কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের ছয় নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। চব্বিশ ঘণ্টায় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে গতকাল শুক্রবার ডিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

ডিএমপির উপকমিশনার (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানার ২ নম্বর পারুলিয়া ইউনিয়নের বঙ্গবন্ধু আওয়ামী সাংস্কৃতিক জোটের সাংগঠনিক সম্পাদক মো.

শফিকুল ইসলাম ওরফে শাওন (৪৮), ঢাকার হাতিরঝিল থানার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসাধারণ সম্পাদক শেখ কবির উদ্দিন (৬৩), বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের ভাইস চেয়ারম্যান ও মোরেলগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. রাসেল হাওলাদার (৪৩), তেজগাঁও থানার ২৫ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হোসেন ওরফে বুলবুল (২১), কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ধর্মবিষয়ক উপসম্পাদক মনিরুজ্জামান ওরফে বাবু (৩৮) এবং সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. শাহনেওয়াজ (৪৭)।

ডিবি সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ওয়ারী থানা এলাকার ফোল্ডার স্ট্রিট এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. শফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে ডিবির লালবাগ বিভাগের একটি দল। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে মগবাজারে নিজ বাড়ি থেকে শেখ কবির উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি মিরপুর বিভাগ। রাত ১১টার দিকে হাতিরঝিল থানা এলাকা থেকে মো. রাসেল হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করা হয় ডিবির লালবাগ বিভাগের অন্য একটি অভিযানে।

রাশেদুল হোসেন ওরফে বুলবুলকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি সাইবার শাখার একটি দল। রাত পৌনে ১২টার দিকে হাতিরঝিল থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে মোহাম্মদপুর থানা এলাকা থেকে মনিরুজ্জামান ওরফে বাবুকে গ্রেপ্তার করে ডিবি সাইবার উত্তর বিভাগ।

ডিবি সূত্রে আরও জানা গেছে, শুক্রবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টর এলাকা থেকে মো. শাহনেওয়াজকে গ্রেপ্তার করে ডিবি তেজগাঁও বিভাগ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ন ওরফ আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে জাতি নবজন্ম লাভ করবে: প্রধান উপদেষ্টা

আগামী নির্বাচন ও গণভোটে শতভাগ সততা, নিরপেক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এবারের নির্বাচন গতানুগতিক কোনো নির্বাচন নয়; বরং এটি দেশ রক্ষার নির্বাচন।  এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে জাতি নবজন্ম লাভ করবে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সদ্য পদায়নকৃত ৫০ জেলা প্রশাসকসহ ৬৪ জেলার প্রশাসকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য প্রদান করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

আরো পড়ুন:

আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না: প্রধান ‍উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাল এবি পার্টি 

আগামী নির্বাচনকে শুধু পাঁচ বছরের সরকার গঠনের একটি নির্বাচন নয়; বরং গণভোট যুক্ত হওয়ায় এটি আরও তাৎপর্যপূর্ণ নির্বাচন হতে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এটা সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী একটি নির্বাচন। জাতি বহু প্রহসনের নির্বাচন দেখেছে, সেই স্মৃতি ছাপিয়ে যেতে আমাদের ভূমিকা রাখতে হবে।”

“এটা গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী নির্বাচন; এই নির্বাচন গণঅভ্যুত্থানকে পূর্ণতা দেওয়ার নির্বাচন। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জাতির জন্য নির্ধারিত হবে শতাব্দীর গতিপথ,” বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

এই নির্বাচনে জেলা প্রশাসকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কোনোভাবেই ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নেই। এই নির্বাচনের মাধ্যমে জাতি নবজন্ম লাভ করবে এবং জেলা প্রশাসকরা থাকবেন ধাত্রীর ভূমিকায়।”

জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আপনাদের যা যা জানা প্রয়োজন সব জেনে নেবেন। নির্বাচনকে একই সঙ্গে উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ করতে হবে।”

তিনি বলেন, “মনে রাখতে হবে বিপুল সংখ্যক তরুণ ও নারী ভোটার রয়েছেন, যারা ভোট দেওয়ার উপযুক্ত হলেও গত ১৫ বছর ধরে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি।”

তিনি আরো বলেন, “আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা এরইমধ্যে আগামী নির্বাচনের বিষয়ে গভীর উৎসাহ দেখাচ্ছেন। তাঁরা দেখতে চান কেমন নির্বাচন হচ্ছে—এটা নিয়ে তাঁদের গভীর আগ্রহ।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এই নির্বাচনকে স্বার্থক করা গণঅভ্যুত্থানের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি। এই নির্বাচন একটি বিরাট অভিযান, এ অভিযানে আমাদের জিততেই হবে।”

তিনি বলেন, “স্বাধীন জাতি হিসেবে টিকে থাকতে হলে এ লড়াইয়ে আমাদের জিততেই হবে।”

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব শেখ আব্দুর রশীদের সঞ্চালনায় বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং আইন উপদেষ্টা প্রফেসর আসিফ নজরুল।

অনুষ্ঠানে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হক এবং বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো: তৌফিকুর রহমান বক্তব্য রাখেন।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ