অন্তর্বর্তী সরকার মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। 

উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেছেন, ‘‘জুলাই অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে কাজ করছে। বিগত সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত তিন সাধারণ নির্বাচনে মানুষ ভোটাধিকার হারিয়েছিল। আমাদের সরকার শতভাগ জবাবদিহিতার মাধ্যমে কাজ করার চেষ্টা করছে। সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চায়। আমরা চেষ্টা করছি, সব ধরনের বৈষম্য দূর করার জন্য। একটি বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে চেষ্টা করছে সরকার।’’

আজ শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় চিটাগং বোট ক্লাবে চট্টগ্রামের বেসরকারি চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির (সিআইইউ) সমাবর্তন-২০২৫ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি তিনি এ সব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

এক প্রার্থী একাধিক আসনে নয়, দ্বিকক্ষের সংসদ; নির্বাচনে যত সুপারিশ

ভোটার তালিকা হালনাগাদে সহায়তা করবে ইউএনডিপি 

সমাবর্তনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ করে ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘‘আপনারা গ্রাজুয়েশন শেষ করেছেন। মনে রাখতে হবে, সব শিক্ষা ক্লাস রুমের ভিতর থেকে পাওয়া যায় না। কিছু শিক্ষা পরিবেশ প্রকৃতি থেকে অর্জন করতে হয়৷ আমি মনে করি, আপনাদের প্রতিষ্ঠান পড়ালেখার পাশাপাশি সততা ও মূল্যবোধের শিক্ষা দিয়েছে। যা আপনারা আপনাদের কর্মজীবনে কাজে লাগাবেন। কর্মজীবনে আপনাদের নিজেদের প্রমাণ করতে হবে। অন্যের জন্য কাজ করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে।’’

সমাবর্তন বক্তা ছিলেন শিল্পগ্রুপ ইয়ংওয়ান করপোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী (সিইও) কিহাক সুং। তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ এবং কোরিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আপনাদের রয়েছে সুন্দর ভবিষ্যৎ। কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে আপনারা নিজেদের যোগ্য লিডার হিসেবে গড়ে তুলবেন। এটা আপনাদের বিশ্ব। আপনাদের এ বিশ্বকে শাসন করার যে সুযোগ রয়েছে, তা কাজে লাগাবেন।’’

তিনি বলেন, ‘‘কোরিয়ায় আমি বাংলাদেশি হিসেবে পরিচিত। আর চট্টগ্রামে চিটাগনিয়ান হিসেবে। চট্টগ্রামবাসীর কারণেই আমাদের সক্ষমতা হয়েছে। আমি নিজেকে চট্টগ্রামের মানুষ ভেবে গর্ববোধ করি। কোরিয়া-বাংলাদেশের মধ্যে সেতু হিসেবে কাজ করছে এ অ্যাপারেলস সেক্টর।’’ 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড.

মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে কর্মক্ষেত্রে তোমরা আলো ছড়াবে। দক্ষ লিডারশিপের মাধ্যমে দেশকে নেতৃত্ব দেবে। পুরো বিশ্ব তোমাদের সামনে। নেতৃত্ব দিতে হবে তোমাদের।’’ 

সিআইইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীর মোহাম্মদ নুরুল আবসারের সভাপতিত্বে সমাবর্তনে বক্তব্য দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নুরুন আখতার, সিআইইউর প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্ট অ্যাডুকেশন, সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড কালচারাল ডেভেলপম্যান্ট ট্রাস্ট (ইসটিসিডিটি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাকারিয়া খান, সিআইইউ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান লুৎফে এম আইয়ুব প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা গ্রাজুয়েটদের জন্য শুভ কামনা জানান এবং কর্মজীবনে নিজেদের প্রজ্ঞা, মেধা দিয়ে সফলতা কামনা করেন।

সিআইইউ’র এবারের সমাবর্তনে বিভিন্ন অনুষদের মোট ২ হাজার ১৮৯ জন শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি দেওয়া হয়। এর মধ্যে ১ হাজার ৪৫২ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রকৌশল, আইন এবং লিবারেল আর্টস অনুষদ থেকে পাস করা স্নাতক এবং ৭৩৭ জন স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থী। অনুষ্ঠানে ১৪ জন শিক্ষার্থীকে তাদের স্ব স্ব প্রোগ্রামে অসামান্য কৃতিত্বের ফলস্বরূপ ‘টপ অ্যাচিভার্স’ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। 
 

ঢাকা/রেজাউল/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আপন দ র ক জ করছ ক জ কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ