প্রফেসর বিমল চন্দ্র দাস বলেছেন, আজ এখানে এসে একদিকে যেমন ভালো লাগছে, অন্যদিকে খারাপও লাগছে। কারণ, আমাদের কমিউনিটিতে আপনারা অনেকেই ভালো নেই। আপনাদের মুখ দেখেই তা বুঝা যাচ্ছে।

এটা দেখে আমার খুব খারাপ লাগছে। আসলে আমরা যারা একটু ভালো অবস্থানে আছি আমাদের উচিৎ আপনাদের নিয়ে কাজ করা। কারণ, আমরা সবাই যদি ভালো না থাকি তাহলে নিজেরাও কিন্তু স্বস্তি পাবো না।

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বন্দর রেলী লেজার্স পূজা মন্ডপে অসহায় সনাতনী নারীদের মাঝে বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রশান্তি অনাথালয় ও বৃদ্ধাশ্রমের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

তিনি বলেন, আমি আয়োজকদের কাছে বলবো, আপনারা এলাকা ভিত্তিতে দশটা ঘর, বিশটা ঘর বেছে নিয়ে ওখানে তাদের নীট অনুযায়ী তাদেরকে স্বাবলম্বী করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য।

কিভাবে তারা স্বাবলম্বী হবে, এ বিষয়টা নিয়ে যদি আমরা কাজ করি তাহলে আমরা মনে হয় এ সমাজ উপকৃত হবে। আর আপনারা যদি এসব নিয়ে কাজ শুরু করেন তাহলে আমিও আপনাদের পাশে থাকবো।

তিনি আরও বলেন, রাজনীতির যে সমস্যাগুলো আছে সেগুলো থাকবেই। হয়তো সামনে আরও বাড়বে। কিন্তু এর মধ্যেদিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। শুধুমাত্র এর উপর দোস দিলে কিন্তু হবে না। আমাদের নিজেদেরও চেষ্টা করতে হবে। হয়তো অন্যেরা যে চেষ্টাটা করে আমাদের এর চাইতে বেশি চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু চেষ্টা না করলেও কিন্তু স্বাবলম্বী হওয়া যাবে না।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে প্রফেসর প্রবীর মিত্র বলেন, বাংলাদেশ এখন ক্রান্তিলগ্নে আছে। এ মহুর্তে আমরা বাংলাদেশী হিন্দুরা ভালো নেই। এখন জাতীয় পত্রিকাগুলোতে চোঁখ রাখলেই দেখা যায় মুর্তি ভাঙার খবর। এখন বাংলাদেশে পূজা আসলে আমরা টেড় পাই কি করে?

এমন প্রশ্ন আসলে অনেকেই বলে, মন্দির আর প্রতিমা ভাঙ্গার খবর আসলেই আমি বুঝি বাংলাদেশে কোন না কোন পূজা আসতে চলেছে। এদেশে আগে যারা মন্দির ভাঙ্গতো, প্রতিমা ভাঙ্গতো তাদের বলতো পাগল, আর এখন বলে বাতাসেই নাকি প্রতিমা ভেঙ্গে গেছে।

তার থেকেই বুঝা যায় সত্যিকার অর্থে আমরা কেমন আছি?  তাহলে আমাদের উপায়টা কি? উপায় হলো একটা, আমাদের সবাইকে একতাবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা যদি সবাই এক থাকি কারো সুখে, কারো দু:খে, কারো কোন সমস্যায়, আমরা সবাই যদি ছুটে ছোট বড় যে যেখানে আছি, তাহলেই আমরা এখানে টিকতে পারবো।

বক্তব্য শেষে প্রায় দুই শতাধীক সনাতনী নারীদের মাঝে বস্ত্র বিতরণ করেন অতিথিবৃন্দরা।

ইঞ্জিনিয়ার সত্য রঞ্জন রায়ের সভাপতিত্বে ও সত্যজিৎ পাল সাধুর সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, হিন্দু মহাজোটের অ্যাডভোকেট রঞ্জিত দে, যুগ্ম আহ্বায়ক নয়ন সাহা, মহানগর পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সদস্য সচিব শ্রী ঋষিকেশ মন্ডল মিঠু, হিন্দু মহাজোটের কোষাধ্যক্ষ মানিক দাস, উপদেষ্টা সজিব, স্মৃতি পাল, শেখর সাহা প্রমূখ।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে জাতি নবজন্ম লাভ করবে: প্রধান উপদেষ্টা

আগামী নির্বাচন ও গণভোটে শতভাগ সততা, নিরপেক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এবারের নির্বাচন গতানুগতিক কোনো নির্বাচন নয়; বরং এটি দেশ রক্ষার নির্বাচন।  এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে জাতি নবজন্ম লাভ করবে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সদ্য পদায়নকৃত ৫০ জেলা প্রশাসকসহ ৬৪ জেলার প্রশাসকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য প্রদান করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

আরো পড়ুন:

আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না: প্রধান ‍উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাল এবি পার্টি 

আগামী নির্বাচনকে শুধু পাঁচ বছরের সরকার গঠনের একটি নির্বাচন নয়; বরং গণভোট যুক্ত হওয়ায় এটি আরও তাৎপর্যপূর্ণ নির্বাচন হতে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এটা সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী একটি নির্বাচন। জাতি বহু প্রহসনের নির্বাচন দেখেছে, সেই স্মৃতি ছাপিয়ে যেতে আমাদের ভূমিকা রাখতে হবে।”

“এটা গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী নির্বাচন; এই নির্বাচন গণঅভ্যুত্থানকে পূর্ণতা দেওয়ার নির্বাচন। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জাতির জন্য নির্ধারিত হবে শতাব্দীর গতিপথ,” বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

এই নির্বাচনে জেলা প্রশাসকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কোনোভাবেই ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নেই। এই নির্বাচনের মাধ্যমে জাতি নবজন্ম লাভ করবে এবং জেলা প্রশাসকরা থাকবেন ধাত্রীর ভূমিকায়।”

জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আপনাদের যা যা জানা প্রয়োজন সব জেনে নেবেন। নির্বাচনকে একই সঙ্গে উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ করতে হবে।”

তিনি বলেন, “মনে রাখতে হবে বিপুল সংখ্যক তরুণ ও নারী ভোটার রয়েছেন, যারা ভোট দেওয়ার উপযুক্ত হলেও গত ১৫ বছর ধরে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি।”

তিনি আরো বলেন, “আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা এরইমধ্যে আগামী নির্বাচনের বিষয়ে গভীর উৎসাহ দেখাচ্ছেন। তাঁরা দেখতে চান কেমন নির্বাচন হচ্ছে—এটা নিয়ে তাঁদের গভীর আগ্রহ।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এই নির্বাচনকে স্বার্থক করা গণঅভ্যুত্থানের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি। এই নির্বাচন একটি বিরাট অভিযান, এ অভিযানে আমাদের জিততেই হবে।”

তিনি বলেন, “স্বাধীন জাতি হিসেবে টিকে থাকতে হলে এ লড়াইয়ে আমাদের জিততেই হবে।”

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব শেখ আব্দুর রশীদের সঞ্চালনায় বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং আইন উপদেষ্টা প্রফেসর আসিফ নজরুল।

অনুষ্ঠানে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হক এবং বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো: তৌফিকুর রহমান বক্তব্য রাখেন।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ