কাঁধে-কোলে করে যাত্রীদের নৌযানে তোলেন তাঁরা
Published: 7th, November 2025 GMT
অদূরে ভেড়া নৌযান থেকে একের পর এক কোলে-কাঁধে করে পাড়ে নিয়ে আসা হচ্ছে যাত্রীদের। হঠাৎ দেখলে মনে হবে, কোনো দুর্যোগের কবল থেকে তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে আসা হচ্ছে। যদিও সত্যি হলো, গায়ে কাদা না লাগাতেই অন্যের কাঁধে-কোলে চড়ে বসেছেন তাঁরা।
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটে প্রতিদিনই দেখা মেলে এই দৃশ্যের। ভাটার সময় যাত্রীদের টাকার বিনিময়ে এভাবেই নৌযানে আনা-নেওয়া করেন একদল শ্রমিক।
গত শনিবার গুপ্তছড়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রীদের নৌযানে আনা-নেওয়ার প্রায় ১৫ জন শ্রমিক জেটিতে অবস্থান করছেন। তাঁদের কেউ জেটির রেলিংয়ে হেলান দিয়ে পার করছিলেন অলস সময়। দুজন দাঁড়িয়ে ছিলেন জেটি থেকে নামার সিঁড়ির কাছে। কাউকে ঘাটে দেখলেই নৌযানে যাবেন কি না, জানতে চাচ্ছেন।
শ্রমিকদের কয়েকজনের সঙ্গে ঘাটে কথা হয়। তাঁরা জানান, তাঁদের অনেকেই ফাইবারের তৈরি ছোট নৌযান লাল বোটের শ্রমিক। বিআইডব্লিউটিসির জাহাজ এমভি মালঞ্চ থেকে জেটিতে যাত্রী ওঠানামা করে লাল বোট। তবে জাহাজটি কেবল একবার আসা–যাওয়া করে ঘাটে, যার কারণে তাঁদের বাকি সময়টা অলস কাটত। তবে গত বছর থেকে ভাটার সময় স্পিডবোটের যাত্রীদের পার করে বাড়তি উপার্জন করছেন তাঁরা।
আগে বর্ষা মৌসুম শেষে কাদামাটির এই পথে কাঠের সেতু নির্মাণ করতেন ইজারাদার। তখন ভাটার সময় সেই সেতু দিয়েই যাত্রীরা পারাপার করতেন। তবে গত বছরের ৫ আগস্টের পর ইজারাদারের পরিবর্তন হয়েছে। এর পর থেকে কাঠের সেতু নির্মাণ না করায় যাত্রীদের কাদা ও পানি মাড়িয়ে স্পিডবোটে ওঠানামা করতে হচ্ছে।আগে বর্ষা মৌসুম শেষে কাদামাটির এই পথে কাঠের সেতু নির্মাণ করতেন ইজারাদার। তখন ভাটার সময় সেই সেতু দিয়েই যাত্রীরা পারাপার করতেন। তবে গত বছরের ৫ আগস্টের পর ইজারাদারের পরিবর্তন হয়েছে। এর পর থেকে কাঠের সেতু নির্মাণ না করায় যাত্রীদের কাদা ও পানি মাড়িয়ে স্পিডবোটে ওঠানামা করতে হচ্ছে।
শ্রমিকেরা জানান, সাধারণত একজন যাত্রী চেয়ারে বসার ভঙ্গিতে দুজন শ্রমিকের হাত ও কাঁধের ওপর কাদামাটির এই পথ পার হন। তবে পারাপারের সুবিধার্থে অনেক যাত্রীকে কাঁধে তুলে পার করা হয়। শিশু-কিশোরদের পাঁজাকোলা করে পার করিয়ে দেন শ্রমিকেরা।
কাঁধে করে এক যাত্রীকে ঘাটে নেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি তোলা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভ ট র সময় ইজ র দ র প র কর করত ন
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন করে যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেই পাকিস্তান–আফগানিস্তান পাল্টাপাল্টি গোলাগুলি
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার নতুন করে যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে তৃতীয় দফার এ আলোচনা শুরু হলেও দুই দেশের মধ্যে আবারও সীমান্তে গোলাগুলির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়গুলোই পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যকার বিরোধের মূল ক্ষেত্র। ইসলামাবাদের অভিযোগ, পাকিস্তান তালেবান (টিটিপি)-এর মতো গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয়–প্রশ্রয় দিচ্ছে আফগানিস্তান। টিটিপির বিরুদ্ধে পাকিস্তানে বিভিন্ন হামলা চালানোর অভিযোগ আছে। আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার অবশ্য ওই সব গোষ্ঠীকে আশ্রয়–প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
আরও পড়ুনপাকিস্তানের সঙ্গে আফগান তালেবানের সম্পর্ক কোন দিকে যাচ্ছে১৬ অক্টোবর ২০২৫আফগান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ গতকাল বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে তৃতীয় দফার আলোচনা শুরু হলেও, আজ শুক্রবার বিকেলে পাকিস্তানি বাহিনী আবার স্পিন বোল্ডাক এলাকায় গুলি ছুড়েছে। এতে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
এক্সে পাকিস্তানের তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক পোস্টে বলা হয়, চামান সীমান্তে আজকের ঘটনার বিষয়ে আফগান পক্ষের দাবিগুলো আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। আফগানিস্তানই আগে গুলি চালিয়েছে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী সংযত ও দায়িত্বশীল আচরণ বজায় রেখে তাৎক্ষণিকভাবে জবাব দিয়েছে।স্পিন বোল্ডাক শহরটির অবস্থান আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় কান্দাহার প্রদেশে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জাবিউল্লাহ মুজাহিদ লিখেছেন, আলোচক দলের প্রতি সম্মান দেখিয়ে এবং বেসামরিক লোকজনের হতাহতের আশঙ্কা এড়াতে আফগান সেনাবাহিনী এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। তবে পাকিস্তান অভিযোগটি অস্বীকার করেছে। তারা পাল্টা আফগানিস্তানকে দোষারোপ করেছে।
এক্সে পাকিস্তানের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের এক পোস্টে বলা হয়, ‘চামান সীমান্তে আজকের ঘটনার বিষয়ে আফগান পক্ষের দাবিগুলো আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। আফগানিস্তানই আগে গুলি চালিয়েছে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী সংযত ও দায়িত্বশীল আচরণ বজায় রেখে তাৎক্ষণিক জবাব দিয়েছে।’
আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের উপমুখপাত্র হামদুল্লাহ ফিতরাত বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমরা জানি না, পাকিস্তানি বাহিনী কেন গুলি চালিয়েছে।’
আরও পড়ুনপাকিস্তান ও আফগানিস্তান কেন কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারছে না৩০ অক্টোবর ২০২৫কান্দাহারের তথ্য বিভাগের প্রধান আলি মোহাম্মদ হাকমাল বলেন, গোলাগুলির ঘটনা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা এএফপিকে বলেন, এটি ১০ থেকে ১৫ মিনিট স্থায়ী হয়েছিল।
পাকিস্তান নিশ্চিত করেছে যে সীমান্ত এলাকায় পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।
গত সপ্তাহে ইস্তাম্বুলে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চূড়ান্ত করা সংক্রান্ত আলোচনায় অচলাবস্থা দেখা দেয়। উভয় দেশই পরস্পরের বিরুদ্ধে সহযোগিতা না করার অভিযোগ তোলে। আবার উভয় পক্ষ সতর্ক করেছিল, আলোচনা ব্যর্থ হলে সংঘর্ষ আবার শুরু হতে পারে।
এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জাবিউল্লাহ মুজাহিদ লিখেছেন, আলোচক দলের প্রতি সম্মান দেখিয়ে এবং বেসামরিক লোকজনের হতাহতের আশঙ্কা এড়াতে আফগান সেনাবাহিনী এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত ৯ অক্টোবর শুরু হওয়া সংঘর্ষে আফগানিস্তান সীমান্তে এ পর্যন্ত ৫০ বেসামরিক নাগরিক নিহত ও ৪৪৭ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া কাবুলে বিস্ফোরণে কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হন। ওই বিস্ফোরণের জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে আফগানিস্তান।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বলেছে, সংঘর্ষে তাদের ২৩ সেনা নিহত ও ২৯ জন আহত হয়েছেন, তবে বেসামরিক লোকজনের হতাহত হওয়ার কোনো তথ্য তারা উল্লেখ করেনি।