সম্পর্ক জোরদারে তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ৬ দিনের ভারত সফর
Published: 10th, October 2025 GMT
আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে ছয় দিনের সফরে আজ বৃহস্পতিবার ভারতে পৌঁছেছেন। ২০২১ সালে তালেবানের দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পর গোষ্ঠীটির কোনো শীর্ষ নেতার এটাই প্রথম ভারত সফর।
আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক বাড়িয়ে কূটনৈতিক স্বীকৃতি অর্জনের জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে আফগানিস্তান। আমির খান মুত্তাকি ভারত সফরে এই প্রচেষ্টায় জোর দিচ্ছেন। তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করসহ দেশটির অন্যান্য কর্মকর্তার সঙ্গে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিষয় নিয়ে বৈঠক করবেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘আমরা তাঁর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও আঞ্চলিক বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনা করতে আগ্রহী।’
মুত্তাকি ভারতীয় ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গেও দেখা করবেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া তাঁর তাজমহল এবং একটি ঐতিহাসিক মাদ্রাসা পরিদর্শনের কথা রয়েছে।
ভারত সফরের আগে মুত্তাকি রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশগুলোর কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে অংশগ্রহণকারী কূটনীতিকেরা কাবুলের অদূরে অবস্থিত বাগরাম ঘাঁটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার অভিপ্রায়ের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থানের কথা জানিয়েছেন।
তালেবান প্রশাসনকে এখন পর্যন্ত রাশিয়া ছাড়া আর কোনো দেশ স্বীকৃতি দেয়নি। আফগানিস্তানের বর্তমান প্রশাসনের সদস্যদের ওপর জাতিসংঘের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, সম্পদ জব্দসহ নানা নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মুত্তাকির বিরুদ্ধেও এই নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু বিশেষ বিবেচনায় তাঁকে ভারত সফরের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে। কিন্তু তালেবান ক্ষমতায় আসার পর ভারত সরকার তাদের স্বীকৃতি দেয়নি। তা ছাড়া ২০২১ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর কাবুলে নিজেদের দূতাবাস বন্ধ করে দেয় নয়াদিল্লি।
এক বছর পর ভারত সীমিত পরিসরে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আফগানিস্তানে একটি মিশন খোলে। এর মাধ্যমে প্রধান বাণিজ্য, চিকিৎসা ও মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এর পর থেকে ভারতীয় কর্মকর্তারা তালেবান নেতাদের সঙ্গে কয়েক দফা দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করেছেন।
আরও পড়ুনস্বীকৃতি দেওয়ার তালেবানের সঙ্গে প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক করল রাশিয়া০৮ অক্টোবর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আফগ ন স ত ন র পরর ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের বেতন, পেনশনসহ অন্য প্রাপ্যতা রিভিজিট করতে কেন নির্দেশ নয়: হাইকোর্ট
সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের পারিতোষিক, পেনশন ও বিশেষাধিকারসংক্রান্ত আইন প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। আইন দুটি কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের বেতন, পেনশনসহ অন্যান্য প্রাপ্যতা রিভিজিট (পুনরায় দেখা) করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।
একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজী ও বিচারপতি রাজিউদ্দিন আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার রুলসহ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের জন্য বিদ্যমান গবেষণা সুবিধা এবং প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা বিষয়ে ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আইনসচিব এবং সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০২১ সালের বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) আইন এবং ২০২৩ সালের সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) আইনের সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেনসহ ১৩ আইনজীবী ও আইন শিক্ষার্থী চলতি মাসে রিটটি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাসান।
আদালতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শিশির মনির বলেন, বাংলাদশের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের আর্থিক অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় সর্বনিম্ন ধাপে রয়েছে। যেখানে ভারতের প্রধান বিচারপতির বেতন প্রায় ৩ লাখ ৮৯ হাজার টাকা, পাকিস্তানে ৫ লাখ ১৭ হাজার টাকা, ভুটানে ১ লাখ ৯১ হাজার থেকে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা, মালদ্বীপে প্রায় ৭ লাখ টাকা, সেখানে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি মাত্র ১ লাখ ১০ হাজার টাকা পান। এই অসামঞ্জস্য শুধু আর্থিক নয়, বরং বিচার বিভাগের মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের মানের প্রতিও সাংঘর্ষিক।
রিট আবেদনকারীপক্ষের ভাষ্য, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংবিধানের মৌলিক কাঠামো। সংবিধানের ৯৪(৪) ও ১৪৭(২এ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের আর্থিক স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা সংবিধান প্রদত্ত সুরক্ষিত একটি অধিকার। তবে ২০২১ ও ২০২৩ সালের উল্লিখিত আইন দুটি বিচারকদের বেতন, পেনশন ও বিশেষাধিকার—এমনভাবে নির্ধারণ করেছে, যা বাস্তবে তাঁদের আর্থিক স্বাধীনতা ও প্রাতিষ্ঠানিক মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন রছে। ফলে আইন দুটি সংবিধানের পরিপন্থী।