মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছেন, ইরান তাদের ওপর আরোপ করা যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। তিনি তাদের এই অনুরোধের বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত।

মধ্য এশিয়ার নেতাদের সঙ্গে এক নৈশভোজে ট্রাম্প বলেন, ‘সত্যি বলতে, ইরান জিজ্ঞাসা করে আসছে, নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নেওয়া যায় কি না। ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের খুবই কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এটি পরিস্থিতিকে সত্যিই কঠিন করে তুলেছে।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘আমি সেটা শুনতে প্রস্তুত এবং আমরা দেখব কী হয়। তবে আমি এর জন্য উন্মুক্ত।’

যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করে আসছে। ইরান অবশ্য জোর দিয়ে বলে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে। কোনো পরমাণু অস্ত্র অর্জন তাদের উদ্দেশ্য নয়।

তেহরান বছরের পর বছর ধরে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কবলে রয়েছে। বিশেষ করে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র তেহরানের সঙ্গে একটি আন্তর্জাতিক পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে আসে। এরপর ইরানের ওপর আরও কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় এবং আগের নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপ করা হয়।

গত জুনের মাঝামাঝি সময়ে, ইসরায়েল ইরানের ওপর নজিরবিহীন আগ্রাসন শুরু করে। দেশটির ওপর বোমা হামলা চালায়। এতে দুই দেশের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এই সংঘাতের সময় যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছিল।

ইসরায়েলের হামলার জবাবে ইরান পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালালে দুই দেশের মধ্যে সংঘাত বেঁধে যায়। দুই দেশের ওই সংঘাত ১২ দিন স্থায়ী হয়েছিল। ইসরায়েলের হামলার কারণে এপ্রিল মাসে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে শুরু হওয়া পারমাণবিক আলোচনা ব্যাহত হয়েছিল।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ইরান একসময় ‘মধ্যপ্রাচ্যের দাপুটে শক্তি’ ছিল। কিন্তু এখন তাদের ‘পারমাণবিক অস্ত্র’ পাওয়ার আর কোনো সম্ভাবনা নেই।

গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসা এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট বারবার বলেছেন, এই হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে ক্ষতির পুরো মাত্রা এখনো অজানা।

সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি প্রক্রিয়াটি শুরু করার পর তথাকথিত ‘স্ন্যাপব্যাক’ ব্যবস্থার অধীনে জাতিসংঘ তেহরানের বিরুদ্ধে আবার নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করে।

এসব ব্যবস্থা ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কার্যকলাপ সংক্রান্ত যাবতীয় লেনদেন নিষিদ্ধ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পারমাণবিক আলোচনার বেশ কয়েক দফা অনুষ্ঠিত হয়েছে ওমানে। এই দেশটি উভয় পক্ষকে আলোচনায় ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে। এই আলোচনার লক্ষ্য হচ্ছে, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিনিময়ে ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমকে সীমিত করে একটি নতুন চুক্তিতে পৌঁছানো।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদে নোট অব ডিসেন্ট বলে কিছু থাকবে না: নাহিদ ইসলাম

জুলাই সনদের আদেশ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। একই সঙ্গে তিনি বলেন, জুলাই জাতীয় সনদে ‘নোট অব ডিসেন্ট’(ভিন্নমত) বলে কিছু থাকবে না।

আজ শুক্রবার দুপুরে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। ইউনিভার্সিটি টিচার্স ফোরামের (ইউটিএফ) আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আলোচনাও হয়।

নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই সনদে নোট অব ডিসেন্ট বলে কিছু থাকবে না। যা ঐকমত্য হয়েছে, তার বাকিটা ঠিক করবে জনগণ। জনগণ যদি বলে, তাহলে সেগুলো বাস্তবায়িত হবে।

খুব দ্রুত সময়ে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির মধ্য দিয়ে জাতীয় নির্বাচনের দিকে যাওয়ার আশা প্রকাশ করেন এনসিপির আহ্বায়ক। তিনি বলেন, ‘আমরা গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’

আরও পড়ুনগণভোট কবে, সিদ্ধান্ত দেবে সরকার ২৮ অক্টোবর ২০২৫

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সব অংশীদারকে আগামী সংসদে থাকা উচিত বলে মনে করেন নাহিদ ইসলাম। আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবেও কাজ করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, সেই সংসদ নতুন সংবিধানের জন্য কাজ করবে। যাঁরা শিক্ষক আছেন, অবশ্যই তাঁদের সেখানে অংশগ্রহণ প্রয়োজন। এনসিপির পক্ষ থেকে তাঁরা সেটি নিশ্চিত করার চেষ্টা করবেন।

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, আগামীর যে সংসদ ও সংবিধান সংস্কার পরিষদ, সেখানে তরুণ, শিক্ষক, আলেম, নারী, সংখ্যালঘুসহ সমাজের নানা পেশাজীবীসহ সবাই মিলে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা হবে। এর আগে অবশ্যই তাঁদের এখনকার দাবি গণভোট। জুলাই সনদের আদেশ অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে দিতে হবে।

আরও পড়ুনদলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হলে সরকার নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেবে০৩ নভেম্বর ২০২৫

অনুষ্ঠানে ইউটিএফের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। আহ্বায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. সিরাজুল ইসলাম। সদস্যসচিব ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক শামীম হামিদী। অনুষ্ঠানে ইউটিএফের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সিরাজুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বক্তব্য দেন।

আরও পড়ুনসংসদ ২৭০ দিনে ব্যর্থ হলে প্রস্তাবগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হবে: আলী রীয়াজ ২৮ অক্টোবর ২০২৫আরও পড়ুনবিএনপি ইতিবাচক, জামায়াতের কমিটি গঠন, উদ্যোগী ৯ দল ০৬ নভেম্বর ২০২৫আরও পড়ুনউদ্বিগ্ন সরকার, দায়িত্ব দিল দলগুলোকে০৪ নভেম্বর ২০২৫আরও পড়ুনবিএনপি সংস্কার ভেস্তে দিচ্ছে, জামায়াত নির্বাচন পেছানোর চেষ্টায়: নাহিদ ইসলাম০২ নভেম্বর ২০২৫আরও পড়ুনগণভোট নিয়ে আদেশ জারি করতে হবে প্রধান উপদেষ্টাকে: হাসনাত আবদুল্লাহ৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ