১৬ বছর পর সম্মেলন, সভাপতি-সম্পাদকের প্রতিদ্বন্দ্বী নেই, তিন পদে লড়বেন ১১ নেতা
Published: 26th, September 2025 GMT
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০০৯ সালে। এর পর থেকে বেশ কয়েকবার আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হলেও ‘সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেই’ সীমাবদ্ধ ছিল। এতে দেড় দশকের বেশি সময় ধরে আনুষ্ঠানিক সম্মেলনের স্বাদ থেকে বঞ্চিত ছিলেন নেতা-কর্মীরা। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কুমিল্লায় চাঙা হয়ে ওঠে বিএনপির রাজনীতি।
দীর্ঘ ১৬ বছর পর আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সম্মেলন। ১৭ সেপ্টেম্বর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর থেকে উচ্ছ্বসিত দলটির নেতা-কর্মীরা। সর্বত্র বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। ইতিমধ্যে সম্মেলনকে স্বাগত জানিয়ে পোস্টার-ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে জেলার বিভিন্ন এলাকা।
শুরু থেকেই নেতা-কর্মীদের প্রত্যাশা ছিল, এবার ভোটের মাধ্যমে শীর্ষ নেতৃত্ব পাবে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপি। শেষ পর্যন্ত নেতা-কর্মীদের সেই প্রত্যাশা অধরা থেকে যাচ্ছে। একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। সভাপতি হতে যাচ্ছেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কর্মসংস্থানবিষয়ক সম্পাদক জাকারিয়া তাহের (সুমন)। তিনি কুমিল্লা-৮ (বরুড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। আর সাধারণ সম্পাদক হতে যাচ্ছেন বর্তমান সদস্যসচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ (ওয়াসিম)। তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ ছাত্র-ছাত্রী সংসদের সর্বশেষ ভিপি।
দলীয় সূত্র জানায়, আগামীকাল শনিবার কুমিল্লা টাউন হল মাঠে অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। প্রধান বক্তা হিসেবে থাকবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। সম্মেলনের উদ্বোধক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা (বুলু)। বর্ণাঢ্য আয়োজনে সম্মেলন করতে ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কয়েক দিন ধরে টাউন হল মাঠে মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরির কাজ চলছে।
সম্মেলনে পাঁচটি পদে ভোট হওয়ার কথা। কেন্দ্র থেকে পাঁচ সদস্যের একটি নির্বাচন কমিশনও গঠন করা হয়েছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একক প্রার্থী হলেও বাকি তিনটি পদে একাধিক পদপ্রত্যাশী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি পদে তিনজন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক পদে চারজন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে চারজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। গতকাল বুধবার ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। গতকাল বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ও প্রত্যাহারের শেষ দিন।
একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন বর্তমান আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের (বাঁয়ে) ও সদস্যসচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুষ্টিয়া-১ আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র কিনেছেন নুসরাত তাবাসসুম
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র কিনেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনের জন্য তিনি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
আজ শুক্রবার সকালে প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করে নুসরাত তাবাসসুম বলেন, ‘কুষ্টিয়া-১ আসনে দলীয় প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র কিনেছি। আমি একাই কিনেছি (মনোনয়নপত্র)। তাই সেখানে আমিই প্রার্থী হতে যাচ্ছি।’
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নিজের ফেসবুক পেজে মনোনয়নপত্র কেনার তিনটি ছবি পোস্ট করে নুসরাত তাবাসসুম লেখেন, ‘সকাল সকাল একটি খবর আপনাদের জানাই। আমি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে কুষ্টিয়া-১ আসনে শাপলা কলি মার্কার নমিনেশন নিয়েছি। গত সাত–আট বছর সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আমি, এর মধ্যে মাত্র এক বছর জাতীয় রাজনীতিতে।’
নুসরাত তাবাসসুম আরও লেখেন, ‘আমার অসংখ্য সীমাবদ্ধতা। তা সত্ত্বেও অনেক চিন্তাভাবনার পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি জানি আমি দেশকে, আমার জনপদকে কী দিতে পারব। শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে দোয়া আর সমর্থন চাই। আমরা যারা এখানে এসেছিলাম একটা স্বপ্ন নিয়ে, আমরা যারা দিনের পর দিন রাস্তাকে ঘরবাড়ি বানিয়ে নিয়মিত মরে মরে টিকে গেছি, আমরা যারা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে হাতে হাত, কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছি—সেই সব সহযোগী, সহমর্মী, সহযোদ্ধাদের কাছে দিকনির্দেশনা চাই। সবাই দোয়ায় রাখবেন আমার জন্য।’
কুষ্টিয়া-১ আসনে বিএনপির তিনবারের সাবেক সংসদ সদস্য রেজা আহমেদ ইতিমধ্যে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। সেখানে আপনি নবীনÑএ ব্যাপারে জানতে চাইলে মুঠোফোনে নুসরাত তাবাসসুম প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁদের প্রতি সম্মান এবং শুভকামনা রেখেই বলছি, তাঁরা বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ। এলাকার জন্য অনেক কিছু করেছেন। আমি বিশ্বাস করি, নতুন দিনের চেতনা এবং জুলাই বিপ্লবের যে চেতনায় উজ্জীবিত হয়েছি, আমি আমার জনপদকে অনেক ভালো কিছু দিতে পারব। অবশ্য ভোটের মাঠের লড়াইটা জনগণের হাতে সিদ্ধান্ত ছেড়ে দিতে চাইছি। তারা কি আমাদের বর্ষীয়ান নেতা—বহু পুরোনো চিন্তাভাবনাকে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে দেখতে চান, নাকি তরুণ মুখ খুঁজছেন—তা জনগণের হাতে ছেড়ে দিতে চাই।’