নির্বাচনের সময় অপরিবর্তিত রেখে রাকসুর তফসিল পুনর্বিন্যাস, ভোটকেন্দ্র স্থানান্তরের দাবি
Published: 13th, August 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের সময় ১৫ সেপ্টেম্বর অপরিবর্তিত রেখে তফসিল পুনর্বিন্যাস করেছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এ ব্যাপারে রাকসুর নির্বাচন কমিশন অধ্যাপক আমজাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাকসুর খসড়া ভোটার তালিকায় বেশকিছু জটিলতা দেখা দিয়েছে। যা সমাধান করতে একটু সময় প্রয়োজন। এ জন্য তফসিলের ভেতরের কিছু সময় পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে পূর্বনির্ধারিত নির্বাচনের সময় অপরিবর্তিত থাকছে। যথাসময়ে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রায় এক দশক পর ১৯৬২ সালে রাকসু প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর মোট ১৪টি নির্বাচন হয়েছে। সর্বশেষ রাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৮৯ সালে। জুলাই অভ্যুত্থান–পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন রাকসু নির্বাচনের দাবি জানায়। এ পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে শেষ পর্যন্ত পথনকশা অনুযায়ী কাজের অগ্রগতি হয়নি।
শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে ২৮ জুলাই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের ভোট গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশিত হবে। ইতিমধ্যে তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনের আচরণবিধি ও খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। তবে গতকাল মধ্যেরাতে নির্বাচনের সময় অপরিবর্তিত রেখে তফসিল পুনর্বিন্যাসের বিজ্ঞপ্তি দেয় নির্বাচন কমিশন।
রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক আমজাদ হোসেন স্বাক্ষরিত নতুন তফসিল বিবরণীতে বলা হয়, ভোটার তালিকায় আপত্তি ও নিষ্পত্তি করা যাবে ১৭ আগস্ট বিকেল ৪টা পর্যন্ত; চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ১৯ আগস্ট; মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হবে ২০–২৩ আগস্ট সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত; মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে ২৪–২৬ আগস্ট সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত; মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২৭–২৮ আগস্ট; প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ ৩১ আগস্ট এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ২ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
নতুন প্রকাশিত তফসিলে বলা হয়, প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে ৪ সেপ্টেম্বর, ১৫ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রতিটি আবাসিক হলে ভোট গ্রহণ, অর্থাৎ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং ওই দিনই ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
ভোটকেন্দ্রে আপত্তি ও অনশনের ঘোষণা
তফসিল ঘোষণার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম ছাত্রসংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র আবাসিক হল বাতিল করে একাডেমিক ভবনে স্থানান্তরসহ তিন দাবিতে আন্দোলন করছে। নতুন প্রকাশিত তফসিলেও ভোটকেন্দ্র অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভোটকেন্দ্র পরিবর্তনের সময় বেঁধে দিয়েছে। তা না হলে গণ–অনশন কর্মসূচিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আল শাহরিয়া শুভ। গতকাল মধ্যরাতে শুভ তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভোটকেন্দ্র আবাসিক হল থেকে একাডেমিক বিল্ডিংয়ে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত না এলে গণ–অনশন কর্মসূচি দেওয়া হবে। মনে রাইখেন, সময় ২৪ ঘণ্টা। অপশন একটাই!’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভ টক ন দ র স প ট ম বর প রক শ ত আগস ট তফস ল
এছাড়াও পড়ুন:
আট দিনে এনসিপির ১ হাজার মনোনয়নপত্র বিক্রি, লক্ষ্য ৩ হাজার
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু করার পর গত আট দিনে ১ হাজার ১১টি মনোনয়নপত্র বিক্রি করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। মনোনয়নপত্র বিতরণের পূর্বঘোষিত সময় শেষ হলেও তা আরও সাত দিন বাড়ানো হয়েছে। ২০ নভেম্বর পর্যন্ত এনসিপির মনোনয়নপত্র কেনা যাবে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
এ সময় তিন হাজার মনোনয়নপত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে উল্লেখ করে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘আগামী কয়েক দিনে আমরা এই লক্ষ্যমাত্রা ইনশা আল্লাহ ছুঁতে পারব।’
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা জনগণের জনপ্রতিনিধিদের সংসদে পাঠানোর জন্য দলীয় মনোনয়নপত্র ছেড়েছিলাম। ইতিমধ্যে ১ হাজার ১১টি মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে। আমরা মানুষের কাছ থেকে অনেক ভালো সাড়া পেয়েছি। চিকিৎসক, আইনজীবী, পেশাজীবী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, আলেম-ওলামা, শিক্ষক—সব জায়গা থেকে আমরা আবেদন পাচ্ছি। জনগণের উদ্দীপনা ও আগ্রহ দেখে আমরা এই সময়সীমা আরও বাড়িয়েছি। এটা আগামী ২০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে।’
বাংলামোটরের রূপায়ণ ট্রেড সেন্টারের দ্বিতীয় তলায় এসে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা যাবে। এ ছাড়া অনলাইন থেকেও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা যাবে বলে জানান এনসিপির কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান।
সাংবাদিকদের মধ্যে যাঁরা সংসদে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে চান, তাঁদেরও এনসিপির মনোনয়নপত্র কেনার আহ্বান জানান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, ‘কারণ, আপনাদের যে মজুরি, এটা বাংলাদেশে এখনো ঠিক হয়নি। আপনারা সংসদে গিয়ে আপনাদের মজুরি, মালিকদের নিষ্পেষণ-নিপীড়ন নিয়ে কথা বলার জন্য মনোনয়নপত্র তুলবেন।’
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক আরও বলেন, ‘ইনশা আল্লাহ পুরো বাংলাদেশের মানুষকে আমরা জানাতে চাই, আমরা দক্ষ ও যোগ্য প্রতিনিধি সংসদে পাঠাতে চাই। আমরা কোনো গডফাদারকে সংসদে পাঠাতে চাই না, চাঁদাবাজদের পাঠাতে চাই না, সন্ত্রাস যারা করে, তাদের পাঠাতে চাই না। আমরা কিছু ভালো মানুষকে পাঠাতে চাই।’
এর আগে ৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির মনোনয়নপত্র বিতরণের প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। প্রতিটি মনোনয়নপত্রের মূল্য ১০ হাজার টাকা। তবে জুলাই যোদ্ধা এবং স্বল্প আয়ের ব্যক্তিদের জন্য মনোনয়নপত্রের দাম ২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।