সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক পদে নিয়োগ পুনর্বহালের দাবিতে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ। বিভাগের শিক্ষকদের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতিও দেওয়া হয়েছে। প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।

বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বর থেকে মিছিল শুরু হয়ে বিজ্ঞান অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদসহ বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় ভাস্কর্য চত্বরে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এ সময় সংগীত বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা গান গেয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ এবং সংগীত ও শারীরিক শিক্ষক পদ পুনর্বহালের দাবি জানান।

সমাবেশে সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান অনিমা রায় সরকারের সিদ্ধান্তকে সুদূরপ্রসারী চক্রান্ত আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘সংগীত আমাদের প্রাণের খোরাক, সংগীত দিয়ে আমরা আমাদের হৃদয় ভরি। কোমলমতি শিশুর মন থেকে সুর কেড়ে নেওয়ার পাঁয়তারা বন্ধ করতে হবে। এটা হচ্ছে শুরু, এরপর মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও সংগীত বন্ধ করার দাবি আসবে।’

অনিমা রায় বলেন, শিক্ষক পদ বাদ দেওয়ার মাধ্যমে সংগীত নিয়ে যারা পড়াশোনা করেছে, তাদের চাকরির রাস্তা বন্ধ করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। ফলে চাকরি না থাকলে কেউ ভবিষ্যতে সংগীত পড়তে আগ্রহী হবে না। এটি একটি সুদূরপ্রসারী চক্রান্ত। তাই প্রাথমিকে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষার শিক্ষকের পদ পুনর্বহাল করতে হবে।

প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে অংশগ্রহণ করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতা–কর্মীরা। সংগীত ও শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক পদ পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে বক্তব্য দেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম মারুফ।

এদিকে সংগীত বিভাগের পক্ষ থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিকল্প প্রক্রিয়া ঘোষণা না করে এসব পদ সরাসরি স্থগিতের সিদ্ধান্ত অন্তর্ভুক্তিমূলক, সৃজনশীল ও মানবিক যে বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখি, তার সাথে সাংঘর্ষিক। আমরা বলতে চাই, শিক্ষার্থীদের সকল যৌক্তিক পদক্ষেপে আমরা পাশে আছি। আমরা আমাদের অবস্থান থেকে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষাবিষয়ক সহকারী শিক্ষক–সংক্রান্ত পদ বাতিলের বিরোধিতা করছি।’

আরও পড়ুনসংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ বাদ দেওয়ার বিষয়ে যে ব্যাখ্যা দিল অন্তর্বর্তী সরকার০৪ নভেম্বর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

আলোচনার জন্য মির্জা ফখরুলকে জামায়াত নেতা তাহেরের ফোন

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে মতৈক্যে পৌঁছাতে আলোচনার জন্য বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ফোন করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। বিএনপির মহাসচিব বিষয়টি নিয়ে দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে তুলেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

এর আগে বিকেলে জামায়াত নেতা আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের প্রথম আলোকে বলেন, তিনি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ফোন করে আলোচনায় বসার বিষয়ে কথা বলেছেন। বিএনপির মহাসচিব দলের দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে এ বিষয়ে তাঁদের জানাবেন বলে জানিয়েছেন।

গত ২৮ অক্টোবর জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রস্তাব জমা দেয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গত ১৭ অক্টোবর স্বাক্ষরিত জুলাই সনদের সঙ্গে ওই প্রস্তাবের তফসিলে উল্লেখিত সনদের নানা অসংগতি রয়েছে জানিয়ে তাতে আপত্তি তুলেছে বিএনপি। এ ছাড়া সনদ বাস্তবায়নে গণভোট কবে হবে, তা নিয়েও বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে মতভিন্নতা রয়েছে।

বিএনপি সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট করার পক্ষে। অপর দিকে জামায়াতে ইসলামী চায়, আগে গণভোট করে জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার পর তার আলোকে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে জুলাই সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন নিয়ে সমাধানে পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত রোববার উপদেষ্টা পরিষদের এক সভা থেকে বলা হয়, রাজনৈতিক দলগুলো যদি এক সপ্তাহের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, তাহলে সরকার তার মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা

বিএনপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, তারেক রহমানের সভাপতিত্বে রাতে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভা হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘ ও বিস্তারিত আলোচনা শেষে কিছু বিষয়ে নোট অব ডিসেন্টসহ (ভিন্নমত) যেসব বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং ১৭ অক্টোবর যে জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত হয়েছে, তার অংশীদার হিসেবে সনদে বর্ণিত সব বিষয় ধারণ করে বিএনপি। দেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী তা বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ দলটি।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সর্বসম্মতভাবে গৃহীত জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে নতুন প্রশ্ন কিংবা সংকট সৃষ্টির সব অপপ্রয়াসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেবে বিএনপি। দলটি মনে করে, দীর্ঘ আলোচনায় উপনীত ঐকমত্য বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সব রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ থাকবে এবং কোনো মতেই নিত্যনতুন প্রশ্ন উত্থাপন কিংবা সংকট সৃষ্টি করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধা সৃষ্টি করবে না।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জুলাই জাতীয় সনদের যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, তার আইনানুগ বাস্তবায়নের জন্য এবং যথাসময়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আন্তরিক ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ