পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চরকাজল ইউনিয়নে স্থানীয় যুবদল-ছাত্রদল ও গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দুই পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে চরকাজল ও চরবিশ্বাস ইউনিয়নের সীমান্ত চৌরাস্তা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনকে বরিশালের শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যরা গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত ৯টার দিকে চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চৌরাস্তা বাজারে স্থানীয় যুবদল, ছাত্রদল ও গণ অধিকার পরিষদ-সম্পর্কিত সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা পৃথক কর্মসূচি পালন করেন। প্রথমে যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা তাঁদের নেতা হাসান মামুনের পক্ষে স্লোগান দেন। এ সময় চরকপালবেড়া এলাকায় গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূরের পক্ষে স্লোগান দিয়ে তিনটি ওয়ার্ড কমিটি ঘোষণা করেন গণ অধিকার, যুব অধিকার ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয় এবং এ পর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নূরের বাড়ি চরবিশ্বাস বাজারের পাশেই।

সংঘর্ষে আহত হয়েছেন যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সোহেল খলিফা। তিনি বলেন, ‘গতকাল রাতে কপালবেড়া ওয়ার্ডের গণ অধিকার, যুব অধিকার ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের কমিটি ঘোষণার পর আনন্দমিছিল শেষে আমরা বাড়ি ফিরছিলাম। চরকাজল-চরবিশ্বাস ইউনিয়ন সীমান্ত চৌরাস্তায় পৌঁছালে স্থানীয় যুবদল ও ছাত্রদলের ২০ থেকে ২৫ জন লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এতে স্থানীয় ছাত্র অধিকারের সভাপতি আবু নাঈম, কর্মী সাহাবুল খলিফা, সদস্য আজমির খলিফা, নবীন খলিফাসহ ১০ থেকে ১২ জন গুরুতর আহত হন।’

সোহেল খলিফা আরও বলেন, ‘আমার সহকর্মী সাহাবুল খলিফাকে পেটাতে দেখে তাঁর স্ত্রী আমেনা বেগম এগিয়ে এলে তাঁকেও মারধর করা হয়। সাহাবুল, তাঁর স্ত্রী আমেনা বেগম ও ছেলে আজিমুরকে গুরুতর আহত অবস্থায় শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।’

অন্যদিকে হামলা আহত হয়েছেন যুবদলের চরপালবেড়া ওয়ার্ড সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস রাঢ়ি (৩২)। তিনি বলেন, ‘গতকাল রাত ৯টার দিকে স্থানীয় বাজারে কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতা ও পটুয়াখালী-৩ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী হাসান মামুনের পক্ষে শুভেচ্ছামিছিল করি। পরে সবাই বাড়ি ফেরার পথে গণ অধিকারের নেতা-কর্মীরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাদের ওপর হামলা চালান।’

ইলিয়াস রাঢ়ি আরও বলেন, গণ অধিকারের হামলায় যুবদলের সদস্য সবুজ রাঢ়ি, হাসান রাঢ়ি, নূরনবী রাঢ়ি, কুদ্দুস ব্যাপারী, ছাত্রদলের ইয়াকুব রাঢ়ি, আবু রায়হান, সোলায়মান রাঢ়ি, রিয়াজ রাঢ়িসহ আমাদের ১০ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৯ জন গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।’

গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশাদুর রহমান বলেন, চরবিশ্বাস এলাকায় বিএনপি ও গণ অধিকারের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের একাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। ঘটনার পরপরই পুলিশ পাঠানো হয়েছে, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে এবং পুলিশ টহল দিচ্ছে। সংঘর্ষে জড়িত দুই পরিবারের সদস্যরা দুটি রাজনৈতিক দলের সমর্থক। রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আহত হয় ছ ন ছ ত রদল র চরব শ ব স য় য বদল কর ম র স ঘর ষ গল চ প গতক ল উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

শনিবার থেকে আন্দোলনে নামছেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা

কাঙ্ক্ষিত গ্রেড বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা না পেয়ে আবারও আন্দোলনে নামছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ ব্যানারে শনিবার (৮ নভেম্বর) থেকে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করবেন তারা।

বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদের পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে। এগুলো হলো-
১. সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা।
২. ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সমস্যার সমাধান করা এবং
৩. শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি নিশ্চিত করা।

আরো পড়ুন:

ঢাবি প্রক্টরকে হুমকি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার

প্রাথমিকে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষার সহকারী শিক্ষকের পদ বাতিল

আন্দোলনে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম-শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (শাহিন-লিপি), সহকারী শিক্ষক ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদসহ আরো কয়েকটি শিক্ষক সংগঠন।

দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের নেতারা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। তাদের লক্ষ্য কমপক্ষে ২০ হাজার শিক্ষককে এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করানো।

এদিকে, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।

ঢাকা/আসাদ/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ