কাপ্তাই হ্রদে ১০ দিনে ৭৪১ মেট্রিক টন মাছ আহরণ
Published: 14th, August 2025 GMT
রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে চলতি মৌসুমে ১০ দিনে ৭৪১ মেট্রিক টন মাছ আহরণ হয়েছে। এতে রাজস্ব আয় হয়েছে ১ কোটি ৬৪ লাখ ৭৪ হাজার ৭১৬ টাকা। তবে টানা বৃষ্টি ও হ্রদে পানি বেড়ে যাওয়ায় এক সপ্তাহ ধরে মাছের আহরণ কমেছে।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের রাঙামাটি উপকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, তিন মাস চার দিন বন্ধ থাকার পর ২ আগস্ট রাত ১২টার পর উৎসবমুখর পরিবেশে মাছ আহরণ শুরু হয়। প্রথম দিনেই ৭৫ মেট্রিক টন মাছ ওঠে, যার বাজারমূল্য প্রায় ২০ লাখ টাকা। গত বছরের প্রথম দিনে আয় হয়েছিল ১৫ লাখ টাকা।
কর্তৃপক্ষ বলছে, ভারী বর্ষণে হ্রদের পানি বেড়ে যাওয়ায় ৫ আগস্ট থেকে মাছ আহরণ কমে যায়। বর্তমানে পানি স্বাভাবিক উচ্চতায় রয়েছে। বৃষ্টি না হলে আহরণ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছরের একই সময়ে ৭৬১ মেট্রিক টন মাছ আহরণ হয়েছিল, যা থেকে রাজস্ব আয় হয়েছিল ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এ বছর মাছ বেশি ধরা পড়লেও আকারে ছোট হওয়ায় দাম কম পাচ্ছেন জেলেরা।
জেলেদের অভিযোগ, ছোট আকারের মাছের জন্য ক্রেতারা কম দাম দিচ্ছেন। দাদন নেওয়া জেলেরা প্রতি কেজি ৩০-৩৫ টাকায় মাছ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন, অন্যরা পাচ্ছেন ৭০-৮০ টাকা। অথচ পাইকারি বাজারে এসব মাছ ১২০-১৫০ টাকা, আর ঢাকা-চট্টগ্রামে ১৫০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাপ্তাই হ্রদের ৯০ শতাংশ মাছ কাচকি, চাপিলা ও মলা প্রজাতির।
প্রজনন মৌসুমে প্রতিবছর মে, জুন ও জুলাই মাসে কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ, বিপণন ও পরিবহন বন্ধ থাকে। এ সময় নিবন্ধিত প্রায় ২৭ হাজার জেলেকে ভিসিএফ সহায়তা দেওয়া হয়। গত বছর হ্রদ থেকে ৮ হাজার ৯৮৩ মেট্রিক টন মাছ আহরণ হয়েছিল, যার রাজস্ব আয় ১৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের রাঙামাটি উপকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মৌসুম শেষে খালি ট্রলার নিয়ে কূলে ফিরছেন জেলেরা
মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ার আগ মুহূর্তে বৈরি আবহাওয়ার কবলে পড়েছেন উপকূলের জেলেরা।
বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ায় প্রবল ঝড়ো হাওয়ায় উত্তাল হয়ে ওঠে সাগর। ফলে বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিকেল থেকে একে একে ফিশিং ট্রলারগুলো কূলে ফিরতে শুরু করেছে।
আরো পড়ুন:
পটুয়াখালীতে ৫ কেজির পোয়া মাছ ৮০ হাজারে বিক্রি
পদ্মায় জেলের জালে ধরা পড়ল ১১ কেজির কাতল
ঘাটে ফেরা জেলেরা জানান, সপ্তাহখানেক আগে তারা শেষ ট্রিপে সাগরে গিয়েছিলেন। প্রথম দিকে জাল ফেলতে পারলেও বুধবার থেকে প্রবল বাতাস শুরু হয়। এতে বাধ্য হয়ে দ্রুত জাল গুটিয়ে ঘাটে ফিরতে হয়েছে। পর্যাপ্ত মাছ ধরা সম্ভব হয়নি। অধিকাংশ ট্রলারই খালি হাতে ফিরে এসেছে।
শরণখোলা মৎস্য আড়ৎদার মো. কবির হাওলাদার বলেন, “বড় ট্রলারগুলো এবার বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে। প্রতিটি ট্রলারে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা খরচ হলেও একটিতেও আশানুরূপ মাছ উঠেনি। তবে ছোট ট্রলারগুলোতে অল্প পরিমাণে ইলিশ পাওয়া গেছে।”
শরণখোলা সমুদ্রগামী ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন বলেন, “এবার এমনিতেই ইলিশ তেমন পাওয়া যায়নি। আশা ছিল, নিষেধাজ্ঞার আগের শেষ ট্রিপে কিছুটা ক্ষতি পোষানো যাবে। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ায় বড় ট্রলারগুলো প্রায় শূন্য হাতে ফিরেছে। এতে ট্রলার মালিক ও জেলেরা লোকসানের মুখে পড়েছেন।”
শরণখোলা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অঞ্জন সরকার বলেন, “মা ইলিশ রক্ষায় ৪ অক্টোবর মধ্য রাত থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। মৌসুম শেষ হওয়ার আগে বৈরি আবহাওয়ার কারণে জেলেরা আশানুরূপ মাছ আহরণ করতে পারেননি। ইতোমধ্যে অনেক ট্রলার সাগর থেকে ফিরে এসেছে।”
তিনি আরো বলেন, “নিষেধাজ্ঞার সময়ে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুদ ও বিপণন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। আইন অমান্য করলে ২ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে। নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেদের জন্য ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় প্রত্যেককে ২৫ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।”
ঢাকা/শহিদুল/মেহেদী