নিখোঁজের ৫ দিন পর বৈষম্যবিরোধী নেতা মামুন পূর্বাচল থেকে উদ্ধার
Published: 26th, September 2025 GMT
জুলাই আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ও তুরাগ থানা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা মামুনুর রশীদের সন্ধান পাওয়া গেছে।
নিখোঁজের ৫ দিন পর শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় পূর্বাচলের এক নম্বর সেক্টরের মসজিদ থেকে অসুস্থ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে তুরাগ থানা পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে তুরাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, খবর পেয়ে পুলিশ মামুনুর রশীদকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন। তার পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে তিনি তাবলীগ জামাতে ছিলেন।
তুরাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাদিক রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, “খবর পেয়ে পূর্বাচল জামে মসজিদ থেকে তাকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করি। এরপর চিকিৎসার জন্য তাকে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে। তারা হাসপাতালে আসছেন।”
গত বুধবার রাতে উত্তরা এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করে এনসিপির যুব সংগঠন জাতীয় যুবশক্তি মামুনের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানায়। সংগঠনটির নেতারা জানান, গত ২২ সেপ্টেম্বর সকালে পাঞ্জাবি-পায়জামা পরে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন মামুন। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ মেলেনি। এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। পাশাপাশি র্যাব, পিবিআই, কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হয়। মামুনকে উদ্ধারের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটামও দিয়েছিলেন যুবশক্তির নেতারা।
বৃহস্পতিবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে উদ্বেগ জানিয়ে লেখেন, ‘রাষ্ট্র যেখানে ন্যূনতম নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে, সেখানে ঘটনার দ্রুত ও সুষ্ঠু তদন্তে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাফিলতি স্পষ্ট। গণমাধ্যমের নীরব ভূমিকাও শঙ্কার। এতে রাজনীতিতে পুরোনো ভয়ের সংস্কৃতি ফিরে আসতে পারে।’
মামুনের সন্ধান পেতে শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে মানববন্ধন করে তার পরিবার। সেখানে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে নিরাপদে স্বামীকে ফিরে পেতে প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেন মামুনের স্ত্রী খাদিজা।
মামুনের নিখোঁজ নিয়ে অনেক রাজনৈতিক নেতাও প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দ্রুত উদ্ধার দাবি করেন। এমন পরিস্থিতিতে শুক্রবার দুপুরে তার সন্ধান পাওয়ার খবর জানায় পুলিশ।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব র উদ ধ র
এছাড়াও পড়ুন:
বন্ধুকে আসামি করে মামলা করলেন নিহতের বোন
রংপুরের কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশরাফুল হক। তিন দিন আগে বন্ধু জরেজ মিয়ার সঙ্গে ঢাকা আসেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহের সামনে দুটি নীল রঙের ড্রাম থেকে আশরাফুলের ২৬ টুকরা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত আশরাফুলের বন্ধু মো. জরেজকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা করেছে নিহতের পরিবার।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) নিহতের ছোট বোন মোছা. আনজিরা বেগম শাহবাগ থানায় বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর মামলার বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
তিনি জানান, নিহত আশরাফুলের বন্ধু জরেজকে প্রধান আসামি করে এজাহার দায়ের করেছেন আনজিরা বেগম। হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্ত চলছে এবং আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এজাহারে আনজিরা বেগম লিখেছেন, তার বড় ভাই আশরাফুল হক দিনাজপুরের হিলি বন্দর থেকে সারা দেশে পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, আলুসহ কাঁচামাল সরবরাহ করতেন।
গত মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে আসামি জরেজকে নিয়ে ঢাকায় আসেন তিনি। এরপর থেকে আশরাফুলের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। স্বজনদের সন্দেহ, আসামি জরেজ তার সহযোগী অজ্ঞাতনামা আসামিদের সহযোগিতায় গত ১১ নভেম্বর রাত থেকে ১৩ নভেম্বর রাতের মধ্যে যে কোনো সময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আশরাফুলকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। হত্যার পর মরদেহ মোট ২৬টি খণ্ডে খণ্ডিত করে গুম করার উদ্দেশ্যে দুটি নীল রঙের ড্রামের ভেতর ভরে রেখে অজ্ঞাতস্থানে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা।
নিহত জাকিরের বোনের স্বামী জাকির হোসেন বলেন, “১১ নভেম্বর রাতে একসঙ্গে রংপুর থেকে ঢাকায় আসেন আশরাফুল ও জরেজ। এরপর থেকে জরেজকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। আশরাফুল ও জরেজ বন্ধু। তারা একসঙ্গে ব্যবসা করতেন।”
জরেজের কাছে নিহত আশরাফুল টাকা পেতেন কি-না জানতে চাইলে জাকির বলেন, “টাকা-পয়সার বিষয়টি এখনো জানি না। আমরা হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।”
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে পুলিশ এসে ড্রাম দুটি খুলে অজ্ঞাতপরিচয় এক পুরুষের খণ্ডিত মরদেহ দেখতে পায়। তখন মরদেহ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। পরে দুটি নীল রঙের ড্রাম থেকে মরদেহ বের করা হয়। ড্রামের মধ্যে চাল ছিল এবং কালো পলিথিন দিয়ে মোড়ানো ছিল মরদেহের খণ্ডিত অংশগুলো।
ঢাকা/এমআর/এসবি