সরকার ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে কাজ করছে: ফাওজুল কবির
Published: 18th, January 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকার মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেছেন, ‘‘জুলাই অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে কাজ করছে। বিগত সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত তিন সাধারণ নির্বাচনে মানুষ ভোটাধিকার হারিয়েছিল। আমাদের সরকার শতভাগ জবাবদিহিতার মাধ্যমে কাজ করার চেষ্টা করছে। সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চায়। আমরা চেষ্টা করছি, সব ধরনের বৈষম্য দূর করার জন্য। একটি বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে চেষ্টা করছে সরকার।’’
আজ শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় চিটাগং বোট ক্লাবে চট্টগ্রামের বেসরকারি চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির (সিআইইউ) সমাবর্তন-২০২৫ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি তিনি এ সব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
এক প্রার্থী একাধিক আসনে নয়, দ্বিকক্ষের সংসদ; নির্বাচনে যত সুপারিশ
ভোটার তালিকা হালনাগাদে সহায়তা করবে ইউএনডিপি
সমাবর্তনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ করে ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘‘আপনারা গ্রাজুয়েশন শেষ করেছেন। মনে রাখতে হবে, সব শিক্ষা ক্লাস রুমের ভিতর থেকে পাওয়া যায় না। কিছু শিক্ষা পরিবেশ প্রকৃতি থেকে অর্জন করতে হয়৷ আমি মনে করি, আপনাদের প্রতিষ্ঠান পড়ালেখার পাশাপাশি সততা ও মূল্যবোধের শিক্ষা দিয়েছে। যা আপনারা আপনাদের কর্মজীবনে কাজে লাগাবেন। কর্মজীবনে আপনাদের নিজেদের প্রমাণ করতে হবে। অন্যের জন্য কাজ করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে।’’
সমাবর্তন বক্তা ছিলেন শিল্পগ্রুপ ইয়ংওয়ান করপোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী (সিইও) কিহাক সুং। তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ এবং কোরিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আপনাদের রয়েছে সুন্দর ভবিষ্যৎ। কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে আপনারা নিজেদের যোগ্য লিডার হিসেবে গড়ে তুলবেন। এটা আপনাদের বিশ্ব। আপনাদের এ বিশ্বকে শাসন করার যে সুযোগ রয়েছে, তা কাজে লাগাবেন।’’
তিনি বলেন, ‘‘কোরিয়ায় আমি বাংলাদেশি হিসেবে পরিচিত। আর চট্টগ্রামে চিটাগনিয়ান হিসেবে। চট্টগ্রামবাসীর কারণেই আমাদের সক্ষমতা হয়েছে। আমি নিজেকে চট্টগ্রামের মানুষ ভেবে গর্ববোধ করি। কোরিয়া-বাংলাদেশের মধ্যে সেতু হিসেবে কাজ করছে এ অ্যাপারেলস সেক্টর।’’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড.
সিআইইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীর মোহাম্মদ নুরুল আবসারের সভাপতিত্বে সমাবর্তনে বক্তব্য দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নুরুন আখতার, সিআইইউর প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্ট অ্যাডুকেশন, সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড কালচারাল ডেভেলপম্যান্ট ট্রাস্ট (ইসটিসিডিটি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাকারিয়া খান, সিআইইউ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান লুৎফে এম আইয়ুব প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা গ্রাজুয়েটদের জন্য শুভ কামনা জানান এবং কর্মজীবনে নিজেদের প্রজ্ঞা, মেধা দিয়ে সফলতা কামনা করেন।
সিআইইউ’র এবারের সমাবর্তনে বিভিন্ন অনুষদের মোট ২ হাজার ১৮৯ জন শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি দেওয়া হয়। এর মধ্যে ১ হাজার ৪৫২ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রকৌশল, আইন এবং লিবারেল আর্টস অনুষদ থেকে পাস করা স্নাতক এবং ৭৩৭ জন স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থী। অনুষ্ঠানে ১৪ জন শিক্ষার্থীকে তাদের স্ব স্ব প্রোগ্রামে অসামান্য কৃতিত্বের ফলস্বরূপ ‘টপ অ্যাচিভার্স’ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।
ঢাকা/রেজাউল/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আপন দ র ক জ করছ ক জ কর সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
যখন টাকা খাওয়া যাবে, তখন শিক্ষক নিয়োগ দেবেন?: ইবি শিবির সভাপতি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেছেন, “ইবিতে উপাচার্য নিয়োগ হওয়ার পরে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়েও উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে। তাদের সার্কুলারে যারা প্রভাষক হয়েছিলেন, তারা এখন অধ্যাপক হচ্ছেন। কিন্তু ইবি প্রশাসন শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে শুধু বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ছাড়া কোনো পদক্ষেপ গ্রহণনি।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন বিভাগও আছে, যেখানে শিক্ষক মাত্র দুইজন। শিক্ষক নিয়োগে কেনো এত দেরি হচ্ছে আপনাদের? সুবিধাজনক সময়ে যখন টাকা খাওয়া যাবে, তখন শিক্ষক নিয়োগ দেবেন? এই সমস্ত তালবাহানা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলবে না।”
রবিবার (২ আগস্ট) বিকেল ৩টায় নিরাপদ ক্যাম্পাস, সাজিদ আব্দুল্লাহর মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষার আলোকে ক্যাম্পাস সংস্কারের দাবিতে শাখা ছাত্রশিবির আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহমুদুল হাসান বলেন, “ছাত্র সংসদ গঠনে শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন বলার পরেও আইনের দোহাই দিয়ে প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। কিন্তু ইবির পরে প্রতিষ্ঠিত অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ গঠনের পদক্ষেপ নিয়েছে। আপনারা কেনো পারছেন না? এই ভয়ে যে, চেয়ার চলে যাবে? শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করলে তারাই আপনাদের চেয়ারে রাখবে। আর না হয় হাসিনাকে যেভাবে সরিয়েছে, আপনাদেরও সেভাবে সরাবে।”
তিনি বলেন, “জুলাই বিপ্লবের ১ বছরে পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে উল্লেখযোগ্য সংস্কার চেখে পড়েনি। আমরা ভেবেছিলাম জুলাইয়ের পরে আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবতে হবে না, আমরা কথা বলার অধিকার পাব, সনদপত্র তুলতে ভোগান্তি হবে না, চিকিৎসা কেন্দ্র সংস্কার হবে, ক্যাম্পাস ফ্যাসিবাদের কবল থেকে মুক্ত হবে, গুম হওয়া ওয়ালীউল্লাহ-মুকাদ্দাস ভাইকে ফেরত পাব। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রশাসন কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে পারেনি।”
তিনি আরো বলেন, “এর মধ্য দিয়ে প্রশাসন জুলাই বিপ্লবকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। ক্যাম্পাস কতটা অনিরাপদ হলে আমাদের ভাইয়ের লাশ পুকুরে পাওয়া যায়। কিন্তু এর নির্ভরযোগ্য কোনো ফুটেজ বা তথ্য প্রশাসন দিতে পারেনি।”
নিরাপদ ক্যাম্পাস, সাজিদ আব্দুল্লাহর মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষার আলোকে ক্যাম্পাস সংস্কারে মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। অন্যথায় তারা প্রশাসনকে আসসালামু আলাইকুম বলতে বাধ্য হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে সংগঠনটি। পরে মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রধান ফটকে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
এ সময় তারা ‘যদি না হয় সংস্কার, এই প্রশাসন কি দরকার’, ‘পুকুরে লাশ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘সাজিদ হত্যার তদন্ত, করতে হবে করতে হবে’, ‘অনলাইন পেমেন্ট চালু কর, ভোগান্তি দূর কর’, ‘কর্মকর্তা জমিদার, লাঞ্চ করতে দিন পার’, ‘ইবিতে ছাত্র সংসদ, চালু কর করতে হবে’, ‘ইকসু নিয়ে টালবাহানা, আর না আর না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
এছাড়া শিক্ষার্থীদের হাতে হল ডাইনিং ও ক্যাফেটেরিয়ার পানি ও খাবারের মান নিশ্চিত করতে হবে, স্বৈরশাসনের সময় বর্ধিত ও অযৌক্তিক ফি কমাতে হবে, গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে, নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে হবে, ওয়ালিউল্লাহ ও আল মুকাদ্দাস ভাইয়ের সন্ধান চাই ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী