পুঁজিবাজারে বিবিধ খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২৪) ও অর্ধবার্ষিক প্রান্তিকের (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০১৪) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আলোচ্য অর্ধবার্ষিক প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) থেকে লোকসানে নেমেছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে বুধবার (১৩ আগস্ট) অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়।

তথ্য মতে, গত অর্থবছরের কোম্পানিটির দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে (০.

৭৮) টাকা। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানির ইপিএস ছিল ০.৩৬ টাকা। ফলে আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা থেকে রেঅকসানে নেমেছে।

এদিকে কোম্পানিটির অর্ধবার্ষিক প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে (১.৩১) টাকা। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানির ইপিএস ছিল ০.৮৭ টাকা। ফলে আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা থেকে লোকসানে নেমেছে।

২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সমরেয় কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৪.০৫ টাকা।

ঢাকা/এনটি/ইভা

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

১০ বছরে উৎপাদন বেড়েছে ৪৮%

দেশের মানুষের প্রাণিজ আমিষের প্রায় ৬০ শতাংশ জোগান আসে নানা ধরনের মাছ থেকে। মৎস্য অধিদপ্তরের হিসাবে, দেশের মানুষ দৈনিক প্রায় ৬৩ গ্রাম মাছ খেয়ে থাকে। তবে সীমিত আয়ের মানুষের কাছে কম দামের মাছই আমিষের বড় উৎস। সীমিত আয়ের মানুষের কাছে কম দামি মাছে মধ্যে পছন্দের শীর্ষে তেলাপিয়া মাছ। বছর বছর চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় গত এক দশকে দেশে তেলাপিয়ার উৎপাদনও বেড়েছে প্রায় ৪৮ শতাংশ বা দেড় লাখ টন।

এ খাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে পুরুষ তেলাপিয়া চাষের উৎপাদনই বেশি বাড়ছে। তবে মাছ চাষের খরচের প্রায় ৭০ শতাংশই খাবারের পেছনে। তাই উৎপাদন বাড়লেও তেলাপিয়া মাছের দামও এখনো নিম্নআয়ের মানুষের নাগালের বাইরে।

মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২৩–২৪ অর্থবছরে দেশে তেলাপিয়া মাছের উৎপাদন ছিল ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৬৭৮ টন, যা আগের বছরের চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি। ২০২২–২৩ অর্থবছরে তেলাপিয়ার উৎপাদন ছিল ৪ লাখ ২১ হাজার ১৯১ টন। ১০ বছর আগেও ২০১৩–১৪ অর্থবছরে দেশে তেলাপিয়ার উৎপাদন ছিল মাত্র ২ লাখ ৯৮ হাজার ৬২ টন। সেই হিসাবে এক দশকের ব্যবধানে তেলাপিয়ার উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৪৮ শতাংশ বা ১ লাখ ৪১ হাজার ৬১৬ টন।

বড় বাজারের দরদাম

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে আকারভেদে তেলাপিয়া মাছের দাম কেজিপ্রতি ১৮০ থেকে ২৪০ টাকা। গত বৃহস্পতিবার মোহাম্মদপুরের চন্দ্রিমা মডেল টাউন কাঁচাবাজারে প্রতি কেজি ২২০ টাকা দরে ৫০ কেজি মাছ বিক্রি করেছেন মাছ ব্যবসায়ী কামাল হোসেন। তিনি জানান, প্রতি কেজি মাছ তিনি ১৮০ টাকায় কিনেছেন। কামাল হোসেন জানান, এক বছরের ব্যবধানে পাইকারিতে তেলাপিয়া মাছের দাম কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়েছে। আর খুচরা পর্যায়ে বেড়েছে প্রায় ৮০ টাকা। মাছের খাবার থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সব সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছের দামও বেড়েছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের ডিন অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম সরদার প্রথম আলোকে বলেন, মাছ উৎপাদনে ৭০ শতাংশ খরচই হয় খাবারের পেছনে। গত কয়েক বছরে খাবারের দাম অনেক বেড়েছে। ফলে উৎপাদন বাড়লেও দাম কমেনি। তবে তিনি বলেন, খাবারের দাম যতটা বেড়েছে, মাছের দাম ততটা বাড়েনি।

এদিকে মাছচাষিরা বলছেন, উৎপাদন বাড়লেও মুনাফা বাড়েনি। এ কারণে অনেক মাছচাষি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। চাষির মুনাফা বৃদ্ধি না পাওয়ার জন্য ব্যাংকের উচ্চ সুদকে দায়ী করছেন চাষিরা। তাঁরা বলছেন, অনেক চাষি উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে মাছ চাষে বিনিয়োগ করেন। ভালো মুনাফা না পেলে তাঁদের পক্ষে টিকে থাকা কঠিন। এ বিষয়ে ময়মনিসংহের ত্রিশালের মাছচাষি নাহিম মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, মাছচাষিরা এখন সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছেন। মাছের খাবার, বিদ্যুৎ বিল, ওষুধ, শ্রমিকের খরচ, ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদ মিলিয়ে মাছ চাষ করে লোকসান গুনছেন বেশির ভাগ চাষি।

নাদিম মাহমুদ জানান, বর্তমানে মাছের এক টন খাবারের দাম ৭২ হাজার টাকা। তাঁর তিন একরের পুকুরে দিনে প্রায় আধা টন খাবার লাগে। একজন শ্রমিকের বেতন মাসে ১৮ হাজার টাকা। তাই মাছ চাষে কম সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা না গেলে অনেকেই আগ্রহ হারাবেন।

মাছ চাষের খরচ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে এক মাস আগে নিয়োগ পাওয়া মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের প্রথম আলোকে বলেন, ‘কৃষি খাতের মতো মৎস্য খাতেও বিদ্যুৎ বিল কমাতে আমরা কাজ করছি।’

মাছ চাষে শীর্ষ ১০ জেলা

২০২৩ সালের মৎস্য অধিদপ্তরের উৎপাদন হিসাবের তথ্য অনুযায়ী, ওই বছর তেলাপিয়ার মোট উৎপাদনের মধ্যে পুকুরে চাষ হয়েছিল ৩ লাখ ৫৪ হাজার ১৪২ টন। এর মধ্যে শীর্ষ ১০ জেলার পুকুরে চাষ হয়েছে প্রায় ৪৭ শতাংশ। পুকুরে তেলাপিয়া চাষে শীর্ষে রয়েছে কুমিল্লা। এ জেলায় ২০২৩ সালে প্রায় সাড়ে ৪১ হাজার টন তেলাপিয়া পাওয়া যায়। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ময়মনসিংহ জেলায় উৎপাদিত হয় প্রায় সাড়ে ৩৪ হাজার টন। যশোর থেকে আসে তৃতীয় সর্বোচ্চ ২২ হাজার ১৯৭ টন। চট্টগ্রাম ও বরিশালে উৎপাদিত হয় যথাক্রমে প্রায় ২০ হাজার ও ১১ হাজার ৭১৪ টন। এরপরের অবস্থানে ছিল যথাক্রমে সাতক্ষীরা, দিনাজপুর, গাজীপুর, বগুড়া ও নোয়াখালী।

আফ্রিকা থেকে দেশে

মৎস্য কর্মকর্তারা জানান, ১৯৬৯ সালে আফ্রিকা থেকে প্রথম দেশে আনা হয় তেলাপিয়া। তবে ২০১০ সালের পর তেলাপিয়ার ব্যাপক ভিত্তিতে বাণিজ্যিক চাষ শুরু হয়।

এ বিষয়ে মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক (অভ্যন্তরীণ মৎস্য) মো. মোতালেব হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এখন মোনোসেক্স জাতের পুরুষ তেলাপিয়ার বেশি চাষ হচ্ছে। কারণ, এসব মাছ আকারে বড় হয়। আগে মিশ্র জাতের তেলাপিয়ার বেশি চাষ হতো।

একদিকে বেড়েছে চাহিদা, অন্যদিকে কম সময়ে এ মাছ দ্রুত বড় হয়। তাই দেশে তেলাপিয়া চাষে আগ্রহ বেড়েছে চাষিদের। মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, তিন থেকে পাঁচ মাসের মধ্যে এ মাছ বিক্রি উপযোগী হয়ে যায়।

এ বিষয়ে মো. মোতালেব হোসেন বলেন, গরম বা ঠান্ডা যেকোনো আবহাওয়ায় তেলাপিয়া চাষ করা যায়। এ ছাড়া খাবার না দিলেও এ মাছ বড় হয়। কই, শিং ও পাবদা মাছের মতো তেলাপিয়া আলাদা যত্নের প্রয়োজন হয় না। খেতেও সুস্বাদু। তাই তেলাপিয়ার চাষ এক দশকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে।

তেলাপিয়া বিতর্ক

শেওলা ও বিভিন্ন উচ্ছিষ্ট খাবার খেয়ে এ মাছ বেঁচে থাকতে পারে বলে এটিকে গারবেজ/ট্র্যাশ ফিশ বা আবর্জনা মাছ বলেও ডাকা হয়। এক সময় এ মাছে নানা ক্ষতিকর পদার্থের উপস্থিতির অভিযোগ উঠেছিল। তবে মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, ক্ষতিকর রাসায়নিক মিশ্রিত খাবারের জন্য মূলত এটি হয়ে থাকতে পারে। তাই মানসম্পন্ন খাবার দেওয়া হলে এ মাছে ক্ষতির কিছু নেই।

এ বিষয়ে মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক

মো. মোতালেব হোসেন বলেন, এখন পুকুরে গোবর, হাঁস–মুরগির উচ্ছিষ্ট ব্যবহার করাও আইনিভাবে নিষিদ্ধ।

অধ্যাপক ও গবেষক রফিকুল ইসলাম সরদার বলেন, বর্তমানে দেশে মাছ চাষে যে ধরনের খাবার ব্যবহার করা হয়, তাতে স্বাস্থ্যঝুঁকির সুযোগ নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতে ১৪ দিনে ২০ কোটি টাকার ইলিশ রপ্তানি
  • আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা...
  • বুয়েটে স্নাতক শ্রেণির বিভিন্ন লেভেল বা টার্মের সংশোধিত একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ
  • ১০ বছরে উৎপাদন বেড়েছে ৪৮%
  • সাতক্ষীরায় ভারতীয় ভিসা সেন্টারের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা
  • আফগানিস্তানে কী কী বই নিষিদ্ধ হলো, তালেবান কী বার্তা দিচ্ছে
  • বাজারে এখনো কদর ইনস্ট্যান্ট কফির
  • শুল্কছাড়েও দেশি বিনিয়োগ নেই কনটেইনার পরিবহন খাতে
  • লোপেজ বললেন, ‘বিচ্ছেদ জীবনের সেরা ঘটনা’
  • বাণিজ্যিক গাড়ির বিক্রি বাড়ছে