পেঁয়াজের দাম প্রতিবছর বাড়ে কেন?
Published: 7th, November 2025 GMT
বাঙালির রান্নাঘরের অন্যতম প্রধান উপাদান হলো পেঁয়াজ। কিন্তু প্রতিবছর একটা নির্দিষ্ট সময়ে এই পেঁয়াজের ঝাঁঝে পুড়তে হয়। বাজারে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি এখন দেশের সাধারণ মানুষের কাছে একটি বার্ষিক আতঙ্ক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। কিন্তু এই অস্থিরতার কারণ কী?
সাধারণ সরবরাহের ঘাটতি, নাকি এর আড়ালে লুকিয়ে রছে অসাধু ব্যবসায়ীদের সংঘবদ্ধ কারসাজি? কেন সরকার শত চেষ্টা করেও এই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হচ্ছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এইসব প্রশ্নের উত্তরে বেশ কিছু তথ্য জানা গেছে।
উৎপাদন ও সরবরাহের সমস্যা:
দেশে সাধারণত শীতকালে (রবি মৌসুম) পেঁয়াজ উৎপাদন হয় এবং তা সংরক্ষণ করে সারা বছরের চাহিদা মেটানো হয়। গ্রীষ্মকালে দেশি পেঁয়াজ প্রায় শেষ হয়ে এলে বাজারে সরবরাহ কমে যায়। নতুন পেঁয়াজ (মুড়িকাটা) বাজারে আসার আগ পর্যন্ত একটি সংকটকাল তৈরি হয়। পেঁয়াজ উৎপাদনের বীজ, সার এবং শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির কারণে পেঁয়াজের উৎপাদন ব্যয় ক্রমাগত বাড়ছে বলে দাবি করছে বিক্রেতারা।
এছাড়া দেশে পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য আধুনিক ও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। ফলে উৎপাদনের পর প্রায় ২৫ শতাংশ পেঁয়াজ সংরক্ষণ, পরিবহন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের সময় নষ্ট হয়ে যায়। এই বিপুল পরিমাণ নষ্ট হওয়া সরবরাহকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ফলে বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে।
মজুতদার ও অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি:
বাজারে অতি মুনাফার লোভে এক শ্রেণির মজুতদার ও অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি করে প্রতি বছর মৌসুমের শেষে যখন সরবরাহ কমতে শুরু করে তখন কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পেঁয়াজ গুদামজাত করে রাখেন এবং বাজারে সরবরাহ কমিয়ে দেন। ফলে বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে।
সাধারণ খুচরা বিক্রেতারা বলছে, পেঁয়াজের দামের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি স্বাভাবিক নিয়মে হয় না বরং একটি পরিকল্পিত সিন্ডিকেট এর পেছনে কাজ করে। যারা বিভিন্ন অজুহাতে দাম বাড়িয়ে দ্রুত বিপুল মুনাফা লুটতে চায়। এর সাথে জড়িত বড় বড় কোম্পানির আমদানিকারক। এছাড়া সরকারকে চাপে রাখতে অনেক সময় এই ধরনের সিন্ডিকেট পরিকল্পিতভাবে দাম বাড়িয়ে সরকারকে আমদানির অনুমতি দিতে বাধ্য করার চেষ্টা করে থাকে। ফলে সরকার বাধ্য হয়ে আমদানির অনুমতি দেয়।
আমদানি নির্ভরতা ও ভারতের রপ্তানি নীতি:
দেশে অভ্যন্তরীণ চাহিদা পুরোপুরি মেটানোর মতো পর্যাপ্ত ও দীর্ঘস্থায়ী মজুত না থাকায় বাংলাদেশকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। মূলত, প্রতিবেশী দেশ ভারতের উপর এই নির্ভরতা অনেক বেশি।
এই সুযোগে ভারতে যখন পেঁয়াজের দাম বাড়ে বা উৎপাদন কম হয়, তখন সেখানকার সরকার তাদের অভ্যন্তরীণ বাজার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পেঁয়াজ রপ্তানিতে শুল্ক আরোপ করে আবার কখনো কখনো পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়। এর সরাসরি প্রভাব পড়ে বাংলাদেশের বাজারে, কারণ আমদানির সুযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশি পেঁয়াজের ওপর চাপ বাড়ে এবং দাম লাফিয়ে বাড়ে।
এছাড়া দেশি কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য অনেক সময় সরকার নির্দিষ্ট সময়ে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিতে দেরি করে। এই বিলম্বও বাজারে সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে দাম বাড়িয়ে দেয় অতি মুনাফার লোভী ব্যবসায়ীরা।
সংরক্ষণে দুর্বলতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ:
দেশে পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত ও আধুনিক অবকাঠামো নেই। ফলে কৃষকের ঘরে বা সাধারণ গুদামে দীর্ঘ সময় রাখলে আর্দ্রতা ও অন্যান্য কারণে অনেক পেঁয়াজ পচে নষ্ট হয়ে যায়। বিক্রেতারা বলছে যদি পেঁয়াজ সংরক্ষণে জন্য আধুনিক হিমাগার তৈরি করা হয় তাহলে কিছু বাজারে সরবরাহ ঠিক থাকলে প্রতিবছর পেঁয়াজ দাম বাড়ার প্রবণতা কমে আসবে।
এছাড়া অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, বন্যা বা বৈরী আবহাওয়ার জন্য পেঁয়াজের ফলনকে সরাসরি প্রভাবিত করে। আবার, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত মজুত করা পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ার হার অনেক বাড়িয়ে দেয়। ফলে বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে।
কৃষক ও ক্রেতাদের মনোভাব:
বেশি লাভের আশায় অনেক সময় কৃষক তাদের উৎপাদিত পেঁয়াজ মজুত করে রাখে। আবার এই মজুত করা পেঁয়াজ বৈরী আবহাওয়ার জন্য অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়। ফলে বাজারে পেঁয়াজের সংকট দেখা যায়। যাতে দাম বেড়ে যায়।
আবার এক শ্রেণির ক্রেতা আছে যারা দাম বাড়ার প্রবণতা শুরু হলেই আতঙ্কিত হয়ে অতিরিক্ত পেঁয়াজ কিনে মজুত করা শুরু করেন। যা বাজারে বিদ্যমান সংকটকে আরো অস্থির করে তোলে। এই ধরনের ক্রেতাদের জন্য বাজারে পেঁয়াজের দাম আরও দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে।
সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য মতে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম ৪০ শতাংশ বেড়েছে। মাসের ব্যবধানে যা বেড়েছে ৪৪.
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, গত অর্থবছরে বাংলাদেশে পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় ৩৬ লাখ টন। উৎপাদন হয়েছিল ৩৪ লাখ ১৭ হাজার টন। এ অর্থবছরে পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৮ লাখ টন। চলতি মৌসুমে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন প্রত্যাশিত মাত্রার কাছাকাছি হয়েছে। এবার উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৩৬ লাখ টন।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নিউমার্কেট, রায়েরবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোতে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে যানা যায়, গত এক সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৪০ টাকা। গত সপ্তাহের প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ২২৫ টাকা। বিক্রেতারা আশঙ্কা করছে সামনের দিনগুলোতে পেঁয়াজের দাম আরো বাড়তে পারে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা শফিক বেপারির কাছে হঠাৎ দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “এটা তো আর নতুন কথা নয়! প্রতিবছর এই সময়ে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিছুদিনের মধ্যেই দেশি পেঁয়াজ বাজারে আসবে, এই মুহূর্তে আমদানি অনুমতি যাতে দেওয়া হয় সেজন্য বড় বড় ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। কিন্তু সাধারণ ক্রেতারা এসে তাদের ক্ষোভ আমাদের উপর প্রকাশ করে। পেঁয়াজের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে আমাদের কোন হাত নেই।”
রাজধানীর নিউমার্কেটের আরেক পেঁয়াজ ব্যবসায়ী নাজমুল সিকদার রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “গত সপ্তাহে পেঁয়াজ বিক্রি করেছি ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। এ সপ্তাহে আমাদের কিনতে হয়েছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়। পরিবহন, লেবার, দোকান ভাড়া ও কর্মচারী খরচ দিয়ে ১২০ টাকা বিক্রি করলে আমাদের লস হয়। তারপরও ১২০ টাকা বিক্রি করতে হয়। পাইকারি পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম এখন বাড়তি। আমরাও চাহিদা তুলনায় কম নিয়েছি। কিন্তু এক শ্রেণির ক্রেতা আছে যারা দাম বাড়বে শুনে বেশি করে কিনে রাখে। তাদের জন্য এই সমস্যাটা বেশি সৃষ্টি হয়। কারন যারা কম কেনে তখন তারা এসে আর নিতে পারে না। পাইকারি বিক্রেতারা আমাদেরকে জানিয়েছে পেঁয়াজের দাম আরো বাড়তে পারে। তাই খুচরা ব্যবসায়ীরা যে যার মত করে পারছে নিয়ে রাখছে।”
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজের পাইকারি বিক্রেতারা শাহিন হাওলাদার রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “যদি সরবরাহ বাড়ে অথবা সরকার যদি পেঁয়াজ আমদানের অনুমতি দেয় তাহলে সামনের দাম কমতে পারে। অন্যথায় দাম কমার কোন সম্ভাবনা নেই। দেশে এখন পেঁয়াজের মজুত সেইভাবে নেই। আর এবার বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজ উৎপাদনের প্রথমদিকে অনেকের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসা পর্যন্ত দাম বলে আশঙ্কা করছি।”
রাজধানীর নিউমার্কেটে পেঁয়াজ কিনতে আসা গৃহিণী কাকলী আক্তার বলেন, “বাংলাদেশ সবকিছু সম্ভবের দেশ। যে যার মত করে পারছে সে সেভাবে কামিয়ে নিচ্ছে। এদেশের সাধারণ মানুষের কথা কেউ কখনো ভাবেনি। গত সপ্তাহে পেঁয়াজ কিনেছি ৮০ টাকায়, এ সপ্তাহের পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ১২০ টাকায়! এর থেকে দুঃখের বিষয় কি আছে! এখানে সাধারণ মানুষের কথার কোন মূল্য নেই। আমাদের তো আয় ইনকাম বাড়ে না, কিন্তু দিনকে দিন সবকিছু দাম বাড়তে থাকে।”
ঢাকা/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরবর হ কম ব যবস য র উৎপ দ আম দ র র জন য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক বিলিয়ন ডলারের সয়াবিন আনা হবে
বাংলাদেশের তিনটি বড় শিল্পগোষ্ঠী যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক বছরে এক বিলিয়ন বা ১০০ কোটি মার্কিন ডলারের সয়াবিনবীজ আমদানি করবে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ, সিটি গ্রুপ ও ডেল্টা অ্যাগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ।
এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইউএস সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিল (ইউএসএসইসি) ও ইউএস সয়ের সঙ্গে দেশীয় তিন প্রতিষ্ঠান আগ্রহপত্র (এলওআই) সই করেছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকার একটি হোটেলে আয়োজিত এলওআই স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য আফেয়ার্স ট্রেসি জ্যাকবসন, ইউএসএসইসির নির্বাহী পরিচালক কেভিন এম রোপকি; মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও পরিচালক তানজিমা বিনতে মোস্তফা; সিটি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. হাসান; ডেল্টা অ্যাগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের এমডি আমিরুল হক; স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নাসের এজাজ বিজয়সহ প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ডেল্টা অ্যাগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের এমডি আমিরুল হক বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের মান সব সময়ই অন্যদের চেয়ে ভালো থাকে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিনবীজের সবচেয়ে ইতিবাচক দিক। আমাদের সামনে আরও অনেক সুযোগ রয়েছে। আমরা চাইলে বাংলাদেশে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) ও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করতে পারি। দুই দেশের মধ্যে বর্তমানে প্রায় ছয় বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য–ঘাটতি রয়েছে। আমরা এলপিজি, অপরিশোধিত তেল ও সয়াবিন আনতে পারলে দুই দেশের মধ্যে সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হবে।’
মেঘনা গ্রুপের পরিচালক তানজিমা বিনতে মোস্তফা বলেন, ‘আমরা গর্বিত যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিন আমদানির মাধ্যমে বাংলাদেশের খাদ্য ও পশুখাদ্যের সরবরাহব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার অংশীদারত্বে যুক্ত হতে পেরেছি। গত এক বছরে আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছি। এ বছর মেঘনা গ্রুপ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১০ লাখ টন সয়াবিন আমদানির পরিকল্পনা নিয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে সেই লক্ষ্য অর্জনের কাছাকাছি পৌঁছে গেছি।’
তানজিমা বিনতে মোস্তফা আরও বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে বেছে নিয়েছি তাদের পণ্যের মান, পরিবহনব্যবস্থা ও স্বচ্ছ নিয়মভিত্তিক বাণিজ্যের কারণে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আগ্রহপত্র বা এলওআই স্বাক্ষর দেশে খাদ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা, কৃষিশিল্পকে আরও জোরদার করা এবং টেকসই সরবরাহব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। বর্তমানে সয়াবিন আমদানিতে যে শুল্ককাঠামো রয়েছে, তা আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাধার সৃষ্টি করছে। শুল্ককাঠামো ঠিক করা হলে পোলট্রি ও মৎস্য খাতের খাদ্যের দাম সাশ্রয়ী থাকবে।’
আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে বেছে নিয়েছি তাদের পণ্যের মান, পরিবহনব্যবস্থা ও স্বচ্ছ নিয়মভিত্তিক বাণিজ্যের কারণে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আগ্রহপত্র বা এলওআই স্বাক্ষর দেশে খাদ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা, কৃষিশিল্পকে আরও জোরদার করা এবং টেকসই সরবরাহব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সাহায্য করবেতানজিমা বিনতে মোস্তফা, পরিচালক, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ।সিটি গ্রুপের এমডি মো. হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশের খাদ্য সরবরাহব্যবস্থায় গুণগত মান বজায় রাখা ও তা টেকসই করে তুলতে আমরা সব সময় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা উচ্চমানের মার্কিন সয়াবিনের ব্যবহার বাড়াতে চাই। এতে ভোক্তাদের কাছে উন্নতমানের পণ্য পৌঁছে দেওয়া যাবে। তাতে দেশের ক্রমবর্ধমান প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হবে। এই এলওআই দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে এবং জ্ঞান ও প্রযুক্তি বিনিময় এবং কৃষি উদ্ভাবন ও অগ্রগতির নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে।’
এলওআই স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য আফেয়ার্স ট্রেসি জ্যাকবসন বলেন, ‘আমরা আসলে দুই দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক সম্পর্কের কথা বলছি, যেখানে কৃষি একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। গত বছর যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে ৭৭ কোটি ৯০ লাখ ডলারের বাণিজ্য হয়েছে। আর এ বছর তা এক বিলিয়ন ডলারের বেশি হবে বলে আশা করছি।’
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী সয়াবিনবীজ আমদানি হয় মূলত ব্রাজিল ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে। গত অর্থবছরে সব মিলিয়ে ৭৮ কোটি ডলারের ১৭ লাখ ৩৫ হাজার টন সয়াবিন আমদানি হয়েছিল। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আনা হয়েছিল ৩৫ কোটি ডলারের সয়াবিনবীজ, যা এবার আরও বাড়তে পারে বলে ব্যবসায়ীরা মনে করেন।