অর্থ পাচার মামলায় তদন্তের জালে দুই ভারতীয় ক্রিকেটার, সম্পদ বাজেয়াপ্ত
Published: 6th, November 2025 GMT
ভারতের সাবেক দুই ক্রিকেটার শিখর ধাওয়ান ও সুরেশ রায়না সম্পদ জব্দ করেছে দেশটির এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। নিষিদ্ধ বাজির অ্যাপের বিজ্ঞাপন প্রচার ও অর্থ পাচার মামলার তদন্তের স্বার্থে তাঁদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধাওয়ান ও রায়নার মালিকানাধীন মোট ১১ কোটি ১৪ লাখ রুপির সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এর আগে জুয়া সংক্রান্ত অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ওয়ানএক্সবেট-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত অর্থ পাচার তদন্তে ধাওয়ানকে তলব করেছিল ইডি।
বাংলাদেশি অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানও এ বছর কয়েক দফা তাঁর ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম পেজে ‘ওয়ানএক্সবেট’-এর বিজ্ঞাপন প্রচার করেছেন।
ইডি দীর্ঘদিন ধরেই বাজি বা জুয়ার অ্যাপের বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে আসছে। যাঁরা এ ধরনের অ্যাপের প্রচার করছিলেন বা বিজ্ঞাপনে অংশ নিচ্ছিলেন, তাঁদের বেশির ভাগকেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল। সংস্থাটি এবার কঠোর পদক্ষেপ নিল।
ধাওয়ান ও রায়নার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ?
দুজন ‘ওয়ানএক্সবেট’-এর হয়ে প্রচার চালিয়েছেন। সরাসরি প্রচার না করলেও তাদের হয়ে সারোগেট বিজ্ঞাপন করছিলেন তাঁরা। অর্থাৎ একটুখানি নাম বদলে ‘ওয়ানএক্সবেট স্পোর্টিং লাইনসের’ জন্য দুজনে প্রচার চালিয়ে আসছিলেন। এর ফলে ঘুরপথে ভারতের বাজির প্রচার হয়েছে বলে অভিযোগ এনেছে ইডি।
রায়না ২০২১ সালের পর এবং ধাওয়ান ২০২৪ সালের পর কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেননি।
ধাওয়ান ও রায়না কীভাবে টাকা নিতেন?
ওয়ানএক্সবেটের কাছ থেকে দু ক্রিকেটার চুক্তি বাবদ টাকা না নিলেও অন্য সুবিধা নিতেন। যেমন রায়নার নামে ৬ কোটি ৬৪ লাখ রুপির মিউচুয়াল ফান্ড কেনা হয়েছিল আর ধাওয়ানকে দেওয়া হয়েছিল ৪ কোটি ৫০ লাখ রুপির সম্পত্তি। এসব অর্থ এসেছিল ওয়ানএক্সবেটের প্রচারণার কারণেই। ইডি এই লেনদেনকে অবৈধ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
হাজার কোটি রুপির বেশি পাচারের সন্দেহ
ইডি জানিয়েছে, ওয়ানএক্সবেট নেটওয়ার্ক বাজির মাধ্যমে ভারত থেকে এক হাজার কোটি রুপিরও বেশি অর্থ সরিয়েছে। এর মধ্যে খুব বেশি অর্থ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। সংস্থাটি চারটি পেমেন্ট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়েও তল্লাশি চালিয়েছে।
ইডি হলো ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা, যারা দেশটির ভেতর অবৈধভাবে অর্থ লেনদেন, বিদেশে টাকা পাচার বা কালো টাকা সাদা করার মতো অপরাধ খুঁজে বের করে এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
আলোচনার জন্য মির্জা ফখরুলকে জামায়াত নেতা তাহেরের ফোন
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে মতৈক্যে পৌঁছাতে আলোচনার জন্য বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ফোন করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। বিএনপির মহাসচিব বিষয়টি নিয়ে দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে তুলেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
এর আগে বিকেলে জামায়াত নেতা আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের প্রথম আলোকে বলেন, তিনি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ফোন করে আলোচনায় বসার বিষয়ে কথা বলেছেন। বিএনপির মহাসচিব দলের দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে এ বিষয়ে তাঁদের জানাবেন বলে জানিয়েছেন।
গত ২৮ অক্টোবর জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রস্তাব জমা দেয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গত ১৭ অক্টোবর স্বাক্ষরিত জুলাই সনদের সঙ্গে ওই প্রস্তাবের তফসিলে উল্লেখিত সনদের নানা অসংগতি রয়েছে জানিয়ে তাতে আপত্তি তুলেছে বিএনপি। এ ছাড়া সনদ বাস্তবায়নে গণভোট কবে হবে, তা নিয়েও বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে মতভিন্নতা রয়েছে।
বিএনপি সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট করার পক্ষে। অপর দিকে জামায়াতে ইসলামী চায়, আগে গণভোট করে জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার পর তার আলোকে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে জুলাই সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন নিয়ে সমাধানে পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত রোববার উপদেষ্টা পরিষদের এক সভা থেকে বলা হয়, রাজনৈতিক দলগুলো যদি এক সপ্তাহের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, তাহলে সরকার তার মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভাবিএনপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, তারেক রহমানের সভাপতিত্বে রাতে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভা হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘ ও বিস্তারিত আলোচনা শেষে কিছু বিষয়ে নোট অব ডিসেন্টসহ (ভিন্নমত) যেসব বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং ১৭ অক্টোবর যে জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত হয়েছে, তার অংশীদার হিসেবে সনদে বর্ণিত সব বিষয় ধারণ করে বিএনপি। দেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী তা বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ দলটি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সর্বসম্মতভাবে গৃহীত জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে নতুন প্রশ্ন কিংবা সংকট সৃষ্টির সব অপপ্রয়াসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেবে বিএনপি। দলটি মনে করে, দীর্ঘ আলোচনায় উপনীত ঐকমত্য বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সব রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ থাকবে এবং কোনো মতেই নিত্যনতুন প্রশ্ন উত্থাপন কিংবা সংকট সৃষ্টি করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধা সৃষ্টি করবে না।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জুলাই জাতীয় সনদের যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, তার আইনানুগ বাস্তবায়নের জন্য এবং যথাসময়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আন্তরিক ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।