জয়পুরহাট রেলওয়ে স্টেশনের প্রধান বুকিং সহকারী মনিরুল করিমের বিরুদ্ধে এক ট্রেনযাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে জয়পুরহাট রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী যাত্রী রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপকের (জিএম) কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

হেনস্তার শিকার ট্রেনযাত্রীর নাম আবদুর রাজ্জাক আকন্দ। তিনি জয়পুরহাট জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কর্মরত।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আবদুর রাজ্জাক আকন্দ পাবনার ঈশ্বরদী যাওয়ার জন্য দুপুর ১২টার দিকে জয়পুরহাট রেলস্টেশনে আসেন। তিনি দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কাটতে কাউন্টারে লাইনে দাঁড়ান এবং ২০০ টাকার নোট দেন। কাউন্টারের প্রধান বুকিং সহকারী মনিরুল করিম তাঁকে ১৩৫ টাকা ভাড়া দিতে বলেন। কিন্তু আবদুর রাজ্জাক আকন্দ খুচরা দিতে না পারায় তাঁদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মনিরুল করিম কাউন্টার থেকে বের হয়ে এসে যাত্রী আবদুর রাজ্জাককে টেনেহিঁচড়ে কাউন্টারের ভেতরে নিয়ে যান বলে অভিযোগ ওঠে। পরে স্টেশনমাস্টার এসে তাঁদের দুজনকে তাঁর কক্ষে নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করেন।

ঘটনাটি নিয়ে আবদুর রাজ্জাক আকন্দ পরে রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপকের কাছে ই-মেইলে একটি লিখিত অভিযোগ পাঠান। লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, টিকিট কাটার সময় ২০০ টাকার নোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে বুকিং সহকারী মনিরুল করিম ওরফে মুন বাইরে এসে তাঁকে ধরে কাউন্টারের ভেতরে নিয়ে গিয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এ সময় তাঁর ট্রাভেল ব্যাগ ও পকেটে থাকা ৩০ হাজার টাকা হারিয়ে যায়। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, প্রধান বুকিং সহকারী যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং টিকিটের কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত; তিনি যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করেন।

ট্রেনযাত্রী আবদুর রাজ্জাক আকন্দ বলেন, ‘রেলস্টেশনের প্রধান বুকিং সহকারী আমাকে হেনস্তা করেছেন। এ ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে আমি ই-মেইলে রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।’

অভিযোগ অস্বীকার করে স্টেশনের প্রধান বুকিং সহকারী মনিরুল করিম বলেন, ‘আমি কোনো যাত্রীকে টেনে নিয়ে আসিনি। ওই যাত্রী ২০০ টাকার নোট দিয়েছিলেন, কিন্তু ভাড়া ছিল ১৩৫ টাকা। কাউন্টারে খুচরা টাকা না থাকায় তাঁকে লাইনের একটু পাশে দাঁড়াতে বলেছিলাম, যেন অন্য যাত্রীদের কাছ থেকে খুচরা নিয়ে দিতে পারি। কিন্তু তিনি তাৎক্ষণিক টাকা ফেরত চান। এ নিয়েই সামান্য কথা-কাটাকাটি হয়েছে।’

জয়পুরহাট স্টেশনমাস্টার রফিক চৌধুরী বলেন, ‘বুকিং সহকারী মনিরুল করিম যা করেছে তা ঠিক হয়নি। আমরা ঘটনাটি তাৎক্ষণিকভাবে মিটমাট করে দিয়েছি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক উন ট র র লওয় সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

গণতন্ত্রকে আবার ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে: মির্জা ফখরুল

৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে দলের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন জানিয়েছে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকালে তারা রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে পুস্পস্তবক অর্পন করেন। এসময় সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

পরে সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল বলেন, “আজকের দিনটি শুধু বিএনপির নয়, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত মানুষের কাছেও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ৭ নভেম্বরের চেতনা আমাদের শেখায় জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা ছাড়া গণতন্ত্র টিকে থাকতে পারে না।”

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে আবার ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, “আজকে বাংলাদেশে বিভিন্ন রকম, এই গণ-অভ্যুত্থানের পরে বিভিন্ন রকমভাবে একটা প্রচেষ্টা, চক্রান্ত চলছে গণতন্ত্রকে আবার ধ্বংস করার জন্য।”

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস আমাদের সেই পথেই যেতে অনুপ্রাণিত করে, যে পথে সত্যিকার অর্থে আমরা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে পারব। একটা সমৃদ্ধ রাষ্ট্র নির্মাণ করতে পারব। জনগণের ভোটের অধিকারকে সত্যিকার অর্থে প্রতিষ্ঠা করতে পারব। বিচারের অধিকার নিশ্চিত করতে পারব। সেই লক্ষ্যেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, বিএনপি এগিয়ে যাব। বিএনপি সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে।”

১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, “জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্দী থেকে উদ্ধার করে রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব অর্পণের কাজটি বাংলাদেশের অগ্রগতির মোড় ঘোরানো দিক ছিল। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন।”

তিনি আরো বলেন, “রাষ্ট্র পরিচালনার চার বছরে জিয়াউর রহমান দেশে আমূল পরিবর্তন আনেন। তিনি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন, তা দেশকে পরবর্তীকালে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।”

বিএনপিকে আলোচনায় বসতে জামায়াতের আহ্বান সম্পর্কিত বিষয়ে মির্জা ফখরুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি নতুন করে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পাঠানো বক্তব্যই বিএনপির চূড়ান্ত বক্তব্য বলে উল্লেখ করেন বিএনপির মহাসচিব।

এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমদসহ দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে সকাল থেকে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিক দলসহ বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। তারা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে এসে নেতারা সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ