নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে জানতে চেয়েছে ইরান: ট্রাম্প
Published: 7th, November 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরান জানতে চেয়েছে যে তেহরানের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা যেতে পারে কিনা। বৃহস্পতিবার রাতে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেছেন।
ট্রাম্প বলেছেন, “ইরান জিজ্ঞাসা করছে যে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা যেতে পারে কিনা। ইরানের উপর খুব ভারী মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এবং তারা যা করতে চায় এটি তাদের জন্য সত্যিই কঠিন করে তুলেছে। আমি এটি শুনতে উন্মুখ এবং আমরা দেখব কী হয়, তবে আমি এটির জন্য উন্মুখ থাকব।”
নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে ইরানের মিশন তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সোমবার জানিয়েছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত ওয়াশিংটন ইসরায়েলকে সমর্থন, সামরিক ঘাঁটি বজায় রাখা এবং মধ্যপ্রাচ্যে হস্তক্ষেপ অব্যাহত রাখবে ততক্ষণ পর্যন্ত ইরান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সহযোগিতা সম্ভব নয়।
জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্প ইরানের উপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রচারণা শুরু করেন। এর মধ্যে তেহরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখার প্রচেষ্টা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। জুন মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে বোমা হামলা চালায়।
জুন মাসে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ১২ দিনের যুদ্ধের আগে দুই দেশ পাঁচ দফা পারমাণবিক আলোচনা করেছে। তবে, উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনায বড় ধরনের বাধার সম্মুখীন হয়েছে, যেমন- ইরানের মাটিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের বিষয়টি, যা পশ্চিমা শক্তিগুলি অস্ত্রায়নের ঝুঁকি কমাতে শূন্যে নামিয়ে আনতে চায় - এই পরিকল্পনাটি তেহরান প্রত্যাখ্যান করেছে।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গাজাজুড়ে আবর্জনার স্তূপ
ইসরায়েলের ধ্বংসাত্মক সামরিক অভিযানের পর গাজাজুড়ে আবর্জনার স্তূপ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার সাথে সাথে আবর্জনা সংগ্রহের মতো সরকারি পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেছে। অবশ্য গত মাসে যুদ্ধবিরতির পর থেকে আংশিকভাবে এই পরিষেবা আংশিকভাবে শুরু হয়েছে। তবে ধ্বংসের বিশালতার কারণে পুরো এলাকা পরিচ্ছন্ন করা এখন বহু দূরের ব্যাপার।
মাহমুদ আবু রেইদা খান ইউনিসে তার স্ত্রী এবং চার সন্তানের সাথে যে তাঁবুতে থাকেন তার পাশের ডাস্টবিনের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, “আমি কোনো তাজা বাতাসের গন্ধ পাচ্ছি না। আমার তাঁবুতে দুর্গন্ধ পাচ্ছি। আমি ঘুমাতে পারছি না। আমার বাচ্চারা সকালে কাশি দিয়ে ঘুম থেকে ওঠে।”
পচা আবর্জনা, পয়ঃনিষ্কাশন পুল, বোমা হামলার স্থান থেকে আসা বিপজ্জনক বর্জ্য এবং পোড়া কাপড় ও প্লাস্টিকের বিষাক্ত ধোঁয়া গাজাবাসীদের জন্য একটি নোংরা পরিবেশ তৈরি করেছে।
জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপির গাজা অফিসের প্রধান আলেসান্দ্রো ম্রাকিক বলেন, “গাজার বর্জ্য সমস্যার মাত্রা বিশাল।”
তিনি জানান, যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই বর্জ্য ল্যান্ডফিল সাইটগুলো পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল এবং ইসরায়েল সীমান্তে তিনটি প্রধান ডাম্প সাইট অবস্থিত ছিল যেখানে এখন ফিলিস্তিনিদের প্রবেশাধিকার নেই।
ম্রাকিক বলেন, “আমরা গাজাজুড়ে ২০ লাখ টন অপরিশোধিত বর্জ্যের কথা বলছি।”
তিনি জানান, গাজার বেশিরভাগ পানি যেখান থেকে আসে সেই জলাধারের জন্য এবং জনসংখ্যার স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি ‘অনেক’।
অনেক মানুষ গ্যাস্ট্রিক রোগ এবং ত্বকের সমস্যা, ডায়রিয়া থেকে শুরু করে ফুসকুড়ি, ঘা, উকুন এবং খোস-পাঁচড়ার অভিযোগ করছেন এবং ক্ষুদ্র, জনাকীর্ণ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ডাক্তাররা বলছেন যে দূষণই এর জন্য দায়ী।
খান ইউনিসের কুয়েতি ফিল্ড হাসপাতালের একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ সামি আবু তাহা বলেন, “তাঁবুতে অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে ত্বকের রোগ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এবং তাঁবুগুলো আবর্জনার স্তূপের পাশে অবস্থিত।” এই ধরনের রোগের চিকিৎসার জন্য ওষুধের অভাব রয়েছে বলে জানান তিনি।
খান ইউনিসের আরেকটি অংশে মাহমুদ হেলস তার সন্তানদের সাথে তার তাঁবুতে বসে ছিলেন - কাছেই একটি পয়ঃনিষ্কাশন জলাধার ছিল।
তিনি বলেন, “আমরা এই ধরনের জায়গা ছাড়া আর কোথাও থাকার জায়গা পাই না। এই জায়গাটি খুবই কঠিন - যুদ্ধের ধ্বংসাবশেষ, আবর্জনার স্তূপ এবং পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাবের কারণে এটি রোগ এবং মহামারীতে পূর্ণ।”
গাজার বর্জ্য পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন অবকাঠামোর বেশিরভাগই ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ এবং স্থল অভিযানের ফলে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে বৃষ্টি হলে মানুষ খোলা ল্যাট্রিন ব্যবহার করতে বাধ্য হয়েছে।
ঢাকা/শাহেদ