চট্টগ্রামে সারোয়ার হত্যাসহ তিন গোলাগুলির ঘটনায় গ্রেপ্তার ৬
Published: 7th, November 2025 GMT
চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানার হামজারবাগ এলাকায় বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগে গুলি ও একজন নিহতের ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। পাশাপাশি রাউজান ও চালিতাতলী এলাকায় গোলাগুলির ঘটনায় জড়িত আরো চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও র্যাব-৭-এর সিপিসি-৩ ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাহিনীটির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো.
আরো পড়ুন:
রাউজানে র্যাবের অভিযানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র জব্দ
রাউজানে র্যাবের অভিযানে অস্ত্র উদ্ধার, আটক ২
তিনি বলেন, “তিনটি ঘটনায় জড়িত ছয়জনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। প্রতিটি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।”
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. হাফিজুর রহমান জানান, গত ৫ নভেম্বর বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগরীর হামজারবাগ এলাকায় বিএনপির চট্টগ্রাম-৮ আসনের প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ গণসংযোগকালে গুলিবিদ্ধ হন। তার পাশে থাকা সারোয়ার বাবলা নিহত হন। এ ঘটনায় আরো চারজন গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনার ৩৫ ঘণ্টার মধ্যে মামলার আসামি আলাউদ্দিন ও হেলালকে চান্দগাঁওয়ের হাজিরপুল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
একই দিন রাতে রাউজানের বাগোয়ান ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়ায় সুমন, ইসমাইল, খোরশেদ ও সোহেল নামে চারজন গুলিবিদ্ধ হন। এই ঘটনায় প্রধান আসামি ইসতিয়াক চৌধুরীসহ জ্যাকি ও জনিকে চকবাজার এলাকা থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও চার রাউন্ড গুলিসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
সর্বশেষ ৬ নভেম্বর বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের চালিতাতলি এলাকায় ইদ্রিস নামে এক অটোরিকশা চালককে সন্ত্রাসীরা গুলি করে আহত করে। ঘটনার মাত্র ছয় ঘণ্টার মধ্যে রাজ নামে এক ব্যক্তিকে রউফাবাদ এলাকা থেকে আটক করা হয়।
র্যাব জানায়, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
গত বুধবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নগরের বায়েজিদ বোস্তামি থানার হামজার বাগ খোন্দকারাবাদ ফতেপুকুর এলাকায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগে কাঁধে পিস্তল ঠেকিয়ে সারোয়ার হোসেন বাবলাকে গুলি করা হয়। এতে তিনি নিহত হন। এছাড়াও প্রার্থী এরশাদ উল্লাহসহ পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। এরশাদ উল্লাহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তবে তিনি শঙ্কামুক্ত।
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ ল ব দ ধ হন গ র প ত র কর এল ক য় নগর র ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন করে যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেই পাকিস্তান–আফগানিস্তান পাল্টাপাল্টি গোলাগুলি
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার নতুন করে যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে তৃতীয় দফার এ আলোচনা শুরু হলেও দুই দেশের মধ্যে আবারও সীমান্তে গোলাগুলির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়গুলোই পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যকার বিরোধের মূল ক্ষেত্র। ইসলামাবাদের অভিযোগ, পাকিস্তান তালেবান (টিটিপি)-এর মতো গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয়–প্রশ্রয় দিচ্ছে আফগানিস্তান। টিটিপির বিরুদ্ধে পাকিস্তানে বিভিন্ন হামলা চালানোর অভিযোগ আছে। আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার অবশ্য ওই সব গোষ্ঠীকে আশ্রয়–প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
আরও পড়ুনপাকিস্তানের সঙ্গে আফগান তালেবানের সম্পর্ক কোন দিকে যাচ্ছে১৬ অক্টোবর ২০২৫আফগান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ গতকাল বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে তৃতীয় দফার আলোচনা শুরু হলেও, আজ শুক্রবার বিকেলে পাকিস্তানি বাহিনী আবার স্পিন বোল্ডাক এলাকায় গুলি ছুড়েছে। এতে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
এক্সে পাকিস্তানের তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক পোস্টে বলা হয়, চামান সীমান্তে আজকের ঘটনার বিষয়ে আফগান পক্ষের দাবিগুলো আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। আফগানিস্তানই আগে গুলি চালিয়েছে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী সংযত ও দায়িত্বশীল আচরণ বজায় রেখে তাৎক্ষণিকভাবে জবাব দিয়েছে।স্পিন বোল্ডাক শহরটির অবস্থান আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় কান্দাহার প্রদেশে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জাবিউল্লাহ মুজাহিদ লিখেছেন, আলোচক দলের প্রতি সম্মান দেখিয়ে এবং বেসামরিক লোকজনের হতাহতের আশঙ্কা এড়াতে আফগান সেনাবাহিনী এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। তবে পাকিস্তান অভিযোগটি অস্বীকার করেছে। তারা পাল্টা আফগানিস্তানকে দোষারোপ করেছে।
এক্সে পাকিস্তানের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের এক পোস্টে বলা হয়, ‘চামান সীমান্তে আজকের ঘটনার বিষয়ে আফগান পক্ষের দাবিগুলো আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। আফগানিস্তানই আগে গুলি চালিয়েছে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী সংযত ও দায়িত্বশীল আচরণ বজায় রেখে তাৎক্ষণিক জবাব দিয়েছে।’
আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের উপমুখপাত্র হামদুল্লাহ ফিতরাত বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমরা জানি না, পাকিস্তানি বাহিনী কেন গুলি চালিয়েছে।’
আরও পড়ুনপাকিস্তান ও আফগানিস্তান কেন কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারছে না৩০ অক্টোবর ২০২৫কান্দাহারের তথ্য বিভাগের প্রধান আলি মোহাম্মদ হাকমাল বলেন, গোলাগুলির ঘটনা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা এএফপিকে বলেন, এটি ১০ থেকে ১৫ মিনিট স্থায়ী হয়েছিল।
পাকিস্তান নিশ্চিত করেছে যে সীমান্ত এলাকায় পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।
গত সপ্তাহে ইস্তাম্বুলে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চূড়ান্ত করা সংক্রান্ত আলোচনায় অচলাবস্থা দেখা দেয়। উভয় দেশই পরস্পরের বিরুদ্ধে সহযোগিতা না করার অভিযোগ তোলে। আবার উভয় পক্ষ সতর্ক করেছিল, আলোচনা ব্যর্থ হলে সংঘর্ষ আবার শুরু হতে পারে।
এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জাবিউল্লাহ মুজাহিদ লিখেছেন, আলোচক দলের প্রতি সম্মান দেখিয়ে এবং বেসামরিক লোকজনের হতাহতের আশঙ্কা এড়াতে আফগান সেনাবাহিনী এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত ৯ অক্টোবর শুরু হওয়া সংঘর্ষে আফগানিস্তান সীমান্তে এ পর্যন্ত ৫০ বেসামরিক নাগরিক নিহত ও ৪৪৭ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া কাবুলে বিস্ফোরণে কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হন। ওই বিস্ফোরণের জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে আফগানিস্তান।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বলেছে, সংঘর্ষে তাদের ২৩ সেনা নিহত ও ২৯ জন আহত হয়েছেন, তবে বেসামরিক লোকজনের হতাহত হওয়ার কোনো তথ্য তারা উল্লেখ করেনি।