আক্কেলপুরে এক মঞ্চে বিএনপির নেতারা, দলীয় প্রার্থীর হাতে হাত রেখে কাজ করার শপথ
Published: 7th, November 2025 GMT
জয়পুরহাট-২ (আক্কেলপুর-কালাই-ক্ষেতলাল) আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়নকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে অন্তঃকোন্দল চলছিল। এ আসনে অর্ধডজনেরও বেশি নেতা মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। একেকজনের পক্ষে স্থানীয় উপজেলা ও পৌর বিএনপির শীর্ষ নেতারা অবস্থান নিয়েছিলেন। এতে দলটির ভেতরে প্রকাশ্য বিভক্তি তৈরি হয়।
শেষ পর্যন্ত এ আসনে সাবেক আমলা আবদুল বারী বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন। এলাকায় তিনি ‘ডিসি বারী’ নামে পরিচিত। দলের বিভক্তি কাটাতে আক্কেলপুর উপজেলার বিএনপি নেতারা তাঁর হাতে হাত রেখে ধানের শীষের বিজয়ের শপথ করেছেন।
আরও পড়ুনজয়পুরহাট-২ আসন আক্কেলপুরে বিএনপির দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, আহত ২২১ ঘণ্টা আগেগতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আক্কেলপুর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের তৃতীয় তলার সম্মেলনকক্ষে একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। আক্কেলপুর উপজেলা ও পৌর বিএনপি সভার আয়োজন করে। এতে দলের মনোনীত প্রার্থী আবদুল বারী প্রধান অতিথি ছিলেন।
বিএনপির দলীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক এ এইচ এম ওবায়দুর রহমান ওরফে চন্দন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা, সাবেক সচিব আবদুল বারী, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতা সিরাজুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সাবেক নেতা আব্বাস আলীসহ অনেকে গণসংযোগ চালিয়ে আসছিলেন। শেষ পর্যন্ত দলীয় মনোনয়ন পান আবদুল বারী। উপজেলা ও পৌর বিএনপির শীর্ষ নেতারা আগে থেকে ভিন্ন ভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছিলেন। মতবিনিময় সভায় সেই বিভক্তির অবসান ঘটানোর চেষ্টা হয়। সভার একপর্যায়ে দলীয় প্রার্থীর হাতে হাত রেখে শপথ নেন নেতারা। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, সবাই হাতে হাত রেখে শপথ করছেন এবং উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামরুজ্জামান শপথ বাক্য পাঠ করছেন।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামরুজ্জামান। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আরিফ ইফতেখার, সাবেক পৌর মেয়র আলমগীর চৌধুরী, পৌর বিএনপির সভাপতি আফাজ উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সাবেক কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম, সাবেক কাউন্সিলর আবদুর রউফসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুল বারী বলেন, ‘আমরা যাঁরা বিএনপি করি, সবাই এক পরিবারের সদস্য। কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করতে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে যেতে হবে। আমি সরকারি চাকরি করে এসেছি। আজীবন নিজেকে জনসেবায় নিয়োজিত রেখেছি। তাই শুধু এমপি নয়, জনগণের সেবক হিসেবে আমৃত্যু কাজ করতে চাই। আবারও নিজেকে জনগণের সেবক হিসেবে উৎসর্গ করতে আপনাদের কাছে এসেছি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল ব র ব এনপ র স প র ব এনপ ক জ কর উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
‘পরিস্থিতির শিকার হয়ে বাচ্চা রেখে গেলাম, দয়া করে কেউ নিয়ে যাবেন’
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পঞ্চম তলায় শিশু ওয়ার্ডের বেডে এক নবজাতক কন্যাসন্তান রেখে গেছেন স্বজনেরা। নবজাতকের বিছানার পাশে একটি বাজারের ব্যাগে চিরকুট পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। আজ শুক্রবার দুপুরে এ ঘটনা জানাজানি হলে শিশুটিকে দত্তক নিতে হাসপাতালে অনেকেই ভিড় করছেন।
নবজাতকটি বর্তমানে হাসপাতালের পেডিয়ার্টিক ওয়ার্ডে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে আছে। সে শারীরিকভাবে সুস্থ আছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গতকাল সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে ওই নবজাতককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের ভর্তি রেজিস্ট্রারে ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে ইনছুয়ারা, শাহিনুর, আলাদিপুর, ফুলবাড়ী। আর বাজারের ব্যাগে নবজাতকের মায়ের রেখে যাওয়া চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘আমি মুসলিম। আমি একজন হতোভাগি। পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে বাচ্চা রেখে গেলাম। দয়া করে কেউ নিয়ে যাবেন। বাচ্চার জন্মতারিখ ৪ নভেম্বর ২০২৫ (মঙ্গলবার)। এগুলো সব বাচ্চার ওষুধ...।’
আজ বিকেলে হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসক গোলাম আহাদ বলেন, পঞ্চাশোর্ধ্ব এক দম্পতি গতকাল সন্ধ্যায় শিশুটিকে নিয়ে এসে ভর্তি করতে বলেন। নিজেদের পরিচয় দেন শিশুটির নানা-নানী হিসেবে। তিনি শিশুটির মায়ের খোঁজ করলে তাঁরা বলেন, মা নিচে আছেন। তিনি মাকে নিয়ে আসতে বললে বাচ্চাসহ ওই দম্পতি বেড়িয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পর শিশু ওয়ার্ডের বাইরে একটি বেডে বাচ্চাটিকে একা থাকতে দেখে অন্যরা বিষয়টি জানান। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও শিশুটির মা ও স্বজনদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। শিশুটির বিছানায় একটি বাজারের ব্যাগে কিছু ওষুধ, ডায়াপার ও জামাকাপড় পাওয়া গেছে।
ইন্টার্ন চিকিৎসক গোলাম আহাদ আরও বলেন, স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের যে সময়কাল, তার আগেই বাচ্চাটির জন্ম হয়েছে। শিশুটি বর্তমানে সুস্থ আছে। ফটোথেরাপি দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্মারে রাখা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, একটি ব্যাগে ভরে বাচ্চাটিকে হাসপাতাল পর্যন্ত এনেছেন তার স্বজনেরা। এরই মধ্যে অনেকেই শিশুটিকে দত্তক নিতে হাসপাতালে যোগাযোগ করেছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরবর্তী সময় শিশুটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।