জুলাই জাতীয় সনদের যে সব বিষয় ঐকমত্য হয়েছে, তার আইনানুগ বাস্তবায়নে এবং যথাসময়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে আন্তরিক ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জা‌নি‌য়ে‌ছে বাংলা‌দেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএন‌পি।

দল‌টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে ভার্চুয়া‌লি অংশ নেওয়া বিএন‌পির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় এ আহ্বান জানা‌নো হ‌য়ে‌ছে। 

আরো পড়ুন:

ঐকমত্য কমিশন কী হলো না হলো কিছু আসে যায় না: আমীর খসরু

উপদেষ্টারা পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কাজ করছেন: ফখরুল

বৃহস্প‌তিবার (৬ নভেম্বর) রা‌তে বিএনপির মহাস‌চিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষ‌রিত সংবাদ বিজ্ঞ‌প্তি‌তে এ তথ্য জানা‌নো হ‌য়ে‌ছে। 

সভায় আলোচনাক্রমে নিম্ন লিখিত প্রস্তাব গৃহিত হয়-
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘ ও বিস্তারিত আলোচনা শেষে কতিপয় বিষয়ে নোট অব ডিসেন্টসহ যে সকল বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং গত ১৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় ঐতিহাসিক আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে স্বাক্ষরিত হয়েছে, আমরা তার অংশীদার হিসাবে সনদে বর্ণিত সকল বিষয়কে ধারণ করি এবং দেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী তা বাস্তবায়নে অঙ্গীকারাবদ্ধ।

সর্বসম্মতভাবে গৃহিত জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে নতুন প্রশ্ন কিংবা সংকট সৃষ্টির সকল অপপ্রয়াসের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকামী জনগণের শক্তিকে ধারণ করে বিএনপি গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় দীর্ঘ ১৬ বছরের অবিরাম লড়াই ও ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের সীমাহীন ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে। 

বিএনপি দৃঢ়ভাবে মনে করে যে, দীর্ঘ আলোচনায় উপনীত ঐকমত্যকে বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সকল রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ থাকবে এবং কোনো মতেই নিত্য নতুন প্রশ্ন উত্থাপন কিংবা সংকট সৃষ্ট করে গণতন্ত্র পুণঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আয়োজিতব্য নির্বচন অনুষ্ঠানে বাধা সৃষ্টি করবে না।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ঐকমত য

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে সবাইকে কাজ করতে হবে: নজরুল ইসলাম খান

বিএনপির পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন পাওয়া ব্যক্তিদের পক্ষে কাজ করার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে শহীদ জিয়া এবং বিএনপি দেশকে নতুন কিছু দেয়। নতুন ও যুগান্তকারী দীর্ঘ উন্নয়নের জন্য কাজ করে। সে জন্য আগামী দিনে বিএনপির পক্ষ থেকে যাঁদেরকে মনোনীত করা হবে, তাঁদের বিজয়ী করার জন্য সবাই মিলে কাজ করতে হবে।’

ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে ‘শহীদ জিয়া শ্রমিক জাগরণ, উৎপাদন ও উন্নয়ন শীর্ষক’ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন নজরুল ইসলাম খান। আজ বুধবার রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভবনে এ সভা হয়।

আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘‌৩১ দফা যে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে, আপনারা নিশ্চয়ই দেখেছেন, সেখানে সব শ্রেণি–পেশার মানুষের কথা বলা আছে। শ্রমিকদের কথা, বিশেষ করে বলা আছে। আমরা যদি এই পরিবর্তনে আমাদের পক্ষে নিয়ে আসতে পারি, তাহলে আমাদের আকাঙ্ক্ষা অনেক কিছুই পূরণ হবে।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘‌আমরা বিশ্বাস করি, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের জন্য যুগান্তকারী উন্নয়নের ভিত্তি তৈরি করেছিলেন। সেই ধারা অব্যাহত রাখতে আগামী নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীদের বিজয়ী করতে হবে। শুধু ঢাকায় নয়, সারা দেশে সবাইকে সংগঠিতভাবে কাজ করতে হবে।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, শিশুদের উন্নয়ন, কৃষি, শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধিসহ সর্বস্তরের মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন সবার জন্য উন্নয়ন—কিছু মানুষের জন্য নয়। কিন্তু আজ দেশে অসম উন্নয়ন চলছে। কেউ কোটি টাকার মালিক হচ্ছেন, আবার কেউ দিন দিন দরিদ্র হচ্ছেন—এটাই শহীদ জিয়ার চাওয়া বাংলাদেশ নয়।’

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, শ্রমিকের মর্যাদা নিশ্চিত না হলে প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, শ্রমের মর্যাদা, ন্যায্য মজুরি ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব। যদি একজন শ্রমিক ঠিকমতো ঘুমাতে না পারে, ভালো খাবার না পায়, চিকিৎসা–সুবিধা না পায়, তাহলে সে কীভাবে উৎপাদনশীলভাবে কাজ করবে? একজন শ্রমিকের পেট খালি থাকলে তাঁর কাছ থেকে ভালো কাজ আশা করা অন্যায়।

আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে এবং জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে বিএনপি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। ষড়যন্ত্র ও ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার চেষ্টায় যাঁরা গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করছেন, তাঁরা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন। জনগণ আর প্রহসনের নির্বাচন মেনে নেবে না।

৭ নভেম্বরের চেতনা ঐক্যের চেতনা ছিল বলে উল্লেখ করে এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আজও আমাদের সেই ঐক্য দরকার—সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কারণ, যাঁরা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন না, গণতন্ত্রকে ভয় পান, তাঁরা সব সময় ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেন। আমরা বিশ্বাস করি, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা সেই ঐক্য গড়ে তুলতে পারব।’

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিম।

এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপিরসহ শ্রমিক–বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, ফিরোজ উজ জামান মোল্লা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঐকমত্য কমিশনের আপ্যায়ন ব্যয় ৪৫ লাখ টাকা
  • আলোচনার জন্য মির্জা ফখরুলকে জামায়াত নেতা তাহেরের ফোন
  • ঐকমত্য কমিশনের ব্যয়ের যে হিসাব দিল অন্তর্বর্তী সরকার
  • ঐকমত্য কমিশন কী হলো না হলো কিছু আসে যায় না: আমীর খসরু
  • কমিশনে কী হলো না হলো কিছু আসে যায় না, ৩১ দফা বাস্তবায়ন হবে: আমীর খসরু
  • তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলের রায়ের পেছনে ছিল রাজনৈতিক বিদ্বেষ: অ্যাটর্নি জেনারেল
  • বিএনপির মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে সবাইকে কাজ করতে হবে: নজরুল ইসলাম খান
  • ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ রাজনীতিতে অনৈক্য ও বিভক্তি বাড়িয়েছে: রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর
  • সরকারের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার মানসিকতা রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যে ফাটল ধরিয়েছে