কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন
Published: 7th, November 2025 GMT
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার একটি গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল, সেখানে খালের ওপর একটি সেতু হবে। প্রায় তিন বছর আগে তাঁদের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু নির্মম পরিহাস হচ্ছে সেই সেতুর কোনো সংযোগ সড়ক নেই। ফলে সেতুটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো খালের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। এটি এ দেশের খুবই পরিচিত দৃশ্য হলেও এর মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে আমাদের সরকারগুলোর উন্নয়ন ভাবনায় কতটা গলদ আছে।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ছেংগারচর পৌরসভার জীবগাঁও গ্রামে প্রায় ৩৪ লাখ টাকা খরচ করে খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে একটি বিশাল বক্স কালভার্ট, কিন্তু তার দুই পাশে সংযোগ সড়ক (অ্যাপ্রোচ রোড) নেই। এই অসম্পূর্ণ কালভার্টটি পাঁচটি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার বাসিন্দার জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার স্থানীয় বিদ্যালয়ের এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থী, যারা প্রতিদিন নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো পার হয়ে কালভার্টে ওঠানামা করতে গিয়ে খালের পানিতে পড়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে নির্মিত কালভার্টটির কাজের শর্তেই স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল, নির্মাণের সময় দুই পাশে ১০ মিটার দীর্ঘ সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে হবে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মামুন অ্যান্ড নুরজাহান সেই শর্ত লঙ্ঘন করে কাজ ফেলে রেখে গেছে। এখানে পৌর কর্তৃপক্ষের ভূমিকা আরও বেশি উদ্বেগজনক। পৌর কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসন ঠিকাদারকে দায়ী করেছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সরকারি প্রকল্পের কাজ চুক্তি অনুযায়ী সম্পন্ন না হলে পৌর কর্তৃপক্ষ কী করে ঠিকাদারকে তার বিল পরিশোধ করল? তিন বছর ধরে কেন অবহেলা? যদি ঠিকাদার গাফিলতি করেও থাকে, তবে পৌরসভার একজন প্রকৌশলী বা নির্বাহী কর্মকর্তা কী কারণে টানা তিন বছর ১৫ হাজার মানুষের দুর্ভোগ উপেক্ষা করলেন? কেন চুক্তি অনুযায়ী ঠিকাদারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলো না বা দ্রুত অন্য ঠিকাদারের মাধ্যমে কাজটি সম্পন্ন করা হলো না?
জীবগাঁওয়ের কালভার্টটি উন্নয়ন প্রকল্পের নামে জনগণের সঙ্গে একধরনের প্রতারণা। যে কালভার্টটি মানুষের ঝুঁকি কমিয়ে জীবনযাত্রা সহজ করার কথা, সেটি এখন উল্টো নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো নির্ভর করে ঝুঁকি ও দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে। এ ঘটনা স্পষ্ট করে যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করার চেয়ে প্রকল্প বরাদ্দ আনতেই বেশি আগ্রহী। ছেংগারচর পৌরসভাকে অবিলম্বে এই ভোগান্তি দূর করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা কোনো অজুহাত শুনতে চাই না। সংযোগ সড়ক দুটি দ্রুত করে দেওয়া হোক। ঠিকাদার ও এ প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স য গ সড়ক প রকল প ব যবস থ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কেরাণীগঞ্জে ৫ দিনের জোড় ইজতেমা শুরু
ঢাকার কেরাণীগঞ্জে তাবলিগ জামাতের পাঁচ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমা শুরু হয়েছে। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকালে উপজেলার শাক্তা ইউনিয়নের মেকাইল গ্রামের একটি মাঠে ফজরের নামাজের পর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ইজতেমার অনুষ্ঠানিকতা।
প্রথম দিনই ৬৪ জেলার সাথীদের উপস্থিতিতে বিশাল মাঠটি কানায় কানায় ভরে যায়। যে সমস্ত সাথীরা তিন চিল্লায় সময় দিয়েছেন এমন ব্যক্তিরা ইজতেমায় অংশ নিচ্ছেন।
আরো পড়ুন:
সাদপন্থিদের মসজিদে প্রবেশ ও আমল নিষিদ্ধ চান জুবায়েরপন্থিরা
সাদপন্থীদের নিষিদ্ধের দাবিতে রাঙামাটি ও দিনাজপুরে বিক্ষোভ
ঢাকার কাকরাইল মসজিদের শীর্ষ মুরুব্বি ও তাবলিগ জামাতের আহলে শূরা সৈয়দ ওয়াসি ফুল ইসলাম জানান, পাঁচ দিনব্যাপী এই জোড় তাবলিগ একটি ঐতিহ্যবাহী ও গুরুত্বপূর্ণ জামায়েত। এর সফলতার ওপর টঙ্গীর ময়দানে বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি ও আগামী এক বছরের কাজের অগ্রগতি নির্ভর করে।
তিনি জানান, এবার ২০টি দেশের প্রায় ৬০০ বিদেশি মেহমান উপস্থিত হয়েছেন। তারা আমাদের দেশের বিভিন্ন জেলায় দাওয়াতি কাজ করবেন। আমাদের এই ময়দানে ৩ লাখ সাথী এই জোড় ইজতেমায় উপস্থিত থাকবেন।
ইজতেমা ময়দান পরিদর্শন শেষে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, “ইজতেমা ময়দানে লাখো মুসল্লির নিরাপত্তায় পোশাক ও সাদা পোশাকে পুলিশের একধিক টিম কাজ করছে। বিদেশ থেকে আগত মুসুল্লিদের নিরাপত্তা ও সার্বিক সহযোগিতায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
ঢাকা/শিপন/মাসুদ