ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) শাখা ছাত্রদলের খসড়া কমিটিতে নাম থাকায় ৯ শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গতকাল শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মাহবুবুল আলম স্বাক্ষরিত পৃথক ৯টি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি ও শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকায় এসব শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে নোটিশে। ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরে সশরীর উপস্থিত হয়ে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত চুয়েট ছাত্রদলের ৯ সদস্যের একটি কমিটির তালিকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ওই কমিটি গঠনের প্রতিবাদে ও কমিটিতে থাকা নেতাদের শাস্তির দাবিতে রাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া তালিকা অনুযায়ী, ছাত্রদলের ঘোষিত কমিটির সভাপতি তড়িৎকৌশল বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ওয়াসিফ রাশেদ এবং সাধারণ সম্পাদক জৈব চিকিৎসা প্রকৌশল বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ তৌফিক হাসান চৌধুরী। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন, সহসভাপতি চন্দন কুমার দাশ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তৌসিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান আল সাবিত ও সাখাওয়াত হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক বিপ্লব হোসাইন এবং প্রচার সম্পাদক আহমেদ ইনতিসার।

তবে প্রকাশিত এ কমিটি স্থগিত করা হয়েছে বলে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। শুক্রবার পুনরায় কমিটি ঘোষণার কথা থাকলেও তা এখনো প্রকাশ করা হয়নি। ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, এটি একটি খসড়া কমিটি ছিল। আপাতত সেটি স্থগিত করা হয়েছে। রাজনীতি-নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে কমিটি দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের রাজনীতি করার অধিকার রয়েছে। সে জায়গা থেকে আমরা মনে করি যে কেউ যেকোনো সংগঠনের রাজনীতি করতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলেই এভাবে রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে পারে না।’

গত বছরের ৭ আগস্ট চুয়েটের সব শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা নিষিদ্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র প রক শ র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে আবার ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা যাতে তৈরি না হয়, সে বিষয়ে সবাই একমত: আলী রীয়াজ

দেশে আবার কোনোভাবে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা যাতে তৈরি হতে না পারে, সে ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলো ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশন একমত। এ কথা বলেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ১১তম দিনের আলোচনার শুরুতে আলী রীয়াজ এ কথা বলেন।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, ‘আমাদের সবার লক্ষ্য এক। আমরা একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রের কথা বলছি, যাতে করে ক্ষমতা কেন্দ্রীকরণ করা না হয়, সেটার কথা বলছি। নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষার কথা বলছি। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা বলছি। এবং প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যেন এমন ব্যবস্থা তৈরি করা যায়, যাতে এ দেশে আবার কোনোভাবে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা তৈরি না হয়, সেটি নিশ্চিত করা—এই লক্ষ্যগুলোর ব্যাপারে, উদ্দেশ্যগুলোর ব্যাপারে আমরা সবাই একমত।’

আজকের আলোচনায় প্রধান বিচারপতি নিয়োগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা, জরুরি অবস্থা ঘোষণা বিষয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। এ বিষয়গুলো নিয়ে আগেও আলোচনা হয়েছিল, তবে ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি।

আজকের আলোচনায় অংশ নিয়েছে বিএনপি, এনসিপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল।

আলী রীয়াজ বলেন, এই আলোচনা তাঁদের জাতীয় সনদ তৈরির ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছে। অনেকগুলো বিষয়ে একমত হওয়া গেছে। পাশাপাশি দরকার হলো, রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য মৌলিক বিষয়গুলোতে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা। কারণ, এখানে যাঁরা আছেন, তাঁদের সবারই লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এক। সেগুলো বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে তাঁদের সবার আন্তরিক প্রচেষ্টা।

দ্রুততম সময়ের মধ্যে যতটুকু সম্ভব, ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে সবাইকে নিয়ে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা প্রধান লক্ষ্য বলে জানান জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি। তিনি বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে জুলাই মাসের মধ্যেই যেন আমরা এ কাজ সম্পন্ন করতে পারি।’

যে বিষয়গুলোতে ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি, সেগুলো নিয়ে আবার আলোচনার মাধ্যমে একটা মীমাংসার জায়গায় যাওয়ার ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেন আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘এটাই আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। এর বাইরে আমাদের কারও কোনো উদ্দেশ্য নেই।’

যে বিষয়গুলোতে আগে আলোচনায় অনেক দূর পর্যন্ত অগ্রসর হওয়া গেছে, সেগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করতে চান বলে জানান জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিলেট বিভাগের ১৯ আসনে খেলাফত মজলিসের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা, ৫ জন প্রবাসী
  • সিলেট বিভাগের ১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা খেলাফত মজলিসের
  • বগুড়া মিডিয়া অ্যান্ড কালচারাল সোসাইটির সভাপতি মারুফা, সম্পাদক সুজন
  • বিসিএমএর নতুন সভাপতি প্রিমিয়ার সিমেন্টের এমডি আমিরুল হক
  • তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে নতুন প্রস্তাব
  • চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার পর শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
  • দেশে আবার ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা যাতে তৈরি না হয়, সে বিষয়ে সবাই একমত: আলী রীয়াজ