এশিয়া কাপে প্রথম, এর আগে পাকিস্তান-ভারত যত ফাইনাল খেলেছে
Published: 28th, September 2025 GMT
১৯৮৪ সাল থেকে এশিয়া কাপ হয়ে আসছে। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ১৭তম এশিয়া কাপ চলছে। অথচ মহাদেশীয় এই প্রতিযোগিতায় ভারত-পাকিস্তানের ফাইনাল হয়নি একবারও। ১৭তম এশিয়া কাপে এসে সেই অপেক্ষা ফুরিয়েছে। দুবাইয়ে আজ রাতেই শিরোপার লড়াইয়ে মাঠে নামবে।
দুই দল এখন পর্যন্ত ২১০ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে সব ফরম্যাটে। কিন্তু প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলা হয়েছে খুব কম। ৪০ বছরের ইতিহাসে মাত্র পাঁচবার যেকোন টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলেছে ভারত ও পাকিস্তান। সেই কারণে প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দলের ফাইনালের লড়াইটা আজ ভিন্নমাত্রা যোগ করছে। আগের পাঁচ ফাইনালের ছোট গল্পই আজ শোনানো যাক,
পঁচাশির বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মেলবোর্নের ফাইনাল মনে আছে নিশ্চয়। ৫০ হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে এক তরফা ফাইনালে ভারত পাকিস্তানকে হারিয়েছিল। ৯ উইকেটে ১৭৬ রানে গুটিয়ে যায় ইমরান খানের দল। জবাবে ক্রিস শ্রীকান্থের ৬৭ ও রবি শাস্ত্রীর ৬৩ রানে ৮ উইকেটে ম্যাচ যেতে ভারত। শাস্ত্রী জিতে নেন চ্যাম্পিয়নস অব চ্যাম্পিয়নস খেতাব। পেয়ে যান অডি গাড়ি। তেরাশির বিশ্বকাপ জেতার পরও ভারত অসাধারণ খেলতে থাকে।
ঠিক তার পরের বছরই পাকিস্তান বদলা নেয়। কিন্তু সেই বদলায় ছিল চরম নাটকীয়তা। জাবেদ মিয়াদাদের শেষ বলে ছক্কা ইতিহাসের অনন্য এক পাতায় লেখা রয়েছে। শেষ উইকেটে শেষ বলে যখন ৪ রান লাগতো পাকিস্তানের, তখন চেতন শর্মার লো ফুলটস বল মিড উইকেট দিয়ে উড়িয়ে ছক্কা হাঁকান মিয়াদাদ। এরপর তার মুষ্টিবদ্ধ হাতের শূন্য ছোড়া ঘুষি জয়ের প্রতীক হয়েছিল অনেকদিন। ১১৬ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস খেলে পাকিস্তানকে অস্ট্রাল-এশিয়া কাপ জিতিয়েছিলেন কিংবদন্তি মিয়াদাদ।
আট বছর পর আরেকটি অস্ট্রাল-এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের আরেকটি করুণ পরাজয়। তখন শারজাহ ছিল পাকিস্তানের পয়মন্ত ভেনু। যাকে তাকে বলে কয়ে হারিয়ে দিতে পারে। ভারতও তখন প্রতিপক্ষ হিসেবে দারুণ। কিন্তু শারজাহ আর পাকিস্তানের যে রসায়ন সেখানে তাদের হার মানতেই হয়। পাকিস্তান আগে ব্যাটিং করে ২৫০ রান করে। ভারত ২১১ রানে থেমে যায়। আমির সোহেল এই ম্যাচে ছিলেন পুরোপুরি লাইমলাইটে। প্রথমে ব্যাটিংয়ে ৮৭ বলে ৬৯ রান করেন, বোলিংয়ে ২২ রানে ২ উইকেট এবং ফিল্ডিংয়ে ২ ক্যাচ। যেখানে শচীন টেন্ডুলকারের দুর্দান্ত এক ক্যাচও নিয়েছিলেন। ২৭৪ রান করে হয়েছিলেন টুর্নামেন্টের সেরা ক্রিকেটার।
২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল এখনো ক্রিকেট প্রেমীদের চোখে ভেসে বেড়ায়। ভারত ও পাকিস্তানের ঐতিহাসিক ফাইনাল ম্যাচটি এতটা রোমাঞ্চ ছড়াবে কেউ ভাবতেও পারেনি। বলা হয়ে থাকে, ভারতের ওই ম্যাচে শিরোপা জয়ের মধ্যে দিয়ে ক্রিকেটের আমূল পরিবর্তন আসে।
ম্যাচ তখন পুরোপুরি পাকিস্তানের পক্ষে। শেষ ওভারে জয়ের জন্য তাদের প্রয়োজন কেবলমাত্র ১৩ রান। যোগিন্দর শর্মার প্রথম বল ওয়াইড হওয়ার পর দ্বিতীয় বলে মিসবাহ উল হক ছক্কা উড়ান। মহেন্দ্র সিং ধোনি সময় নিয়ে ফিল্ডিং সাজিয়ে ব্যাটসম্যানকে ভোড়কে দেন। পথ ভুলে মিসবাহ ফাইন লেগে ক্যাচ দেন শ্রীশান্তকে। ব্যাস, ওখানেই ভারতের শিরোপা জয়। প্রথমবারের মতো আয়োজিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জেতে ভারত। সেটাও চির প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে হারিয়ে।
আইসিসি ইভেন্টে পাকিস্তান ভারতকে হারাতে পারে না, বছরের পর বছর এই কালিমা গায়ে মাখিয়ে রেখেছিল পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা। ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেই অপবাদ থেকে মুক্তি পায় পাকিস্তান। ফখর জামানের সেঞ্চুরি ও মোহাম্মদ আমিরের বিস্ময়কর এক বোলিং স্পেলে স্রেফ নাস্তানাবুদ ভারত৷ ফাইনালের মঞ্চে ১৮০ রানের বিশাল ব্যবধানে ভারতকে হারিয়ে পাকিস্তান জেতে শিরোপা।
আজ আরেকটি ফাইনালে দাঁড়িয়ে দুই দল। এশিয়া কাপে এবার দুই দল দুইবার মুখোমুখি হয়েছিল। ভারত হেসে খেলে পাকিস্তানকে হারিয়েছিল। পাকিস্তান কি এবার বদলা নিতে পারবে, নাকি ফেভারিট হিসেবে ভারতই নেবে শিরোপা।
ঢাকা/ ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ফ ইন ল দ ই দল উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে জাতি নবজন্ম লাভ করবে: প্রধান উপদেষ্টা
আগামী নির্বাচন ও গণভোটে শতভাগ সততা, নিরপেক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এবারের নির্বাচন গতানুগতিক কোনো নির্বাচন নয়; বরং এটি দেশ রক্ষার নির্বাচন। এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে জাতি নবজন্ম লাভ করবে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সদ্য পদায়নকৃত ৫০ জেলা প্রশাসকসহ ৬৪ জেলার প্রশাসকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য প্রদান করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
আরো পড়ুন:
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না: প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাল এবি পার্টি
আগামী নির্বাচনকে শুধু পাঁচ বছরের সরকার গঠনের একটি নির্বাচন নয়; বরং গণভোট যুক্ত হওয়ায় এটি আরও তাৎপর্যপূর্ণ নির্বাচন হতে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এটা সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী একটি নির্বাচন। জাতি বহু প্রহসনের নির্বাচন দেখেছে, সেই স্মৃতি ছাপিয়ে যেতে আমাদের ভূমিকা রাখতে হবে।”
“এটা গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী নির্বাচন; এই নির্বাচন গণঅভ্যুত্থানকে পূর্ণতা দেওয়ার নির্বাচন। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জাতির জন্য নির্ধারিত হবে শতাব্দীর গতিপথ,” বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
এই নির্বাচনে জেলা প্রশাসকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কোনোভাবেই ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নেই। এই নির্বাচনের মাধ্যমে জাতি নবজন্ম লাভ করবে এবং জেলা প্রশাসকরা থাকবেন ধাত্রীর ভূমিকায়।”
জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আপনাদের যা যা জানা প্রয়োজন সব জেনে নেবেন। নির্বাচনকে একই সঙ্গে উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ করতে হবে।”
তিনি বলেন, “মনে রাখতে হবে বিপুল সংখ্যক তরুণ ও নারী ভোটার রয়েছেন, যারা ভোট দেওয়ার উপযুক্ত হলেও গত ১৫ বছর ধরে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি।”
তিনি আরো বলেন, “আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা এরইমধ্যে আগামী নির্বাচনের বিষয়ে গভীর উৎসাহ দেখাচ্ছেন। তাঁরা দেখতে চান কেমন নির্বাচন হচ্ছে—এটা নিয়ে তাঁদের গভীর আগ্রহ।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এই নির্বাচনকে স্বার্থক করা গণঅভ্যুত্থানের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি। এই নির্বাচন একটি বিরাট অভিযান, এ অভিযানে আমাদের জিততেই হবে।”
তিনি বলেন, “স্বাধীন জাতি হিসেবে টিকে থাকতে হলে এ লড়াইয়ে আমাদের জিততেই হবে।”
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব শেখ আব্দুর রশীদের সঞ্চালনায় বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং আইন উপদেষ্টা প্রফেসর আসিফ নজরুল।
অনুষ্ঠানে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হক এবং বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো: তৌফিকুর রহমান বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা/ইভা