লেবানন কি আসলেই হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করতে পারবে
Published: 22nd, September 2025 GMT
এ মাসের শুরুতে লেবানন সরকার তার সেনাবাহিনীর জন্য যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত হিজবুল্লাহ নিরস্ত্রীকরণ পরিকল্পনা অনুমোদন দিয়েছে। শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক দল—দুই পরিচয়ের হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্রীকরণের এই উদ্যোগকে কর্মকর্তারা বলছেন ‘ঐতিহাসিক বাঁকবদল’। লেবাননের সেনাবাহিনী এ বছর থেকেই এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করবে।
এ সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিক। এটি সম্ভব হতো না, যদি সর্বশেষ যুদ্ধে ইসরায়েল হিজবুল্লাহর নেতৃত্বকাঠামো ধ্বংস না করত, আর যদি হিজবুল্লাহর দীর্ঘদিনের পৃষ্ঠপোষক ও ইরানের মিত্র সিরিয়ার বাশার আল-আসাদের পতন না হতো।
লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন ও প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালাম ঘোষণা দিয়েছেন, হিজবুল্লাহর কঠোর বিরোধিতা সত্ত্বেও এ প্রকল্প থেকে আর ফিরে আসার কোনো পথ নেই। হিজবুল্লাহর নেতা নাইম কাসেম পরোক্ষভাবে সহিংসতার পথ বেছে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। নিরস্ত্রীকরণের পরিকল্পনাটি গ্রহণের সময় হিজবুল্লাহর প্রতি অনুগত মন্ত্রীরা মন্ত্রিসভা বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসেন।
আরও পড়ুনলেবানন থেকে কেন পিছু হটল ইসরায়েল২৯ নভেম্বর ২০২৪এখন লেবাননের জনপরিসরে সবচেয়ে বেশি আলোচিত প্রশ্ন হলো সেনাবাহিনী আসলেই কীভাবে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করবে? সেনাবাহিনীর কি যথেষ্ট রাজনৈতিক সমর্থন ও সামরিক শক্তি আছে, যাতে গৃহযুদ্ধের ঝুঁকি ছাড়াই এই দায়িত্ব তারা পালন করতে পারবে?
কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আমি আমার সাম্প্রতিক লেবানন সফরে সেনাপ্রধান জেনারেল রদলফ হায়কালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। তিনি বিস্তারিতভাবে তাঁর সামরিক কৌশল ও বিভিন্ন উদ্বেগের কথা জানান। তাঁর পরিকল্পনা তিনটি প্রধান চিত্রকে মাথায় রেখে করা হয়েছে। প্রতিটির জন্য নির্দিষ্ট পথনকশা ও সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রথম চিত্রে ধরে নেওয়া হয়েছে, হিজবুল্লাহ কোনো সহযোগিতা করবে না, বরং সশস্ত্র প্রতিরোধ করতে পারে। এ ক্ষেত্রে ইসরায়েলও কোনো ছাড় দেবে না। তারা দক্ষিণ লেবাননের পাঁচটি পাহাড়ি এলাকা এখন দখল করে রেখেছে।
এ ছাড়া ইসরায়েল লেবানন ভূখণ্ডে একটি বাফার জোন বা নিরপেক্ষ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যেটাকে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ‘বাধা প্রদানের কৌশল’ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এই বাফার অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কারণ হচ্ছে ইসরায়েল তার উত্তরাঞ্চলে বসবাসকারী সম্প্রদায়গুলোকে হিজবুল্লাহর রকেট হামলা থেকে রক্ষা করতে চায়।
বহু বছরের মার্কিন সামরিক সহায়তার কারণে সেনাবাহিনীর সক্ষমতা এখন অনেক বেড়েছে আর হিজবুল্লাহ এখন অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছে। কিন্তু হিজবুল্লাহ সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে চাইবে; তার বড় কারণ হলো, এ ধরনের সংঘাত লেবাননের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যাবে। এতে হিজবুল্লাহ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।লেবাননে প্রায় কেউই তৃতীয় চিত্রটা বাস্তবে সম্ভব বলে মনে করে না। কারণ, হিজবুল্লাহর কাছে অস্ত্রসমর্পণ করার মানে হচ্ছে রাজনৈতিক আত্মহত্যা। লেবাননের সবাই এখন প্রথম চিত্রটি নিয়েই উদ্বিগ্ন। সম্ভাব্য সংঘাত এড়াতে লেবাননের নেতারা ও জেনারেল হায়কাল সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। তবে হিজবুল্লাহর জন্যও লেবাননের সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়াটা কম ক্ষতির কারণ হবে না।
দ্বিতীয় চিত্রটা মূলত বর্তমান বাস্তবতারই একটি ভিন্ন সংস্করণ। এ ক্ষেত্রে লেবাননের সেনাবাহিনী লিতানি নদীর দক্ষিণে অবস্থিত হিজবুল্লাহর সামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করবে আর হিজবুল্লাহ সেটি দেখেও না দেখার ভান করবে। একই সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনী তাদের অবস্থান বজায় রাখবে।
তৃতীয় চিত্রটা হলো হিজবুল্লাহ অস্ত্র পরিত্যাগ করে একটি সাধারণ রাজনৈতিক দলে পরিণত হবে, আর ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র–সমর্থিত পরিকল্পনায় সম্মতি জানিয়ে লেবাননের দখলকৃত এলাকা থেকে চলে যাবে।
আরও পড়ুনইসরায়েলের আক্রমণ সামলে হিজবুল্লাহ যেভাবে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে১৯ নভেম্বর ২০২৪বহু বছরের মার্কিন সামরিক সহায়তার কারণে সেনাবাহিনীর সক্ষমতা এখন অনেক বেড়েছে আর হিজবুল্লাহ এখন অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছে। কিন্তু হিজবুল্লাহ সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে চাইবে; তার বড় কারণ হলো, এ ধরনের সংঘাত লেবাননের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যাবে। এতে হিজবুল্লাহ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।
সব বিচারে দ্বিতীয় চিত্রটিই বেশি সম্ভাবনাময়। তবে এটি কার্যকর করতে হলে জেনারেল হায়কালের আরও বেশি সম্পদের প্রয়োজন পড়বে। এমনকি হিজবুল্লাহ পুরোপুরি সহযোগিতা করলেও এটি শেষ করতে ১২ থেকে ১৬ মাস সময় লাগতে পারে।
সব রাজনৈতিক জটিলতা থাকা সত্ত্বেও লেবাননের সেনাবাহিনীর মূল দায়িত্ব হলো ধর্মীয়ভাবে বৈচিত্র্যের একটি দেশে স্থিতিশীলতার নিশ্চয়তা দেওয়া। যদি সেনাবাহিনী এই দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়, তবে নিরস্ত্রীকরণের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত অর্থহীন হয়ে যাবে।
● বিলাল ওয়াই সাব চ্যাথাম হাউসের অ্যাসোসিয়েট ফেলো
টাইম ম্যাগাজিন থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে সংক্ষিপ্তাকারে অনূদিত
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল ব নন র স ন ব হ ন র জন ত ক ইসর য় ল মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
বিন্নি চালের পিঠার রেসিপি
উপকরণ
বিরুই চাল (বিন্নি): ১ কেজি
নারকেলকুচি: ২ কাপ
চিনি: আধা কাপ
পানি: ৪ টেবিল চামচ
লবণ: স্বাদমতো
আরও পড়ুনবিলিম্বির টক আচারের রেসিপি১ ঘণ্টা আগেপ্রণালিপ্রথমে ১ কেজি চাল নিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে ভিজিয়ে রাখব ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা।
এরপর উঠিয়ে ঝাঁজরিতে পানি ঝরিয়ে কাগজের ওপর চালগুলো ছড়িয়ে ফ্যানের বাতাসে শুকিয়ে নিন।
এবার গ্রাইন্ডারে গুঁড়া করে নিন।
চালের গুঁড়ার সঙ্গে পানি ও লবণ মিশিয়ে মেখে নিন।
মুঠো করা যাবে, এমন অবস্থায় মিশ্রণটি আনতে হবে। যদি মুঠ হয়, তাহলে বুঝতে হবে পিঠার জন্য গুঁড়া তৈরি।
এবার চুলায় তাওয়া বসিয়ে গরম করে নিন।
প্রথমে হাতের সাহায্যে গুঁড়া গোল করে তাওয়ার ওপর ছড়িয়ে দিন।
চিনি, নারকেলকুচি দিয়ে ২ থেকে ৩ মিনিট ঢাকনা দিয়ে ঢেকে অপেক্ষা করতে হবে।
এরপর ঢাকনা খুলে ২ ভাঁজ অথবা ৩ ভাঁজ করলে হয়ে যাবে বিন্নি চালের পিঠা।
গুঁড়ার সঙ্গে রং মিশিয়ে চেলে নিয়ে রঙিন বিন্নি পিঠা বানাতে পারেন।
আরও পড়ুনকরমচার টক–ঝাল–মিষ্টি আচারের রেসিপি১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫