এবার সাত কলেজে একযোগে মানববন্ধন করলেন শিক্ষকেরা
Published: 24th, September 2025 GMT
ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজকে একীভূত করে প্রস্তাবিত কাঠামোয় নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করার উদ্যোগে আপত্তি জানিয়ে এবার একযোগে নিজ নিজ কলেজে মানববন্ধন করেছেন ওই সব কলেজের শিক্ষকেরা। শিক্ষকেরা বলছেন, প্রস্তাবিত কাঠামো বাস্তবায়িত হলে কলেজগুলোর উচ্চশিক্ষা ও নারী শিক্ষার সংকোচন এবং কলেজের স্বতন্ত্র কাঠামো ও ঐতিহ্য বিলুপ্ত হবে। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের (শিক্ষক) পদও বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে। প্রকারান্তরে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ হবে।
শিক্ষকেরা বলছেন, সাত কলেজের জন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয় হোক, সেটির বিপক্ষে তাঁরাও নন। কিন্তু সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস অবশ্যই পৃথক স্থানে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর সেই বিশ্ববিদ্যালয়টি হবে অধিভক্তিমূলক। কোনোভাবেই কলেজের সম্পদের মালিকানা প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে হস্তান্তর করা যাবে না। তা কলেজগুলোর নামে অক্ষুণ্ন রাখতে হবে।
আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একযোগে এই মানববন্ধন করেন সাত কলেজের শিক্ষকেরা। সরকারি এই সাত কলেজ হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, বাঙলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজ।
দুপুরে ঢাকা কলেজে গিয়ে দেখা যায়, কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় বিপুলসংখ্যক শিক্ষক মানববন্ধন করেন। মানববন্ধনে অংশে নেওয়া শিক্ষকেরা সেখানে সাংবাদিকদের বলেছেন তাঁরাও গুণগত শিক্ষার পক্ষে। এ জন্য বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধান করা হোক। কিন্তু যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয় করার কথা বলা হচ্ছে, তাতে কলেজগুলোর সমস্যা বাড়বে। ইডেন মহিলা কলেজ ও বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজে নারী শিক্ষার সুযোগ সংকোচন হয়ে যাবে। মোটাদাগে উচ্চশিক্ষা সংকোচন হবে। কিন্তু তাঁরা নারী শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষা সংকোচন হোক, তা চান না। আবার এই সাত কলেজের মধ্যে ঢাকা কলেজসহ পাঁচটি কলেজে উচ্চমাধ্যমিক আছে। উচ্চমাধ্যমিকের মান কমে যাওয়া বা উচ্চমাধ্যমিকের অবকাঠামোগত সংকোচনের পদক্ষেপ তাঁদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। আর শিক্ষা ক্যাডারের পদগুলোর সুরক্ষা চান তাঁরা।
আরও পড়ুনএবার বিরোধিতায় নামল বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্রীরা২০ ঘণ্টা আগেমানববন্ধন থেকে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে ১১ দফা দাবির কথা জানানো হয়। এগুলোর মধ্যে আছে সাত কলেজের নাম বা কাঠামো পরিবর্তন করে কোনো অনুষদে অথবা স্কুলে রূপান্তর করা যাবে না। কলেজের লোগোসহ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি নিজ নিজ কলেজের নামে অক্ষুণ্ন রাখতে হবে। বিদ্যমান কোনো বিষয় বিয়োজন করা যাবে না। প্রয়োজনে প্রস্তাবিত ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’–এর ক্যাম্পাস অবশ্যই পৃথক স্থানে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সাত কলেজকে পরীক্ষাগার বা গিনিপিগ বানিয়ে কোনো পরীক্ষামূলক বিশ্ববিদ্যালয় মডেল চাপিয়ে দেওয়া যাবে না ইত্যাদি।
এর আগে ১৭ সেপ্টেম্বর প্রস্তাবিত কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয় করার বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সামনে এই সাত কলেজের কয়েক শ শিক্ষক মানববন্ধন করেছিলেন। পরে তাঁরা ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রস ত ব ত স ত কল জ র
এছাড়াও পড়ুন:
রাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদ ও দোষীদের বিচারের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম।
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এক জরুরি সভায় ফোরামের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া আগামীকাল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করবেন বলে জানান তারা।
আরো পড়ুন:
ভ্রাতৃত্ব ও অসাম্প্রদায়িকতায় জবিতে মহালয়া উৎসব
রাবি উপ-রেজিস্ট্রারের দাঁড়িতে টান ও উপ-উপাচার্যকে সিঁড়িতে ফেলে দেওয়া হয়
রাত ৮ টায় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামে সভাপতি অধ্যাপক মো. আব্দুল আলীম ও সাধারণ সম্পাদক ড. মো. আমিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) উপ-উপাচার্য, উপ-রেজিস্টার, প্রক্টর, রাকসু নির্বাচন কমিশনারসহ শিক্ষকদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছনার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
শিক্ষকদের যারা লাঞ্চিত করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না করা পর্যন্ত সকল প্রকার কার্যক্রম (ক্লাস-পরীক্ষা) নির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। এছাড়াও আগামীকাল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের ভর্তির ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বা পোষ্য কোটা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত বহাল রাখার প্রতিবাদে কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতি।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী