ফরিদপুরে ওসির অপসারণে মানববন্ধনের প্রস্তুতিকালে বিএনপির চার নেতা গ্রেপ্তার
Published: 4th, October 2025 GMT
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় বিএনপির ছয় নেতার বিরুদ্ধে মামলা ও থানার ওসির অপসারণ চেয়ে মানববন্ধন আয়োজনের প্রস্তুতির সময় এজাহারভুক্ত তিন নেতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে উপজেলার কলেজ রোডের চুয়াল্লিশের মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ব্যানার পৌঁছানোর আগে পুলিশ এসে চারজনকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। অন্যান্য নেতা-কর্মী পুলিশ দেখে পালিয়ে যান।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খোশবুর রহমান ওরফে খোকন, উপজেলা যুবদলের কর্মী রমজান মোল্লা, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আরব আলী ও অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে আলফাডাঙ্গা পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম।
আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
মামলা করেছেন বোয়ালমারীর রূপপাত ইউনিয়নের সাবেক ছাত্রদল নেতা বনি আমিন। অভিযোগে বলা হয়েছে, খোশবুর রহমানের গ্রুপ তাঁকে ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য এ কে এম উজ্জ্বল হোসেনের ওপর হামলা চালিয়েছে। মামলায় ছয়জনকে এজাহারভুক্ত করা হয়েছে এবং ৩০ থেকে ৩৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
উপজেলা বিএনপি বর্তমানে দুই ভাগে বিভক্ত। এক অংশের নেতৃত্ব দেন কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম, অপর অংশের নেতৃত্ব দেন বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শামসুদ্দিন মিয়া ওরফে ঝুনু। শামসুদ্দিন মিয়ার পক্ষে আলফাডাঙ্গায় নেতৃত্ব দেন খোশবুর রহমান।
সম্প্রতি খোশবুর রহমানের বিরুদ্ধে ফেসবুকে আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে আগে তোলা বিভিন্ন ছবি দিয়ে পোস্ট করে নাসিরুলের গ্রুপের লোকজন। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে নাসিরুল গ্রুপের বোয়ালমারী উপজেলা সাবেক ছাত্রদল নেতা বনি আমিনের ওপর শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আলফাডাঙ্গা সদর বাজারে খোশবুর রহমানের গ্রুপের লোকজন হামলা চালায়। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে নাসিরুলের আরেক সমর্থক উপজেলা বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য একেএম উজ্জ্বলের ওপর হামলা চালায়। এতে তারা আহত হন। এ ঘটনায় করা অভিযোগটি শুক্রবার রাতেই থানায় মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র স ব ক আলফ ড ঙ গ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
নওগাঁ-২ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী পুনর্বিবেচনার দাবিতে মানববন্ধন
নওগাঁ-২ (পত্নীতলা-ধামইরহাট) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী পুনর্বিবেচনার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পৌরসভার জিরো পয়েন্ট এলাকায় এ কর্মসূচির আয়োজন করেন মনোনয়নবঞ্চিত এক প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকেরা।
নওগাঁ-২ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষিবিষয়ক সম্পাদক সামসুজ্জোহা খানের নাম ঘোষণা করেছে দলটি। এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন পত্নীতলা উপজেলা বিএনপির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি খাজা নাজিবুল্লাহ চৌধুরী।
খাজা নাজিবুল্লাহর সমর্থকেরা বেলা ১১টার দিকে নজিপুর জিরো পয়েন্ট এলাকায় নওগাঁ-নজিপুর সড়কের একপাশে দাঁড়িয়ে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে মানববন্ধন করেন। এ কর্মসূচিতে পত্নীতলা ও ধামইরহাট উপজেলার ১৯টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা থেকে আসা নেতা–কর্মীরা অংশ নেন। তাঁদের পাশাপাশি সাধারণ জনগণও এতে অংশ নেন। মানববন্ধনের আগে জিরো পয়েন্ট এলাকায় কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে নওগাঁ-২ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিতর্কিত ব্যক্তি সামসুজ্জোহা খানের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। কোনো আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি মাঠে ছিলেন না। আওয়ামী লীগের সময়ে হরতালসহ বিভিন্ন আন্দোলনে খাজা নাজিবুল্লাহর নেতৃত্বে তৃণমূলের নেতা–কর্মীরা মাঠে ছিলেন। তাঁরা নওগাঁ-২ আসনে মনোনয়নের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে খাজা নাজিবুল্লাহকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার অনুরোধ জানান।
নজিপুরের সাবেক পৌর মেয়র আনোয়ার হোসেন বলেন, নাজিবুল্লাহ ত্যাগী, পরীক্ষিত ও বারবার কারা নির্যাতিত নেতা। তাঁর নেতৃত্বেই পত্নীতলা ও ধামইরহাট বিএনপি ঐক্যবদ্ধ। অথচ তৃণমূলের মতামত অগ্রাহ্য করে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে। খাজা নাজিবুল্লাহকে প্রার্থী ঘোষণা না করা হলে তৃণমূল বিএনপি বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবে।
ধামইরহাট উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক রুহুল আমিন বলেন, ২০১৪ সাল থেকে আওয়ামী লীগবিরোধী সব আন্দোলনে যাঁরা মাঠে সক্রিয় ছিলেন, তাঁরা সবাই খাজা নাজিবুল্লাহর পক্ষে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন। তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হোক—এটি শুধু বিএনপির নেতা–কর্মীদের চাওয়া নয়, দুই উপজেলার সব মানুষের চাওয়া। তাই এখানে মনোনয়নের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার জন্য দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে আহ্বান জানাতে এই কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া সামসুজ্জোহা খান বলেন, ‘দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। যাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করা হবে।’
মনোনয়নবঞ্চিত খাজা নাজিবুল্লাহ বলেন, ‘সব আন্দোলন–সংগ্রামে মাঠে সক্রিয় ছিলাম। দুর্দিনে তৃণমূল নেতাদের পাশে ছিলাম, আছি ও থাকব। আমরা কেউ দলের ঊর্ধ্বে নই। দলের জন্য কাজ করছি। পুনর্বিবেচনা হলে মনোনয়ন পেতে পারি। দলই সবার আগে।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নজিপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পত্নীতলা উপজেলা বিএনপির সদস্য আনোয়ার হোসেন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পত্নীতলা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য মিজানুর রহমান, ধামইরহাট উপজেলা বিএনপির সদস্য রেজাউল ইসলাম, ধামইরহাট মহিলা দলের সহসভাপতি নাহিদা সুলতানা, জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দল ধামইরহাট শাখার আহ্বায়ক রকিবুল হাসান, পত্নীতলা উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য আবু তাহের প্রমুখ।