান। তখন মহাপরিচালক অনশনকারীদের বক্তব্য শোনেন এবং অনশন ভাঙানোর জন্য পানি ও জুস পান করানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু অনশনকারীরা তাঁকে বলেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বরিশালে না আসা পর্যন্ত তাঁরা অনশন ভাঙবেন না।

বরিশালে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের মারামারির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বিকেলে নগরের নথুল্লাবাদ এলাকায়

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ড ক ল কল জ বর শ ল

এছাড়াও পড়ুন:

রায়কে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বললেন শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়কে ‌‌পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে নিন্দা জানিয়েছেন।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) রায়ের পর প্রকাশিত পাঁচ পৃষ্ঠার এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, “আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে নিস্ক্রিয় করে দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি পন্থা হচ্ছে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া।”

আরো পড়ুন:

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ‘অতীতের প্রতিশোধ নয়’: প্রধান কৌঁসুলি

এই রায়ে কষ্ট পেয়েছি: শেখ হাসিনার আইনজীবী

ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা এর আগে এ বিচার প্রক্রিয়াকে ‘প্রহসন’ বলে অভিহিত করেছিলেন এবং তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন।

তিনি বলেন, “এমন একটি ট্রাইব্যুনাল যেখানে ন্যায্যভাবে অভিযোগ যাচাই ও পরীক্ষা করা হয়, সেখানে অভিযোগকারীদের মুখোমুখি হতে আমি ভয় পাই না।”

তিনি আরো যোগ করেন, তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে চ্যালেঞ্জ করেছেন, এই অভিযোগগুলো হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে নিয়ে যেতে।

শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, তিনি তার মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংক্রান্ত রেকর্ড নিয়ে অত্যন্ত গর্বিত।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। দুটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রায় ঘোষণার কার্যক্রম শুরু হয়। ৪৫৩ পৃষ্ঠার এই রায়ে ছয়টি অংশ রয়েছে।

রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির অপরাধ প্রমাণিত। দুটি অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

একটি অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অ্যাপ্রুভার (রাজসাক্ষী) হওয়ায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

তথ্যসূত্র: বিবিসি অনলাইন

ঢাকা/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ