নিউইয়র্ক বিমানবন্দরের ঘটনায় সরকারের গভীর দুঃখ প্রকাশ
Published: 23rd, September 2025 GMT
নিউইয়র্কের জে এফ কে বিমানবন্দরে ঘটে যাওয়া ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে প্রকাশিত সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওই ঘটনায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা আখতার হোসেন ও তাসনিম জারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও পরিকল্পিত হামলার শিকার হয়েছেন। ক্ষমতাচ্যুৎ স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার সহযোগী ও সমর্থকেরা এই হামলা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, এই নিন্দনীয় ঘটনার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার শাসনামলে গড়ে ওঠা বিধ্বংসী ও সহিংস রাজনৈতিক সংস্কৃতির এক স্পষ্ট ও মর্মান্তিক চিত্র প্রকাশ পেয়েছে। এই বিধ্বংসী রাজনৈতিক সংস্কৃতির অবসান ঘটিয়ে একটি শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই সফরে প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গী রাজনৈতিক নেতাদের সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়টি আঁচ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একাধিক পূর্ব সতর্কতামূলক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সমন্বয় করেছিল। জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর প্রতিনিধি দলকে প্রথমে নির্দিষ্ট ভিভিআইপি গেট দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এবং বিশেষভাবে সুরক্ষিত পরিবহন ইউনিটে ওঠানো হয়। তবে অপ্রত্যাশিত ও শেষ মুহূর্তের ভিসা-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে প্রতিনিধি দলকে পথ পরিবর্তন করে বিকল্প নির্গমনপথ দিয়ে বের হতে হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের জন্য ভিভিআইপি প্রবেশাধিকার ও নিরাপত্তা সুবিধা অব্যাহত রাখার জন্য আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করা হলেও দুঃখজনকভাবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তা প্রত্যাখ্যান করে। এর ফলে প্রতিনিধি দলের ওই সদস্যরা ঝুঁকির মুখে পড়েন। অনিচ্ছাকৃতভাবে এই ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনার পরপরই অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়ে দ্রুত ও আইনানুগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের মিশনের মাধ্যমে নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এ ঘটনায় একজনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বর্তমানে ঘটনাটির আনুষ্ঠানিক তদন্ত চলছে বলে আমাদের জানানো হয়েছে।
এই ঘটনার পর প্রধান উপদেষ্টা এবং প্রতিনিধিদলের সকল সদস্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উল্লেখযোগ্যভাবে জোরদার করা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিদেশে তার প্রতিনিধিদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এবং স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সার্বক্ষণিক ঘনিষ্ঠ ও অব্যাহত সমন্বয় রেখে চলছে।
আমরা দেশের অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিকভাবে গণতান্ত্রিক নীতি ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখার প্রতি আমাদের অবিচল অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি। রাজনৈতিক সহিংসতা এবং ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা, তা বাংলাদেশের ভেতরে হোক বা এর সীমানার বাইরে হোক, কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। এ ধরনের ঘটনায় যথাযথ আইনি ও কূটনৈতিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক সরক র র ব যবস থ প রক শ র জন য ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
নিউইয়র্কে আখতার হোসেনের ওপর ডিম নিক্ষেপের ঘটনায় আটক ১
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেনের ওপর ডিম নিক্ষেপের ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়ছে।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
অধ্যাপক ইউনূস নিজের স্বার্থে পার্টিগুলোকে ব্যবহার করছেন, দাবি সামান্তার
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নিহত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুলের পরিবারের সাক্ষাৎ
প্রতিবেদনে বলা হয়, নিউইয়র্কে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ডিম নিক্ষেপ করেছে বলে জানিয়েছেন সেখানে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন ব্যক্তি। ডিম ছুড়ে মারার ঘটনায় মিজানুর রহমান চৌধুরী নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। তিনি বাংলাদেশে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের একজন কর্মী বলে জানা যাচ্ছে।
এদিকে, আখতার হোসেনের ওপর ডিম নিক্ষেপের ঘটনায় 'দূতাবাসের অব্যবস্থাপনা'কে দায়ী করেছে এনসিপি।
সোমবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হয়েছেন ছয় রাজনৈতিক নেতা।
বিবিসি বাংলা জানায়, প্রধান উপদেষ্টা এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ নিউইয়র্কে পৌঁছানোর আগেই বিমানবন্দরের বাইরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন আওয়ামী লীগের কর্মী ও সমর্থকেরা।
ঘটনার পর নিউইয়র্কে উপস্থিত এনসিপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে আখতার হোসেন আওয়ামী লীগবিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন এমন ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে।
সেসময় আখতার হোসেন এনসিপি কর্মীদের সাথে ‘শেখ হাসিনার বিচার চাই’ ‘গণহত্যার বিচার চাই’ ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ ‘মুজিববাদ মুর্দাবাদ’ স্লোগান দেন।
সামাজিক মাধ্যমের ভিডিওগুলোতে দেখা যায় আখতারের নেতৃত্বে এনসিপি যখন এসব স্লোগান দিচ্ছে, তখন ঠিক রাস্তার আরেক পাশে ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা। এরপর সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন আখতার হোসেন।
তিনি সেখানে বলেছেন, “আমরা সেই প্রজন্ম যারা হাসিনার গুলির সামনে মাথা নত করিনি। ভাঙা ডিমে কিছু যায় আসে না। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী লীগ একটা সন্ত্রাসী সংগঠন।”
আখতার হোসেনের ওপর ডিম নিক্ষেপের ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
বিবিসি বাংলা ওই ভিডিওর বর্ণনা দিয়ে লিখেছে, বিমানবন্দর থেকে লাগেজ হাতে রাস্তা পার হচ্ছেন আখতার হোসেন। তার সামনে ছিলেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক তাসনিম জারা। সে সময় সেখানে আগে থেকে জড়ো হয়ে থাকা আওয়ামী লীগের কর্মীরা আখতার হোসেনকে লক্ষ্য করে তার ওপর ডিম নিক্ষেপ করেন। ডিমটি তার পিঠে লেগে ফেটে যায়।
এরপর সেখানে উপস্থিত এক ব্যক্তিকে আখতার হোসেনকে ঘিরে দাড়িয়ে তাকে সরিয়ে নিয়ে যেতে দেখা যায়। ঘটনার সময় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের এই দলের বাকি সদস্যরা সামনে এগিয়ে গিয়েছিলেন বলে জানা যাচ্ছে।
এ সময় সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছেন নিউইয়র্কের বাংলাদেশি সাংবাদিকেরা।
ঘটনার পর দূতাবাসের অভিযোগের প্রেক্ষিতে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস এলাকায় অভিযান চালিয়ে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ওই ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে জনশৃঙ্খলা ভঙ্গ ও আক্রমণমূলক আচরণের অভিযোগে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ঢাকা/ইভা