শেখ মুজিবের মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়া মাহফিল, গ্রেপ্তার ৪
Published: 16th, August 2025 GMT
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। পরে দোয়া মাহফিলের আয়োজক দুই যুবলীগ নেতা এবং দোয়া পরিচালনা করা স্থানীয় মসজিদের ঈমাম ও মুয়াজ্জিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) রাতে উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া জামে মসজিদ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার (১৬ আগস্ট) নোয়াখালী ৯নং আমলি আদালতের বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কারাগারে পাঠানো আসামিরা হলেন, উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের রামেশ্বপুর গ্রামের বাসিন্দা ও মসজিদের ঈমাম মেহেদী হাসান সুমন, একই গ্রামের বাসিন্দা ও মসজিদের মুয়াজ্জিন আব্দুল করিম, বাহার উদ্দিনের ছেলে যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম ও ছদিক মিয়ার ছেলে যুবলীগ নেতা নিজাম উদ্দিন।
আরো পড়ুন:
কিশোরগঞ্জে শেখ মুজিবের মৃত্যুবার্ষিকী পালন, ২ শিক্ষক জেলে
মধ্যরাতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য, দুপুরে ভাঙচুর
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিকালে চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া এলাকার ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মরহুম স্বপন মোল্লার বাড়িতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাদের পরিবারের নিহত সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল করা হয়। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা স্বপন মোল্লা স্মৃতি ফাউন্ডেশনের ব্যানারে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাতবাড়িয়া জামে মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিন ওই মিলাদ ও দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন। দলীয় নেতাকর্মীরা মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার দেন। এটি স্থানীয় প্রশাসনের নজরে এলে তারা ভিডিও দেখে অভিযানে নামে।
একই দিন রাত ৮টার দিকে অভিযান চালিয়ে ইমাম, মুয়াজ্জিন এবং দুই যুবলীগ নেতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে কবিরহাট থানা পুলিশ। কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের কর্মসূচির প্রতিবাদে রাতেই উপজেলার চাপরাশিরহাট বাজারে যুবদল ও জামায়াতের যুব বিভাগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন মিয়া জানান, দোয়া মাহফিলের ঘটনায় সন্ত্রাস দমন আইনে ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। ৪০-৪৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করে। পরে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা/সুজন/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ খ ম জ ব র রহম ন গ র প ত র কর য বল গ ন ত মসজ দ র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
মামুন হত্যা মামলায় চার আসামি পাঁচ দিনের রিমান্ডে, অস্ত্র মামলায় ইউসুফের দায় স্বীকার
রাজধানীর পুরান ঢাকায় আদালত এলাকায় ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ তারিক সাঈদ মামুন হত্যার ঘটনায় অস্ত্র আইনে গ্রেপ্তার পাঁচ আসামির মধ্যে চারজনকে আজ রোববার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পরে এ মামলায় তাঁদের আদালতের মাধ্যমে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়।
আজ রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুজ্জামান এ আদেশ দেন।
অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন মো. ফারুক হোসেন ফয়সাল (৩৮), রবিন আহম্মেদ ওরফে পিয়াস (২৫), মো. রুবেল (৩৪), শামীম আহম্মেদ (২২) ও মো. ইউসুফ জীবন (৪২)। তাঁদের মধ্যে ইউসুফ আজ দায় স্বীকার করে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি।
এ হত্যাকাণ্ডের পর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজারে আসামি ইউসুফ জীবনের বাসার ওয়ার্ডরোবের নিচ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রের গুলির উদ্ধার করা হয়। ১২ নভেম্বর মোহাম্মদপুর থানায় অস্ত্র আইনে মামলা করেন পুলিশ। পরে সেদিনই এই মামলায় গ্রেপ্তার পাঁচজনের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ফটকের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনে ১০ নভেম্বর সকালে গুলি করে হত্যা করা হয় তারিক সাইফ মামুনকে। তিনি মামলার হাজিরা দিয়ে বের হচ্ছিলেন তখন। নিকটস্থ সিসিটিভি ক্যামেরার এক ফুটেজে দেখা যায়, মামুন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করছেন। তখন দুই ব্যক্তি খুব কাছ থেকে তাঁকে গুলি করছেন।
এ ঘটনায় আজ গতকাল শনিবার ১৫ নভেম্বর সূত্রাপুর থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত মামুনের স্ত্রী বিলকিস আক্তার। তবে মামলায় তিনি কারও নাম উল্লেখ না করে অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের উপপরিদর্শক আবু বকর জানান, আজ মামুন হত্যা মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক মো. সাজ্জাদ হোসেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, আগের অস্ত্র মামলার চার দিনের রিমান্ডে সব তথ্য বেরিয়েছে। পুলিশও মিডিয়াকে সব জানিয়েছে। হত্যার ঘটনা কেন হয়েছে? কে কী করেছে। সে ক্ষেত্রে আর রিমান্ডে যৌক্তিকতা নেই। বিচারক বলেন, ওটা তো অন্য মামলায়। আসামিপক্ষের আইনজীবীর প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, তাঁদের সঙ্গে আর কে কে আছেন, সেটা জানা দরকার। শুধু ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা নয়, এখানে আরও বেশি টাকার লেনদেন হয়েছে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, মিডিয়াতে এসেছে, রনি জড়িত। এ ছাড়া হত্যা মামলায় আসামি সব অজ্ঞাতনামা। বিচারক তখন তদন্ত কর্মকর্তার কাছে এ মামলায় এজাহারনামীয় আসামি কে কে, তা জানতে চান। জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, এজাহারে অজ্ঞাতনামা আসামি। বাদী চেয়েছেন, তদন্তের মাধ্যমে আসামি বের হোক। সে জন্য অজ্ঞাতনামা দিয়েছেন। বাদী ন্যায়বিচার চান।
তখন আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, এ আসামিদের প্রতি বাদীর (হত্যা মামলা) কোনো সন্দেহ নেই। তাঁরা গ্রেপ্তার হয়েছেন পাঁচ দিন আগে। তিনি মামলা করেছেন গতকাল শনিবার। কাউকে তিনি সন্দেহ করেননি। তখন তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, এঁরাই গুলি করছেন। মামলাটি তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে। তদন্ত হলে সব বেরিয়ে আসবে। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে বিচারক ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।